ম্লানই হয়। অশ্বারোহী ছবিটির মধ্যে মানুষের পৌরুষ ও তেজ যত প্রকাশিত, তা তার কম মূর্তিতেই দেখা যায়।
বাঁক ফিরতেই বাঁ পাশে পোস্টঅফিস দেখা গেল। সামনে একটা শুকনো ঝরণার পাথর-নুড়ি বিছানো পথ, তার উপর একটা পুল। পুলের ডাহিনে পাহাড়টার উপরই ফোর্ট, তার পশ্চিম দিকটা গাছপালার ফাঁকে এখান হইতে বেশ দেখা যাইতেছে।
ঐ বক্সা দুর্গ। শেষটা তবে আসাই গেল।
কোমরের র্যাপারটা খুলিয়া লইলাম, মল্ল-কচ্ছ মুক্ত করিয়া দোদুল্যমান কোঁঁচাতে পরিবর্তন করিলাম এবং পাঞ্জাবীর গুটানো আস্তিনকে ঢিলা করিয়া দিলাম।
শরৎবাবুকে কহিলাম,—“নিন, কাপড়-জামা ঠিক করে ভদ্রলোক সেজে নিন।”
—“আপনি নিন। ভদ্রলোক আবার সেজে ভদ্রলোক হয় কেমনে? আমি ঠিক আছি।”
না, শরৎবাবুকে যত সরল মনে করিয়াছিলাম, তা নয়। ভিতরে প্যাচ যথেষ্টই আছে। যাক, একজন কাপড়-জামা ঠিক করিয়া ভদ্রলোক সাজিলাম এবং আর একজন কাপড়-জামা ঠিক না করিয়াই ভদ্রলোক রহিয়া গেলেন। তারপর আমরা এই দুই মতি অপরাহ্ণের শেষের দিকে দুর্গের তোরণদ্বারে আসিয়া থামিলাম।
ঢুকিবার মুখে একবার শুধু ভাবিলাম যে, এ যদি অভিমন্যুর চক্রব্যূহ না হয়, তবে বাঁচিয়া থাকিলে নির্গমন পথে বাহির হইতে একদিন পারিবই।
মনের কানে কানে মন্ত্র শুনাইলাম,—মাভৈ, ভয় নাই।
৬০