পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রচনাবলী আরও বলেন যে, বেদ করিতে যোগ্য যে পরষ তিনি হয় মক্ত, নয় বদ্ধ। যিনি মক্ত, তিনি প্রবত্তির অভাবে বেদস্যজন করিবেন না; যিনি বদ্ধ, তিনি অসদ্ব্বজ্ঞ বলিয়া তৎপক্ষে অক্ষম। তবে পৌরষেয় নহে, অপৌরষেয়ও নহে। তাহা কি কখন হইতে পারে ? সাংখ্যকার বলেন, হইতে পারে, যথা-অঙ্কুরাদি (৫, ৮৪)। যাঁহারা হিন্দ-দশনশাস্ত্রের নাম শানিলেই মনে করেন, তাহাতে সৰবীন্দ্রই আশচষ্য বদ্ধির কৌশল, তাঁহাদিগের ভ্ৰম নিবারণার্থ এই কথার বিশেষ উল্লেখ করিলাম। সাংখ্যকারের বদ্ধির তীক্ষতাও বিচিত্রা, ভ্রান্তিও বিচিত্রা। সাংখ্যকার যে এমন রহস্যজনক ভ্ৰান্তিতে অনবধানতাপ্রযক্ত পতিত হইয়াছিলেন, আমরা এমত বিবেচনা করি না। আমাদিগের বিবেচনায় সাংখ্যকার অন্তরে বেদ মানিতেন না, কিন্তু তাৎকালিক সমাজে ব্রাহ্মণে এবং দার্শনিকে কেহ সাহস করিয়া বেদের অবজ্ঞা করিতে পারিতেন না। এজন্য তিনি মৌখিক বেদভক্তি প্ৰকাশ করিয়াছিলেন এবং যদি বেদ মানিতে হইল, তবে আবশ্যকমত প্রতিবাদী দিগকে নিরস্ত করিবার জন্য স্থানে স্থানে বেদের দোহাই দিয়াছেন। কিন্তু তিনি অন্তরে বেদ মানিতেন বোধ হয় না। বেদ পৌরষেয় নহে, অপৌরষেয়ও নহে, এ কথা কেবল ব্যঙ্গ মাত্র। সত্রকারের এই কথা বলিবার অভিপ্ৰায় বঝা যায় যে, “দেখ, তোমরা যদি বেদকে সববিজ্ঞানযক্তি বলিতে চাহ, তবে বেদ না পৌরষেয়, না অপৌরষেয় হইয়া উঠে। বেদ অপৌরষেয় নহে, ইহার প্রমাণ বেদে আছে। তবে ইহা যদি পৌরষেয় হয়, তবে ইহাও বলিতে হইবে যে, ইহা মনীষাকৃত; কেন না, সব্বজ্ঞ পরিষ কেহ নাই, তাহা প্রতিপন্ন করা গিয়াছে।” যদি এ সকল সত্রের এরপে অৰ্থ করা যায়, তবে অদ্বিতীয় দরিদশী দার্শনিক সাংখ্যকারকে অল্পবদ্ধ বলিতে হয়। তাহা কদাপি বলা যাইতে পারে না। বেদ যদি পৌরষেয় নহে, অপৌরষেয়ও নহে, তবে মানিব কেন ? সাংখ্যকার এ প্রশেনর উত্তর দেওয়া আবশ্যক বিবেচনা করিয়াছিলেন। আজি কালিকার কথা ধরিতে গেলে বোধ হয়, এত বড় গরতের প্রশন ভারতবর্ষে আর কিছই নাই। এক দল বলিতেছেন, সনাতন ধৰ্ম্মম বেদমলেক, তোমরা এ সনাতন ধৰ্ম্মেম ভক্তিহীন কেন ? তোমরা বেদ মান না কেন ? আর এক দল বলিতেছেন, আমরা বেদ মানিব কেন ? সমাদয় ভারতবর্ষ এই দই দলে বিভক্ত। এই দই প্রশেনর উত্তর লইয়া বিবাদ হইতেছে। ভারতবষের ভাবী মঙ্গলামঙ্গল এই প্রশেনর মীমাংসার উপর নিভাির করে। হিন্দগণ সকলেরই কি সবধৰ্ম্মেম থাকা উচিত ? না। সকলেরই সর্বধম ত্যাগ BB uBD DS BBBDD BBB BD DDDBB DS DD DDDBD BDDSD DD DDDS S BBBBB BB DDDDB আর একবার এই প্রশন উত্থাপিত হইয়াছিল। যখন ধৰ্ম্মমশাস্ত্রের অত্যাচারে পীড়িত হইয়া ভারতবর্ষ ব্ৰাহি ত্ৰাহি কারিয়া ডাকিতেছিল, তখন শাক্যসিংহ বদ্ধদেব বলিয়াছিলেন, “তোমরা বেদ মানিবে কেন ? বেদ মানিও না।” এই কথা শনিয়া বেদবিৎ, বেদভক্ত, দার্শনিকমন্ডলী এই প্রশেনর উত্তর দিয়াছিলেন। জৈমিনি, বাদরায়ণ, গৌতম, কণােদ, কপিল, যাঁহার যেমন ধারণা, তিনি তেমনি উত্তর দিয়াছিলেন। অতএব প্রাচীন দশনশাস্ত্রে এই প্রশেনর উত্তর থাকাতে দাইটি কথা জানা যাইতেছে। প্রথম, আজি কালি ইংরেজি শিক্ষার দোষেই লোকে বেদের অলঙ্ঘনীয়তার প্রতি নািতন সন্দেহ করিতেছে, এমত নহে। এ সন্দেহ অনেক দিন হইতে। প্রাচীন দাশ নকদিগের পরে শঙ্করাচাৰ্য্য মাধবাচায্য সায়নাচায্য প্রভৃতি নব্যেরাও ঐ প্রশেনর উত্তর দিবার জন্য ব্যস্ত হইয়াছিলেন। দ্বিতীয়, দেখা যায় যে, এ প্রশন বৌদ্ধেরা প্রথম উত্থাপিত করেন, এবং প্রাচীন দাশ নিকেরা প্রথম তাহার উত্তর দান করেন। অতএব বৌদ্ধধৰ্ম্মম ও দশনশাস্ত্রের উৎপত্তি সমকালিক বলা যাইতে পারে। বেদ মানিব কেন ? এই প্রশেনর বিচারসমরে মহারথী মীমাংসক জৈমিনি। তাঁহার প্রতিদ্বন্দ্বী নৈয়ায়িক গৌতম। নৈয়ায়িকেরা বেদ মানেন না, এমত নহে। কিন্তু যে সকল কারণে মীমাংসকেরা বেদ মানেন, নৈয়ায়িকেরা তাহা অগ্রাহ্য করেন। মীমাংসকেরা বলেন, বেদ নিত্য এবং অপৌরষেয় । নৈয়ায়িকেরা বলেন, বেদ আস্তুবাক্য মাত্র। নৈয়ায়িকেরা মীমাংসকের মত খন্ডন জন্য যে সকল আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন, মাধবাচায্য-প্রণীত সব্বাদশনাসংগ্ৰহ হইতে তাহার সারমক্ষম নিম্পেন্ন সংক্ষেপে লেখা গেল। মীমাংসকেরা বলেন যে, সম্প্রদায়াবিচ্ছেদে বেদকত্তা অসমীয্যমান। সকল কথা লোকপরম্পরা সন্মত হইয়া আসিতেছে, কিন্তু কাহারও স্মরণ নাই যে, কেহ বেদ কারিয়াছেন। ইহাতে নৈয়ায়িকেরা। আপত্তি করেন যে, প্রলয়কালে সম্প্রদায় বিচ্ছিন্ন হইয়াছিল। এক্ষণে যে বেদ প্রণয়ন ROR