পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিমচন্দ্র SY লোকাচার দেশাচারের বিরুদ্ধে এরূপ নিৰ্ভাৱ স্পষ্ট উচ্চারণে আপন মত প্রকাশ করিতে সাহস করিত না। এমন কি, বঙ্কিম প্রাচীন হিন্দুশাস্ত্রের প্রতি ঐতিহাসিক বিচার প্রয়োগ করিয়া তাহার সার এবং অসার ভাগ পৃথকীকরণ, তাহার প্রামাণ্য এবং অপ্রামাণ্য অংশের বিশ্লেষণ এমন নিঃসঙ্কোচে করিয়াছেন যে এখনকার দিনে তাহার তুলনা পাওয়া কঠিন । বিশেষত দুই শক্রর মাঝখান দিয়া তাহাকে পথ কাটিয়া চলিতে হইয়াছে। একদিকে, যাহারা অবতার মানেন না তাহারা শ্ৰীকৃষ্ণের প্রতি দেবত্বারোপে বিপক্ষ হইয়া দাড়ান। অন্যদিকে যাহার শাস্ত্রের প্রত্যেক অক্ষর এবং লোকাচারের প্রত্যেক প্রথাকে আভ্রান্ত বলিয়া জ্ঞান করেন তাহারাও বিচারের লৌছাস্ত্র দ্বারা শাস্ত্রের মধ্য হইতে কাটিয়া কাটিয়া কুঁদিয়া কুঁদিয়া মহত্তম মমুষ্যের আদর্শ অমুসারে দেবতাগঠনকার্য্যে বড় প্রসন্ন হন নাই। এরূপ অবস্থায় অন্ত কেহ হইলে কোন এক পক্ষকে সৰ্ব্বতোভাবে আপন দলে পাইতে ইচ্ছা করিতেন। কিন্তু সাহিত্য-মহারথী বঙ্কিম দক্ষিণে বামে উভয় পক্ষের প্রতিই তীক্ষ শরচালন করিয়া অকুষ্ঠিতভাবে অগ্রসর হইয়াছেন–র্তাহার নিজের প্রতিভা কেবল র্তাহার একমাত্র সহায় ছিল । তিনি যাহা বিশ্বাস করিয়াছেন তাহ স্পষ্ট ব্যক্ত করিয়াছেন —বাকৃচাতুরী দ্বারা আপনাকে বা অন্তকে বঞ্চনা করেন নাই । কল্পনা এবং কাল্পনিকতা দুইয়ের মধ্যে একটা মন্ত প্রভেদ আছে। যথার্থ কল্পনা, যুক্তি সংযম এবং সত্যের দ্বার স্বনির্দিষ্ট আকারবদ্ধ-কাল্পনিকতার মধ্যে সত্যের ভান আছে মাত্র কিন্তু তাহ।