পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বলিয়াই প্রথমটা মনে মনে ঠিক করিয়া রাখিয়াছিলেন, তাই আমাদের প্রথম অনুরোধের উত্তরে তিনি সাফ জবাব দিয়া বসিলেন,—“নো, তা হইবে না।”

 এই নো-কে ইয়েস করিতে আমাদেরও কিছু তেলনুন খরচ করিতে হইয়াছিল। অর্থাৎ, ফিনী সাহেবকেও ঠেকিয়া শিখিতে হইয়াছিল এবং তাঁকে আমরা ঠিক করিয়াই আনিয়াছিলাম।

 ফিনী সাহেবের ঠেকিয়া শিক্ষার অভিজ্ঞতা বলিতে গেলে প্রায় ক্যাম্প খোলার সঙ্গে সঙ্গেই আরম্ভ হয়। আরম্ভটা এইরূপ—

 দিন পনর আগে বন্দীদের প্রথম দল প্রেসিডেন্সী জেল হইতে এখানে চালান হইয়া আসেন। শ্রান্ত দেহে ঘর্মাক্ত কলেবরে এই দল ফোর্টে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। দুপুরের রৌদ্র হইতে আত্মরক্ষার জন্য তাঁহারা বারান্দায় উঠিয়া দাঁড়াইলেন। ‘আসুন’ বলিয়া অভ্যর্থনার কথা থাক, কিন্তু কি করিতে হইবে, কোথায় যাইতে হইবে ইত্যাদি সমস্যা হইতে মুক্ত করিবার জন্যও কেহ আগাইয়া আসিল না। পাহাড় ভাঙ্গিয়া সাত মাইল পথ আসিতে সকলেরই অবস্থা প্রায় হইয়া আসিয়াছে। বাবুরা অস্থির হইয়া উঠিলেন।

 কেরানী গোছের এক ভদ্রলোক বাহির হইতে আসিয়া বারান্দায় উঠিলেন এবং ভিতরের একটা ঘরে ঢুকিয়া পড়িতেছিলেন। একজন তাঁকে ডাকিয়া থামাইলেন—“শুনুন তো।”

 ভদ্রলোক ফিরিয়া তাকাইলেন, বলিলেন—“বলুন।”

 —“আপনি অফিসের লোক?”

 ভদ্রলোক মাথা নাড়িয়া সায় দিলেন। বক্তা পুনরায় বলিলেন, “আমাদের কি করবেন, সত্বর করে ফেলতে বলুন। আমরা আর দাঁড়াতে পারছিনে।”

 ভদ্রলোক উত্তর দিলেন—“আপনারা সাহেবের কাছে যান।”

 —“কোন্ সাহেব?”

৭১