পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QRS পাদকাদ্বয় মন্ডন করিতেছে! মনে করিলাম, সার্থক তাহার লেখনীধারণ! সার্থক তাহার নিশীথ-তৈলদাহ! মাখের দ্বারা তাহার রচনা পঠিত না হইয়া সাধ জনের চরণের সঙ্গে যে কোন প্রকার সম্প্ৰবন্ধষক্ত হইয়াছে, ইহা বঙ্গীয় লেখকের সৌভাগ্য। এই ভাবিয়া কৌতহলাবিন্স্ট হইয়া পড়িয়া দেখিলাম যে, কাগজখানি কি। পড়িলাম, উপরে লেখা আছে, “বঙ্গদর্শন।” ভিতরে লেখা আছে, “কমলাকান্তের দপ্তর।” তখন বঝিলাম যে, আমারি এ পৰ্ব্বজন্মাডিজত সৰ্বকৃতির ফল। আরও একটা কোঁত হল জন্মিল। বঙ্গদর্শন কি, তাহা জানিবার ইচ্ছা হইল। একজন বন্ধকে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, “মহাশয়, বঙ্গদর্শনটা কি, তাহা বলিতে পারেন?” তিনি অনেকক্ষণ ভাবিলেন। অনেকক্ষণ পরে মন্তক উত্তোলন করিয়া বলিলেন, “বোধ হয়। বঙ্গদেশ দশন করাই বঙ্গদর্শন।” আমি তাঁহার পান্ডিত্যের অনেক প্রশংসা করিলাম, কিন্তু অগত্যা অন্য বন্ধকেও ঐ প্রশন করিতে হইল। অন্য বন্ধ সিদ্ধান্ত করিলেন যে, শকারের উপর যে রেফটি আছে, বোধ হয়, তাহা মাদ্রাকারের ভ্ৰম; শব্দটি “বঙ্গদশন,” অর্থাৎ বাঙ্গালার দাঁত। আমি তাঁহাকে চতুষ্পপাঠী খলিতে পরামর্শ দিয়া অন্য এক সশিক্ষিত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বঙ্গ শব্দে পািকব-বাঙ্গালা ব্যাখ্যা করিয়া বলিলেন, “ইহার অর্থ পািব্ব বাঙ্গালা দর্শন করিবার বিধি"; অর্থাৎ ‘A Guide to Eastern Bengal.” এইরুপ বহা প্রকার অন্যসন্ধান করিয়া অবশেষে জানিতে পারিলাম যে, বঙ্গদর্শন একখানি মাসিক পত্রিকা এবং তাহাতে কমলাকান্ত শৰ্ম্মমার মাসিক পিন্ডদান হইয়া থাকে। এক্ষণে আবার শনিতেছি, কোন ধনধির ঐ দপ্তরগলি নিজপ্রণীত বলিয়া প্রচারিত করিয়াছেন। আরও কত হবে! অতএব হে বঙ্গদর্শন-সম্পাদক মহাশয়! অবগত হউন যে, আমি শ্ৰীকমলাকান্ত শৰ্ম্মমা সশরীরে ইহজগতে অদ্যাপি অধিষ্ঠান করিতেছি এবং আপনাদিগের বিশেষ আপত্তি থাকিলেও আরও কিছদিন অধিষ্ঠান করিব, এমত ইচ্ছা রাখি। এক্ষণে কি জন্য আপনাকে অদ্য পত্র লিখিতেছি, তাহা অবগত হউন। উপরে দেখিতে পাইবেন, “শ্ৰীশ্ৰীনসিধাম” লিখিয়াছি। অর্থাৎ আমার নাসিবাব শ্ৰীশ্ৰী” ঈশবিরে বিলীন হইয়াছেন! ভরসা করি যে, তিনি সব্বাশ্রয় শ্ৰীপাদপদ্মে পৌঁছিয়াছেন, কিন্তু বাস্তবিক তাঁহার গতি কোন পথে হইয়াছে, তাহার নিশ্চিত সম্পবাদ। আমি রাখি না। কেবল ইহাই জানি যে, ইহলোকে তিনি নাই। অতএব আমারও আশ্রয় নাই! অহিফেনের কিছ গোলযোগ হইয়া উঠিয়াছে। তাহার কিছ বন্দোবস্ত করিতে পারেন? আমার দপ্তরের জন্য আপনি খোেশানবীস মহাশয়কে কি দিয়াছিলেন বলিতে পারি না; কিন্তু আমাকে এক আধ পোয়া আফিঙ্গ পাঠাইলেই (আমার মাত্রা কিছ বেশী) আমি এক একটি প্রবন্ধ পাঠাইতে পারিব। আপনার মঙ্গল হউক! আপনি ইহাতে দ্বিরক্তি করবেন না। কিন্তু আপনার সঙ্গে একটা বন্দোবস্ত পাকাপাকি করিবার আগে, গোটা কত কথা জিজ্ঞাসা আছে। এ কমলাকান্তি কলে, ফরমায়েস মত সকল রকমের রচনা প্ৰস্তৃত হয়-আপনার চাই কি ? নাটক নবেল চাই, না পলিটিক্সের দরকার ? কিছ ঐতিহাসিক গবেষণা পাঠাইব, না। সংক্ষিপ্ত সমালোচনার বাহার দিব ? বিজ্ঞানশাস্ত্রে আপনার প্রসক্তি, না ভৌগোলিকতত্ত্ব রসে আপনি সারসিক ? স্থল কথাটা, গাের বিষয় পাঠাইব, না লাঘ বিষয় পাঠাইব ? আমার রচনার মাল্য, আপনি গজ দরে দিবেন, না মণ দরে দিবেন ? আর যদি গাের বিষয়েই আপনার অভিরুচি হয়, তবে বলিবেন, তাহার কি প্রকার অলঙ্কার সমাবেশ করিব। আপনি কোটেশ্যন ভালবাসেন, না। ফটেনোটে আপনার অন্যরাগ ? যদি কোটেশ্যন বা ফািটনোটের প্রয়োজন হয়, তবে কোন ভাষা হইতে দিব, তাহাও লিখিবেন। ইউরোপ ও আশিয়ার সকল ভাষা হইতে আমার কোটেশ্যন সংগ্ৰহ করা হইয়াছে-আফ্রিকা ও আমেরিকার কতকগালি ভাষার সন্ধান পাই নাই। কিন্তু সেই সকল ভাষার কোটেশ্যন, আমি অচিরাং প্রস্তুত করিব, আপনি চিন্তিত হইবেন না। আপনার আকাঙ্ক্ষা, তাহাও জানাইবেন। আমি সািবয়ং সে দিকে কিছু করিতে পারি না পারি, আমার এক বড় সহায় জটিয়াছে। ভীমদেব খোেশানবীস মহাশয়ের পত্র যিনি ইউটিলিটি শব্দের আশচয্য ব্যাখ্যা করিয়াছিলেন,* তাঁহাকে আপনার সমরণ থাকিতে পারে। তিনি এক্ষণে हैठ-प्रैल-थे-आई। ܬܬ