পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যকথা 8ግ আমাদের গ্রামের আড় পারে হুগলি কালেজ, প্রায় সাত আট বৎসর ধরিয়া বঙ্কিমচন্দ্র নৌকা চড়িয়া ঐ কলেজে যাহঁতেন। বৈশাখ মাসের প্রারম্ভেই এক এক দিন ছুটীর সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইত। বঙ্কিমচন্দ্র মাঝিকে জিজ্ঞাসা করিতেন, “কেমন রে, নৌকা ছাড় বি ?” মাঝি নৈহাটার পাটনী, কখন না বলিত না, নৌকা খুলিয়া দিত। কোন কোন দিন ঝড় উঠিবার পূৰ্ব্বেনৌকা ঘাটে গিয়া পোছিত, আর কোন কোন দিন মাঝ গঙ্গায় পৌছিত্বে না পৌছিতে কাল মেঘ দিগন্ত অন্ধকার করিত। নদীর জল কাল হইত। অল্পক্ষণমধ্যেই প্রবলবেগে ঝড় উঠিত। ভীষণ তরঙ্গ সকলের মাথাগুলি ভাঙ্গিয় ফেনার রাশিতে যেন নদীর বক্ষে তুলার মাড় ভাসিত। যাহারা নদীবক্ষে ঝড়ে পড়িয়াছেন, তাহারাই বুঝিতে পরিবেন, কি ভয়ানক দৃশু! বঙ্কিমচন্দ্র একদৃষ্টে ইহাই দেখিতেন । যিনি ষাড়গরু দেখিয়া ভয় পাইতেন, তিনি প্রকৃতির এই সৰ্ব্বসংহারিণী মূৰ্ত্তি অজ্ঞান হইয়া দেখিতেন। বঙ্কিমচন্ত্রের কালেজ পরিত্যাগ করিবার তিন চারি বৎসর পূৰ্ব্বে, আমি ঐ কলেজে ভর্তি হই, সুতরাং আমাকেও মধ্যে মধ্যে র্তাহার সহিত এই বিপদে পড়িতে হইত। বাইশ তেইশ বৎসর বয়সে বঙ্কিমচন্দ্র খুলনা মহকুমার ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন। এই সময়ে এক জন নীলকর সাহেব, হাতীর গুড়ে মশাল বাধিয়া একখানি গ্রাম জ্বালাইয়া দিয়াছিল। তখন বেঙ্গল পুলিসের স্বষ্টি হয় নাই, মাজিষ্ট্রেটের অধীনে পুলিস কাজ করিত। দারোগাগণ ঐ সাহেবটিকে কোন মতে ধরিতে পারিল না,