দিয়াছিলেন যে, হট্টগোল বাদ দিয়া হট্টগোলের সব ফলটুকুই পাওয়া গেল। এক ভদ্রলোক তো চটিয়া গিয়াই বলিলেন—“ওরকম ভাবে আপনি চোক পাকাবেন না।” সভাপতি উত্তর দিলেন—“Sit down। বসে পড়ুন, আমার চোখের দৃষ্টিই ওরকম।” আর এক ব্যক্তি হুঙ্কার দিলেন—“সভাপতির বিরুদ্ধে সেন্সর মোশন আনতে চাই।” সভাপতি উত্তর দিলেন— “আপনাকে সে সুযোগ দেওয়া হবে, এখন বসে পড়ুন।” এই সময়ে অনুশীলন পার্টির অন্যতম নেতা রবিবাবু উঠিয়া দাঁড়াইলেন, বলিলেন, “আমি বলি কি—” তিনি শেষ করিবার সুযোগ পাইলেন না, সভাপতি বলিলেন—“Please sit down. আপনি কি বলেন পরে শোনা যাইবে।” রবিবাবুকে বসিতে বলিবার কারণ এই যে, তাঁর পূর্বে কালী সেন ও আব্দুর রেজাক খান বহুক্ষণ যাবত দণ্ডায়মান ছিলেন কিছু বলিবার জন্য। রবিবাবুকে বসাইয়া দিতেই এক কোণা হইতে মন্তব্য আসিল—“ব্যাটা মুসলিনী।” শুনিয়া উত্তম পুরুষটি বড়ই পরিতৃপ্তি প্রাপ্ত হইল, কারণ তুলনাটার মধ্যে সভাপতি আত্মমর্যাদায় যেন আরামের সুড়সুড়িই বোধ করিলেন। আধ ঘণ্টা এইভাবে দক্ষযজ্ঞ চলিল— একদিকে সভাপতি, অন্যদিকে সভা মানে সদস্যগণ।
সভায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া অতঃপর সভাপতি যাহা বলিলেন, তার সার মর্ম এই: নিরর্থক আলোচনার প্রয়োজন নাই। নেতৃবর্গ যদি নিজেদের মধ্যে আপোষ করিয়া মীমাংসায় উপনীত হন, তবে ভালো। কিন্তু, তাহার কোন লক্ষণ দেখা যায় না। এই সভা ডাকার প্রয়োজন হইয়াছে, ইহাতেই তাহা প্রমাণিত হয়। অতএব, নেতৃবর্গের নিকট হইতে এই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য শোনা যাইতে পারে, অবশ্য বক্তব্য যদি থাকে।
নেতৃবর্গ তুষ্ণীম্ভাব অবলম্বন করিয়া রহিলেন। সুরেনবাবু, প্রতুলবাবু, পঞ্চাননবাবু প্রভৃতিকে একে একে জিজ্ঞাসা করা হইল, তাঁহারা বুদ্ধিমান, তাই নীরবেই রহিয়া গেলেন। সভা শান্ত, অর্থাৎ দম বন্ধ করিয়া সদস্যগণ
৮০