পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৪৭

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বঙ্গদেশের কৃষক তিন টাকা বিক্রয় করিয়া কিছ মনোফা করিল। অতএব বিদেশীয় বণিকেরা এদেশীয় গ্ৰী বিদেশে বিক্রয় করিয়া এ দেশের টাকা ঘরে লইয়া যাইতে পারিলেন না। বরং কিছ: য়া গেলেন । তবে ইহাই স্থির যে, তাঁহারা যদি কিছ এ দেশের টাকা ঘরে লইয়া যান, তবে সে দেশান্তরের জিনিস এ দেশে বিক্রয় করিয়া তাহার মনোফায়। বিলাতে চারি টাকার থান কিনিয়া এ দেশে ছয় টাকায় বিক্রয় করিলেন; ষে দই টাকা মনোফা হইল, তাহা এ দেশের লোকে দিল। সতরাং আপাততঃ বোধ হয় বটে যে, এ দেশের টাকাটা তাঁহাদের হাত দিয়া বিদেশে গেল। দেশের টাকা কামিল। এই ভ্ৰমটি কেবল এ দেশের লোকের নহে। ইউরোপের সকল দেশেই ইহাতে অনেক দিন পৰ্য্যন্ত লোকের মন আচ্ছন্ন ছিল, এবং তথায় কৃতবিদ্য ব্যক্তি ভিন্ন সাধারণ লোকের মন হইতে ইহা অদ্যাপি দরি হয় নাই। ইহার যথাৰ্থ তত্ত্ব এত দরহে যে, অলপকাল পন্বে মহামহোপাধ্যায় পন্ডিতেরাও তাহা বঝিতে পারিতেন না। রাজগণ ও রাজমন্ত্রিগণ এই ভ্ৰমে পতিত হইয়া, বিদেশের সামগ্ৰী সবদেশে যাহাতে না আসিতে পারে, তাহার উপায় অন্যাসন্ধান করিতেন। এবং সেই প্রবত্তির বশে বিদেশ হইতে আনীত সামগ্রীর উপর গরতর শািলক বসাইতেন। এই মহাভ্ৰমাত্মক সমাজনীতিসত্ৰ ইউরোপে (Protection) নাম প্রাপ্ত হইয়াছে। তদচ্ছেদপািব্বক আধনিক অনগাল বাণিজ্য-প্ৰণালী (Free Trade) সংস্থাপন করিয়া ব্রাইট ও কব ডেন চিরস্মরণীয় হইয়াছেন। ফ্রান্সে তাহা বিশেষরাপে বদ্ধমল করিয়া, তৃতীয় নাপোলিয়নও প্রতিস্ঠাভাজন হইয়াছেন। তথাপি এখনও ইউরোপে অনেকের এ ভ্ৰম দরি হয় নাই। আমাদের দেশের সাধারণ লোকের যে সে ভ্ৰম থাকিবে, তাহার আশচয্য কি ? Protection হইতে ইউরোপে কি আনিস্ট ঘটিয়াছিল, তাহা যিনি জানিতে ইচ্ছা করেন, তিনি বিকালের গ্রন্থ পাঠ করিবেন। যিনি তাহার অসত্যতা বঝিতে চাহেন, তিনি মিল পাঠ করিবেন। ঈদশ দরহে তত্ত্ব বঝাইবার স্থান, এই ক্ষ-দ্র প্রবন্ধের শেষভাগে হইতে পারে না। আমরা কেবল গোটাকতক দেশী কথা বলিয়া ক্ষান্ত হইব। আমরা ছয় টাকা দিয়া বিলাতি থােন কিনিলাম। টাকা ছয়টি কি আমনি দিলাম, অমনি দিলাম না।--তাহার পরিবত্তে একটি সামগ্রী পাইলাম। সেই সামগ্ৰীটি যদি আমরা উচিত মল্যের উপর একটি পয়সা বেশী দাম দিয়া লইয়া থাকি, তবে সেই পয়সাটি আমাদের ক্ষতি। কিন্তু যদি একটি পয়সাও বেশী না দিয়া থাকি, তবে আমাদের কোন ক্ষতি নাই। এক্ষণে বিবেচনা করিয়া দেখান, ছয় টাকার থানটি কিনিয়া একটি পয়সাও বেশী মল্য দিয়াছি কি না। দেখা যাইতেছে যে, ছয় টাকার এক পয়সা কমে সে থান আমরা কোথাও পাই না, পাইলে তাহা সাধারণ লোকে ছয় টাকায় কেন কিনিবে ? যদি ছয় টাকার এক পয়সা কমে ঐ থান কোথাও পাই না, তবে ঐ মাল্য অন্যচিত নহে। যে ছয় টাকায় থােন কিনিল, সে উচিত মল্যেই কিনিল। যদি উচিত মল্যে সামগ্ৰীটি কেনা হইল, তবে ক্ৰেতাদিগের ক্ষতি কি ? কি প্রকারে তাহাদিগের টাকা অপহরণ করিয়া বিদেশীয় বণিক বিদেশে পলায়ন করিল ? তাহারা দই টাকা মনোফা BDDBD DBDS D BBB BD DDD BDBDD DDB DDS BB DS ukB BBD DBBB S যদি কাহারও ক্ষতি না করিয়া মনাফা করিয়া থাকে, তবে তাহাতে আমাদের অনিন্ট কি ? যেখানে কাহারও ক্ষতি নাই, সেখানে দেশের অনিশট কি ? আপত্তির মীমাংসা এখনও হয় নাই। আপত্তিকারকেরা বলিবেন যে, ঐ ছয়টি টাকায় দেশী তাঁতির কাছে থান কিনিলে টাকা ছয়টা দেশে থাকিত। ভালই। কিন্তু দেশী তাঁতির কাছে থান কই ? সে যদি থান বানিতে পারিত, ঐ মল্যে ঐরােপ থান দিতে পারিত, তবে আমরা তাহারই কাছে থান কিনিতাম--বিদেশীর কাছে কিনিতাম না। কেন না, বিদেশীও আমাদের কাছে থান লইয়া বেচিতে আসিত না। কারণ, দেশীয় বিক্রেতা যেখানে সমান দরে বেচিতেছে, সেখানে তাহার লভ্য হইত না। এ কথাটি -- মুহািজর আর একটি দৰে বাধ্য নিয়মের উপর নিভাির করে, তাহা এক্ষণে থাক। স্থল কথা, ঐ ছয় টাকা যে দেশী তাঁতি পাইল না, তাহাতে কাহারও ক্ষতি নাই। ক্ৰেতাদিগের যে ক্ষতি নাই, তাহা দেখিয়াছি। দেশী তাঁতিরও ক্ষতি নাই। সে থান বনে না, কিন্তু অন্য কাপড় বনিতেছে। বে সময়ে ঐ ছয় টাকার জন্য থান বনিত, সে সময়ে সে অন্য কাপড় বানিতেছে। সে কাপড় সকলই বিক্রয় হইতেছে । অতএব তাহার যে উপাতজনি হইবার, তাহা হইতেছে। থান বানিয়া সে আর অধিক উপাখািজন করিতে (9*S*)