পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बिबक्ष धबश्क-ख्वान প্রত্যক্ষে মেঘের অস্তিত্ব জ্ঞান হইল কোথা হইতে ? আমরা পৰেব পাৰোব দেখিয়াছি, আকাশে মেঘ ব্যতীত কখন এরপ ধবনি হয় নাই। এমন কখনও ঘটে নাই যে, মেঘ নাই, অথচ এরপ ধৰনি শনা গিয়াছে। অতএব রদ্ধদ্বার গহমধ্যে থাকিয়াও আমরা বিনা প্রত্যক্ষে জানিলাম যে, আকাশে মেঘ হইয়াছে। ইহাকে অনামিতি বলে। মেঘধবনি আমরা প্রত্যক্ষ জানিয়াছি, কিন্তু মেঘ অনামিতির দ্বারা। মনে কর, ঐ রদ্ধদ্বার গহ অন্ধকার, এবং তুমি সেখানে একাকী আছ। এমত কালে তোমার দেহের সহিত মনষ্যশরীরের সম্পশা অনভূত করিলে। তুমি তখন কিছ না দেখিয়া, কোন শব্দও না। শনিয়া জানিতে পারিলে যে, গহমধ্যে মনষ্য আসিয়াছে। সেই সপশক্তিজ্ঞান ত্বাচ প্রত্যক্ষ; কিন্তু গহমধ্যে মনষ্য-জ্ঞান অনামিতি। ঐ অন্ধকার গহে তুমি যদি যাথিকা পক্ষেপের গন্ধ পাও, তবে তুমি বঝিবে যে, গহে পাম্পাদি আছে; এখানে গন্ধই প্রত্যক্ষের বিষয়; পৰম্প অনামিতির বিষয়। মনকেষ্য অলপ বিষয়ই স্বয়ং প্রত্যক্ষ করিতে পারে। অধিকাংশ জ্ঞানই অনামিতির উপর নিভাির করে। অনমিতি সংসার চালাইতেছে। আমাদিগের অনমানশক্তি না থাকিলে আমরা প্রায় কোন কাৰ্য্যই করিতে পারিতাম না। বিজ্ঞান, দশনাদি অনমানের উপরেই নিশ্চিমত। কিন্তু যেমন কোন মনীষাই সকল বিষয়ে স্বয়ং প্রত্যক্ষ করিতে পারেন না, তেমনি কোন ব্যক্তি সকল তত্ত্ব স্বয়ং অনামান করিয়া সিদ্ধ করিতে পারেন না। এমন অনেক বিষয় আছে যে, তাহা অনমান করিয়া জানিতে গেলে যে পরিশ্রম আবশ্যক, তাহা একজন মনষ্যের জীবনকালের মধ্যে সাধ্য নহে। এমন অনেক বিষয় আছে যে, তাহা অনমানের দ্বারা সিদ্ধ করার জন্য যে বিদ্যা বা যে জ্ঞান, বা যে বদ্ধি বা যে অধ্যবসায় প্রয়োজনীয়, তাহা অধিকাংশ লোকেরই নাই। অতএব এমন অনেক নিতান্ত প্রয়োজনীয় বিষয় আছে যে, তাহা অনেকে স্বয়ং প্রত্যক্ষ বা অনমানের দ্বারা জ্ঞাত হইতে পারেন না। এমন স্থলে আমরা কি করিয়া থাকি ? যে সস্বয়ং প্রত্যক্ষ করিয়াছে বা যে স্বয়ং অননুমান করিয়াছে, তাহার কথা শনিয়া বিশ্বাস করি। ইতালীর উত্তরে যে আলাপ নামে পর্বতশ্রেণী আছে, তাহা তুমি স্বয়ং প্রত্যক্ষ কর নাই। কিন্তু যাঁহারা দেখিয়াছেন, তাঁহাদের প্রণীত পত্তিক পাঠ করিয়া তুমি সে জ্ঞান লাভ করিলে। পরমাণ মাত্র যে অন্য পরমাণমাত্রের দ্বারা আকৃষ্ট হয়, ইহা প্রত্যক্ষের বিষয় হইতে পারে না এবং তুমিও ইহা গণনার দ্বারা করিতে পার নাই, এজন্য তুমি নিউটনের কথায় বিশ্বাস করিয়া সে জ্ঞান লাভ করিলে। ন্যায়, সাংখ্যাদি আৰ্য্যদর্শনশাস্ত্রে ইহা একটি তৃতীয় প্রমাণ বলিয়া গণ্য হইয়াছে। ইহার নাম শব্দ। তাঁহাদিগের বিবেচনায় বেদাদি এই প্রমাণের উপর নিভাির করে। আপ্তবাক্য বা গর পদেশ, সস্থলতঃ যে বিশ্বাসযোগ্য, তাহার উপদেশ,-আৰ্য্যমতে ইহা একটি স্বতন্ত্র প্রমাণ। তাহারই নাম শবদ । কিন্তু চাব্বােগাদি কোন কোন আৰ্য্য দার্শনিক ইহাকে প্রমাণ বলিয়াই স্বীকার করেন না। ইউরোপীয়েরাও ইহাকে সর্বতন্ত্র প্রমাণ বলিয়া স্বীকার করেন না। দেখা যাইতেছে, সকলের কথায় বিশ্বাস অকৰ্ত্তব্য। যদি একজন বিখ্যাত মিথ্যাবাদী আসিয়া বলে যে, সে জলে অগ্নি জীবলিতে দেখিয়া আসিয়াছে, তবে এ কথা কেহই বিশ্বাস করিবে না। তাহার উপদেশে প্রমাঙজ্ঞানের উৎপত্তি নাই। ব্যক্তিবিশেষের উপদেশই প্রমাণ বলিয়া গ্রাহ্য। তবে সেই জ্ঞানলাভের পর্বে আদৌ মীমাংসা আবশ্যক যে, কে বিশ্বাসযোগ্য, কে নহে। কোন প্রমাণের উপর নিভাির করিয়া এ মীমাংসা করিব ? কোন প্রমাণের উপর নিভাির করিয়া, মন্দবাদির কথা আগুবাক্য বলিয়া গ্রহণ করিব, এবং রাম শ্যামার কথা অগ্রাহ্য করিব ? দেখা যাইতেছে যে, অনমানের দ্বারা ইহা সিদ্ধ করিতে হইবে। মনার সঙ্গে পল্লীর পাদরি সাহেবের মতভেদ। তুমি চিরকাল শনিয়া আসিয়াছ যে, মন অভ্রান্ত ঋষি, এবং পাদরি সাহেব সাবাথ পর সামান্য মনষ্য; এজন্য তুমি অনামান করিলে যে, মনীর কথা গ্রাহ্য, পাদরির কথা অগ্রাহ্য। মনার ন্যায় অভ্রান্ত ঋষি গোমাংসভোজন নিষেধ করিয়াছেন বলিয়া তুমি, অনমান করিলে গোমাংস অভক্ষ্য। অতএব শব্দকে একটি সর্বতন্ত্র প্রমাণ না বলিয়া, অনমানের অন্তর্গত বল না কেন ? শধ তাঁহাই নহে। যে ব্যক্তির কতকগলি উপদেশ গ্রাহ্য কর, তাহারই আর কতকগলি অগ্রাহ্য করিয়া থােক। মাধ্যাকর্ষণ সম্পবন্ধে নিউটনের যে মত, তাহা তুমি শিরোধাষ্য কর, কিন্তু আলোক সম্পবন্ধে তাঁহার যে মত, তাহা পরিত্যাগ করিয়া তুমি ক্ষদ্রতর বদ্ধিজীবী ইয়াঙ ও RSS