পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰজ্ঞানগ্নহস্য "হিন্দ-গ্রন্থে অতি সচরাচর দেখা যায়। যদি এ কথা যথাৰ্থ হয়, তাহা হইলে, যতকাল চন্দ্র সােয্য, ততকাল মনষ্যে। বৈজ্ঞানিকেরা এ তত্ত্বে কি প্রমাণ সংগ্ৰহ করিয়াছেন, তাহাই সমালোচিত করা এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য। বিজ্ঞানের অদ্যাপি এমত শক্তি হয় নাই যে, জগৎ অনাদি, কি সাদি, তাহার মীমাংসা করেন। কোন কালে সে মীমাংসা হইবে কি না, তাহাও সন্দেহের স্থল। তবে এক কালে, জগতের যে এ রােপ ছিল না, বিজ্ঞান ইহা বলিতে সক্ষম। ইহা বলিতে পারে যে, এই পথিবী এইরূপ তৃণ-শস্য-বক্ষময়ী, সাগর-পৰ্ব্ববােতাদিপরিপািণ, জীবসংকুলা, জীববাসোপযোগিনী ছিল না; গগন এককালে এরােপ সত্য চন্দ্রনক্ষত্রাদিবিশিষ্ট ছিল না। একদিন-তখন দিন হয় নাইএককালে জল ছিল না, ভূমি ছিল না-বায় ছিল না। কিন্তু যাহাতে এই চন্দ্র সােয্য তারা হইয়াছে, যাহাতে জল বায় ভূমি হইয়াছে—যাহাতে নদ নদী সিন্ধা-বন বিটপী বক্ষ-তৃণ লতা পক্ষেপ—পশ পক্ষী মানব হইয়াছে, তাহা ছিল। জগতের রােপান্তর ঘটিয়াছে, ইহা বিজ্ঞান বলিতে পারে। কবে ঘটিল, কি প্রকারে ঘটিল, তাহা বিজ্ঞান বলিতে পারে না। তবে ইহাই বলিতে পারে যে, সকলই নিয়মের বলে ঘাঁটিয়াছো-ক্ষণিক ইচ্ছাধীন নহে। যে সকল নিয়মে অদ্যপি জড় প্রকৃতি শাসিত হইতেছে, সেই সকল নিয়মের ফলেই এই ঘোর রূপান্তর ঘটিয়াছে। সেই সকল নিয়মে ? তবে আর সেরাপ রুপান্তর দেখি না কেন ? দেখিতেছি। তিল তিল করিয়া, মহতে মহতে জগতের রােপান্তর ঘটিতেছে। কোটি কোটি বৎসর পরে, পথিবী কি ঠিক এই রােপ থাকিবে ? তাহা নহে। কিরাপে এই ঘোর রিপান্তর ঘটিল, এ প্রশেনর একটি উত্তর অতি বিখ্যাত। আমরা লাপ্লাসের মতের কথা বলিতেছি। লাপ্লাসের মত ক্ষমাদ্র বিদ্যালয়ের ছাত্রেরাও জানেন-সংক্ষেপে বর্ণিত করিলেই হইবে। লাপ্লাস সৌর জগতের উৎপত্তি বৰ্ব্বাইয়াছেন। তিনি বলেন, মনে কর, আদৌ সমৰ্য্য, গ্রহ, উপগ্রহাদি নাই, কিন্তু সৌর জগতের প্রান্ত অতিক্ৰম করিয়া সব্বত্র সমভাবে, সৌর জগতের পরমাণ সকল ব্যাপিয়া রহিয়াছে। জড় পরমাণমাত্রেরই, পরস্পরাকর্ষণ, তাপক্ষয়, সঙ্কোচন প্রভৃতি যে সকল গণ আছে, ঐ জগদ্ব্যাপী পরমাণও থাকিবে। তাহার ফলে, ঐ পরমাণ রাশি, পরমাণ রাশির কেন্দ্রকে বেস্টন করিয়া ঘণিত হইতে থাকিবে। এবং তােপক্ষতির ফলে ক্ৰমে সঙ্কুচিত হইতে থাকিবে। সঙ্কোচনকালে, পরমাণ-জগতের বহিঃপ্রদেশসকল মধ্যভাগ তে বিযক্তি হইতে থাকিবে। বিষক্ত ভগ্নাংশ পািব্ব সঞ্চিত বেগের গণে মধ্য প্রদেশকে বেড়িয়া ঘরিতে থাকিবে। যে সকল কারণে বন্টিবিন্দ গোলত্ব প্রাপ্ত হয়, সেই সকল কারণে ঘারিতে ঘরিতে সেই ঘণিত বিযক্তি ভগ্নাংশ, গোলাকার প্রাপ্ত হইবে। এইরপে এক একটি গ্রহের উৎপত্তি। এবং তাহা হইতে উপগ্ৰহগণেরও ঐরাপে উৎপত্তি। অবশিষ্ট মধ্যভাগ, সঙ্কোচ প্রাপ্ত হইয়া বত্তমান সাহায্যে পরিণত হইয়াছে। যদি স্বীকার করা যায় যে, আদৌ পরমাণ মাত্র আকােরশন্য হইয়া জগৎ ব্যাপিয়া ছিলজগতে আর কিছই ছিল না।--তাহা হইলে ইহা সিদ্ধ হয় যে, প্রচলিত নৈসৰ্গিক নিয়মের বলে জগৎ, সৰ্য্যে,* চন্দ্র, গ্রহ, উপগ্রহ, ধমকেতু বিশিষ্ট হইবে-ঠিক এখন যেরপ, সেইরাপ হইবে। প্রচলিত নিয়ম ভিন্ন অন্য প্রকার ঐশিক আজ্ঞার সাপেক্ষ নহে। এই গরতের তত্ত্ব, এই ক্ষদ্র প্রবন্ধে বাবাইবার সম্ভাবনা নহে-এবং ইহা সাধারণ পাঠকের বোধগম্য হইতেও পারে না। আমাদের সে উদ্দেশ্যও নহে। যাঁহারা বিজ্ঞানালোচনায় সক্ষম, তাঁহারা এই নৈহারিক উপপাদ্য সম্বন্ধে হবাট স্পেন্সরের বিচিত্র প্রবন্ধ পাঠ করিবেন। দেখিবেন যে, পেন্সর কেবল আকােরশান্য পরমাণসমষ্টির অস্তিত্ব মাত্র প্রতিজ্ঞা করিয়া, তাহা হইতে জাগতিক ব্যাপারের সমদায়ই সিদ্ধ করিয়াছেন। স্পেন্সরের কথা প্রামাণিক না হইলে হইতে পারে, কিন্তু বদ্ধির কৌশল আশ্চৰ্য্য। এইরপে যে, বিশ্ব সন্টি হইয়াছে, এমত কোন নৈসগিক প্রমাণ নাই। অন্য কোন প্রকারে যে সন্টি হয় নাই, তাহারও কোন নৈসৰ্গিক প্রমাণ নাই। তবে লাপ্লাসের মতে প্রমাণবিরদ্ধেও কিছ নাই। অসম্ভব কিছ নাই। এ মত সম্ভব, সঙ্গত-অতএব ইহা প্রমাণের অতীত হইলেও গ্রাহ্য।

  • গতিশন্য নক্ষত্র মাত্রেই সৰ্য্যে। জগতে কোটি কোটি সােয্য।

কোেমং, মিল, পেন্সর প্রভৃতি এই মত অন্যামোদন করেন। সারা জন হশেল বলেন, এ মত প্রমাণবিরাদ্ধ।

  • ミー>O S86: