পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (প্রথম ভাগ).djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वेिबडूच * এক দিন নদীকূলে স্বৰ্য্যমুখী বৃক্ষমূলে শয়ন করিয়া ছিলেন, ব্রাহ্মণেরা সেইখানে পাক করিতে উঠিয়াছিলেন। গৃহিণীর সহিত স্বৰ্য্যমুখীর আলাপ হয় । স্বৰ্য্যমুখীর অবস্থা দেখিয়া এবং চরিত্রে প্রীত হইয়া ব্রাহ্মণগৃহিণী তাহাকে নৌকায় তুলিয়া লইলেন। স্বৰ্য্যমুখী তাহার সাক্ষাতে বলিয়াছিলেন যে, তিনিও কাশী যাইবেন । নগেন্দ্র । সে ব্রাহ্মণের নাম কি ? বাটী কোথায় ? নগেন্দ্র মনে মনে কি প্রতিজ্ঞা করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তাহার পর ?” ঐশ। ব্রাহ্মণের সঙ্গে তাহার পরিবারস্থার ন্যায় স্বৰ্য্যমুখী বৰ্হি পর্যন্ত গিয়াছিলেন। কলকাতা পৰ্য্যস্ত নৌকায়, কলিকাতা হইতে রাণীগঞ্জ পর্য্যস্ত রেলে, রাণীগঞ্জ হইতে বুলক্ ট্রেণে গিয়াছিলেন ; এ পৰ্য্যস্ত হাটিয়া ক্লেশ পান নাই । নগেন্দ্র । তারপর কি ব্রাহ্মণ র্তীহাকে বিদায় দিল ? শ্ৰীশ । না ; স্বৰ্য্যমুখী আপনি বিদায় লইলেন । তিনি আর কাশী গেলেন না। কত দিন তোমাকে না দেখিয়া থাকিবেন ? তোমাকে দেখিবার মানসে বহি হইতে পদব্রজে ফিরিলেন । কথা বলিতে শ্ৰীশচন্দ্রের চক্ষে জল আসিল । তিনি নগেন্দ্রের মুখপানে চাহিয়া দেখিলেন । শ্ৰীশচন্দ্রের চক্ষের জলে নগেন্দ্রের বিশেষ উপকার হইল । তিনি শ্ৰীশচন্দ্রের কণ্ঠলগ্ন হইয়া তাহার কাধে মাথা রাখিয়া রোদন করিলেন। শ্ৰীশচন্দ্রের বাটী আসিয়া, এ পর্য্যস্ত নগেন্দ্র রোদন করেন নাই— র্তাহার শোক রোদনের অতীত। এখন রুদ্ধশোকপ্রবাহ বেগে বহিল। নগেন্দ্র শ্ৰীশচন্দ্রের স্কন্ধে মুখ রাখিয়া বালকের মত বহুক্ষণ রোদন করিলেন। উহাতে যন্ত্রণার অনেক উপশম হইল, যে শোকে রোদন নাই, সে যমের দূত । নগেন্দ্র কিছু শাস্ত হইলে শ্ৰীশচন্দ্র বলিলেন, “এ সব কথায় আজ আর আবশ্বক নাই ।” নগেন্দ্র বলিলেন, “আর বলিবেই বা কি ? অবশিষ্ট যাহা ষাহা ঘটিয়াছিল, তাহা ত চক্ষে দেখিতে পাইতেছি । বর্হি হইতে তিনি একাকিনী পদব্রজে মধুপুরে আসিয়াছিলেন। পথ স্থাটিয়া পরিশ্রমে, অনাহারে, রৌদ্রে, বৃষ্টিতে,নিরাশ্রয়ে, আর আর মনের ক্লেশে সুর্য্যমুখী রোগগ্ৰস্ত হইয়া মরিবার জন্য পথে পড়িয়াছিলেন ।” শ্ৰীশচন্দ্র নীরব হইয়া রছিলেন। পরে কহিলেন, “ভাই বৃথা কেন আর সে কথা ভাব ? তোমার JS) - cगांव किडूझे नाई । छूभि उँiब्र अभtड द श्रबांश) হইয়া কিছুই কর নাই। যাহা আত্মদোষে ঘটে নাই, . তার জন্য অনুতাপ বুদ্ধিমানে করে ন৷ ” নগেন্দ্রনাথ বুঝিলেন না। তিনি জানিতেন, র্তারই সকল দোষ ; তিনি কেন বিষবৃক্ষের বীজ হৃদয় হইতে উচ্ছিন্ন করেন নাই ? - চত্বারিংশত্তম পরিচ্ছেদ হীরার বিষবৃক্ষের ফল হীর মহারভু কপর্দকের বিনিময়ে বিক্রয় করিল। ধৰ্ম্ম চিরকষ্টে রক্ষিত হয়, কিন্তু এক দিনের অসাবধানতায় বিনষ্ট হয় । হীরার তাহাই হইল। যে ধনের লোভে হীরা এই মহারত্ব বিক্রয় করিল, সে এক কড়া কাণা কড়ি । কেন না, দেবেন্দ্রের প্রেম বন্যার জলের মত ; যেমন পঙ্কিল, তেমনি ক্ষণিক । তিন দিনে বন্যার জল সরিয়া গেল, হীরাকে কাদায় বসাইয়। রাখিয়া গেল । যেমন কোন কোন কৃপণ অথচ যশোলিঙ্গ, ব্যক্তি বহুকালাবধি প্রাণপণে সঞ্চিতাৰ্থ রক্ষা করিয়া, পুত্ৰোদ্বাহ বা অন্য উৎসৰ উপলক্ষে এক দিনের মুখের জন্য ব্যয় করিয়া ফেলে, হীরা তেমনি এত দিন যত্নে ধৰ্ম্মরক্ষা করিয়া, এক দিনের সুখের জন্য তাহা নষ্ট করিয়া উৎস্বস্টার্থ কৃপণের ন্যায় চিরানুশোচনার পথে দণ্ডায়মান হইল। ক্রীড়াশীল বালক কর্তৃক অল্পোপভুক্ত অপক চুভফলের ন্যায়, হীর দেবেন্দ্র কর্তৃক পরিত্যক্ত হইলে, প্রথমে হৃদয়ে দারুণ ব্যথা পাইল । কিন্তু কেবল পরিত্যক্ত নহে-সে দেবেন্দ্র দ্বারা যেরূপ অপমানিত ও মৰ্ম্মপীড়িত হুইয়াছিল, তাহী স্ত্রীলোকমধ্যে অতি অধমারও অসহ্য । যখন, দেখা সাক্ষাতের শেষ দিনে হীরা দেবেক্সের চরণাবলুষ্ঠিত হইয়া বলিয়াছিল ষে, “দাসীরে পরিত্যাগ করিও না, তখন দেবেন্দ্র তাহাকে বলিয়া- ৷ ছিলেন ষে, “আমি কেবল কুন্দনন্দিনীর লোভে তোমাকে এত দুর সম্মানিত করিয়াছিলাম—ষদি । কুন্দের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ করাতে পার, তরেই, তোমার সঙ্গে আমার আলাপ থাকিবে –নচেৎ এই পৰ্য্যন্ত। তুমি যেমন গৰ্ব্বিতা, তেমনি আমি তোমাকে প্রতিফল দিলাম ; এখন তুমি এই কলঙ্কের ডালি মাথায় লইয়া গৃহে ষাও ।” ‘. . ; হীরা ক্রোধে অন্ধকার দেখিতে লাগিল ৷ ৰখন : তাহার মস্তক স্থির হইল, তখন সে দেবেন্দ্রের সম্মুখে ।