विदिश अवक-जारशालधन (৬) শতপথ ব্রাহ্মণে আছে যে, অগ্নি হইতে ঋচ, বায় হইতে যজষ, এবং সায্য হইতে সামবেদের উৎপত্তি; ছন্দোগ্য উপনিষদেও ঐরােপ আছে। এবং মনতেও তদুপ আছে। (৭) শতপথ ব্রাহ্মণের অন্যত্র আছে, বেদ প্রজাপতি কর্তৃক সল্ট হইয়াছিল। (৮) শতপথ ব্রাহ্মণের সেই স্থানেই আছে যে, প্রজাপতি বেদসহিত জলমধ্যে প্রবেশ করেন। জল হইতে অন্ডের উৎপত্তি হয়। অন্ড হইতে প্ৰথমে তিন বেদের উৎপত্তি। (৯) শতপথ ব্রাহ্মণের অন্যত্র আছে যে, বেদ মহাভূতের (ব্ৰহ্মার) নিশ্বাস। (১০) তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণে আছে, প্রজাপতি সোমকে সন্টি করিয়া তিন বেদের সন্টি করিয়াছেন। (১১) বাহদারণ্যক উপনিষদে আছে, প্রজাপতি বাকী সন্টি করিয়া তন্দ্বারা বেদাদি সকল সন্টি করিয়াছেন। (১২) শতপথ ব্রাহ্মণে পানশাচ আছে যে, মনঃসমদ্র হইতে বাকীরােপ সাবলের দ্বারা দেবতারা বেদ খাঁড়িয়া উঠাইয়াছিলেন। (১৩) তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণে আছে যে, বেদ প্রজাপতির শামশ্র। (১৪) উক্ত ব্ৰাহ্মণে পানশাচ আছে, বাগদেবী বেদমাতা। (১৫) বিষ্ণপরিাণে আছে, বেদ ব্ৰহ্মার মািখ হইতে উৎপন্ন। ভাগবত পরাণে ও মাকন্ডেয় পরাণেও ঐরােপ। (১৬) হরিবংশে আছে, গায়ত্রীসম্ভবত ব্ৰহ্মতেজোময় পরিষের নেত্ৰ হইতে ঋচ ও যজষ, জিহবাগ্রি হইতে সাম, এবং মদ্ধে হইতে অথকেবার সাজন হইয়াছিল। (১৭) মহাভারতের ভীষ্মমপক্বে আছে যে, সরস্বতী এবং বেদ, বিষ্ণ মন হইতে সজেন করিয়াছিলেন। শান্তিপকেবাঁ সরস্বতীকে বেদমাতা বলা হইয়াছে। (১৮) অথবব বেদান্তগত আয়কেবাদে আছে যে, আয়ন্বোদ ব্ৰহ্মা মনে মনে জানিয়াছিলেন। আয় বেদ অথব্ববেদান্তগত বলিয়া অথব্ববেদের ঐরােপ উৎপত্তি বঝিতে হইবে। বেদের মন্ত্র, ব্রাহ্মণ, উপনিষদ এবং আরণ্যকে, এবং সন্মতি, পরাণ ও ইতিহাসে বেদোৎপত্তি বিষয়ে এইরােপ আছে। দেখা যাইতেছে যে, এ সকল বেদের সাম্রাটত্ব এবং পৌরষেয়ত্ব প্রায় সবত্র স্বীকৃত হইয়াছো-কদাচিৎ আপৌরষেয়ত্বও কথিত আছে। কিন্তু পরবত্তীর্ণ টীকাকার ও দাশৰ্শনিকেরা প্রায় অপৌরষেয়ত্ব-বাদী। তাঁহাদিগের মত নিম্পেন্ন লিখিত হইতেছে। (১৯) সায়নাচায্য বেদাৰ্থপ্রকাশ নামে ঋগ্বেদের টীকা করিয়াছেন। তাহাতে তিনি বলেন যে, বেদ অপৌরষেয়। কিন্তু বেদ মনীষাকৃত নহে বলিয়াই অপৌরষেয় বলেন। (২০) সায়নাচায্যের ভ্রাতা মাধবাচায্যও বেদাৰ্থপ্রকাশ নামে তৈত্তিরীয় যজকেবাদের টীকা করিয়াছেন। তিনি বলেন, বেদ নিত্য। তবে তিনি এই অর্থে নিতা বলেন যে, কাল আকাশাদি যেমন নিত্য, সেইরাপ বেদ। ব্যবহারকালে কালিদাসাদিবাক্যাবৎ পরিষবিরচিত নহে বলিয়া নিত্য। এবং তিনি ব্ৰহ্মাকে বেদবক্তা বলিয়া সম্বীকার করিয়াছেন। (২১) মীমাংসকেরা বলেন, বেদ নিত্য এবং অপৌরষেয়। শব্দ নিত্য বলিয়া বেদ নিত্য। শঙ্করাচায্য এই মতাবলম্বী। (২২) নৈয়ায়িকেরা তাহার প্রতিবাদ করিয়া বলেন, বেদ পৌরষেয় -মন্ত্র ও আয়ন্ধেবদের ন্যায়, জ্ঞানী ব্যক্তির কথা প্রামাণ্য বলিয়াই বেদও প্রামাণ্য বোধ হয়। গৌতমসত্রের ভাবে বেদকে মনষ্যপ্রণীত বলিয়া নিৰ্দেশ করা তাঁহার ইচ্ছা কি না, নিশ্চিত বঝো যায় না। (২৩) বৈশেষিকেরা বলেন, বেদ ঈশ্বরপ্রণীত। কুসমাঞ্জলিকত্তা উদয়নাচায্যের এই মত। এই সমস্ত শাস্ত্রের আলোচনা করিয়া দেখা যায় যে, কেহ বলেন, বেদ নিত্য এবং অপৌরষেয়; কেহ বলেন, বেদ সলেট এবং ঈশ্বরপ্রণীত। ইহা ভিন্ন তৃতীয় সিদ্ধান্ত হইতে পারে না। কিন্তু সাংখ্য-প্রবচনকারের মত সন্টিছাড়া। তিনি প্রথমতঃ বলেন যে, বেদ কদাপি নিত্য হইতে পারে না; কেন না, বেদেই তাহার কার্য্যত্বের প্রমাণ আছে-যথা “স তপোহাতপাত তস্মাৎ তপস্তেপানা প্রয়ো বেদা অজয়ন্ত ।” যেখানে বেদেই বলে যে, এই এই রূপে বেদের জন্ম অপৌরষেয় নহে, তাহা অবশ্য পৌরষেয় হইবে। কিন্তু সাংখ্যকারের মতে বেদ অপৌরষেয় নহে, পৌরষেয়ও নহে। পরিষ, অর্থাৎ ঈশ্বর নাই বলিয়া তাহা পৌরষেয় নহে। সাংখ্যকার R0
পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৬৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikisource/bn/thumb/d/db/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%AE_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%80_%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.pdf/page267-1024px-%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%AE_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%80_%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.pdf.jpg)