পাতা:বঙ্কিম চন্দ্রের দীনবন্ধু-জীবনী.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট । ܓ নাটকের রঙ্গমঞ্চখানি পল্লীর চিত্ৰপট দিয়া সাজানো। ঘরে বসিয়া পড়িবার সময়েই হউক, আর অভিনয় দেখিবার সময়েই হউক, যদি মনে হয় যে, আমরা যথার্থ পল্লীর মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছি, তবে রঙ্গমঞ্চখানি সুরচিত হইয়াছে, স্বীকার করিতে হইবে । আমি পল্লীগ্রামবাসী ; এবং আমাদের সেই ক্ষুদ্র পল্লীর নিকটবৰ্ত্তী অনেক গুলি গ্ৰাম বহুদিন নীলকরের ১ দখলে ছিল। আমি যখনই নীলদর্পণ পড়ি, বা উহার অভিনয় দেখি, তখনই সহর নগর ভুলিয়া, পল্লীবাসী কর্তৃক বেষ্টিত হইয়াছি বলিয়া অনুভব করি। - ক্ষেত্রমণি ও রেবতী যখন জল নিয়ে আসে, রাইচরণ যখন লাঙ্গল হাতে করিয়া, যায়, সৈরিন্ধী যখন চুলের দড়ী বিনায়, সরলা যখন আব্দুরীর সঙ্গে রহস্যালাপ করে, তখন কাহার সাধ্য যে, ভুলিয়াও একবার সহরের কথা ভাবিতে পারে ? প্ৰাকৃতিক ছবির এই সমাবেশই কি যথার্থ শিল্পচাতুৰ্য্য নয় ? রঙ্গমঞ্চের পরে অভিনেতৃগণের প্রতি দৃষ্টি করিব। বঙ্কিমবাবু অতি স্পষ্ট ভাষায় লিখিয়াছেন যে, “যাহা সুক্ষ্ম, কোমল, মধুর, আকৃত্ৰিম, করুণ, প্ৰশান্ত -সে সকলে দীনবন্ধুর তেমন অধিকার ছিল না। তাহার সৈরিন্ধনী, সরলা প্রভৃতি রসজ্ঞের নিকট তাদৃশ আদরণীয়া নহে।” বাঙ্গালা সাহিত্যে বঙ্কিম বাবুর রায়, হাইকোটের শেষ নিষ্পত্তির মত। এই এক কথায় নীলদর্পণের গৌরব একবারে মাটী হইয়া যায়। অঙ্ক শ্রেণীর দৃশ্যকাব্যে করূণরাস স্থায়ী হইলেই কাব্য সাৰ্থক হয়। সমগ্ৰ নাটকখানি পড়িয়া উঠিবার পর যে সে ভাব ঐ কাব্যে ও পাঠকের মনে সম্পূর্ণ স্থায়ী হয়, এ কথা সাহস করিয়া বলিতে পারি । বন্ধবর্গের সঙ্গে বসিয়া গ্ৰন্থখানি পড়িDSDBDDD BDD DBBB BBB BDBD K DBDB BBDSDBDDDD BDBB করুণরসাত্মক ভাবের অভিব্যক্তিই অনুভব করিয়াছি । আমরা কেহ বঙ্কিমবাবুর মত রসজ্ঞতার দাবী করিতে পারি না, কিন্তু আমাদের মত সাধারণ পাঠকেরাও যদি নীলদর্পণ পড়িয়া দলে দলে অশ্রুবিসর্জন করে, তবে নীলদর্পণে করুণ রসের অভাব স্বীকৃত হইতে পারে না। সমষ্টিভাবে সমগ্ৰ গ্রন্থে যে রস স্থায়ী, তাহা যে নাটকের প্রযুক্ত পাত্ৰে ফুটিয়া উঠে নাই, তাহা কিরূপে স্বীকার করিব ? অত্যাচারীর নিষ্পেষণে নিরীহ গ্রামবাসীরা যে ভাবে মনে প্ৰাণে মারা যাইতেছে, বঙ্কিম বাবু তাহা ত অপ্রাকৃতিক চিত্র বলেন নাই ; তবে কি কারণে বলিব যে, ঐ চিত্র গুলি করুণরসরঞ্জিত তুলিকায় অঙ্কিত মহে ?