পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s কথার এমত উদ্দেশ্য নহে যে, সকল অবস্থার সকল মনীষাই, সকল অবস্থার সকল মনষ্যের সঙ্গে সমান। নৈসৰ্গিক তারতম্য আছে; কেহ দৰবািল, কেহ বলিষ্ঠ; কেহ বন্ধিমান, কেহ বদ্ধিহীন। নৈসৰ্গিক তারতম্যে সামাজিক তারতম্য অবশ্য ঘটিবে; যে বদ্ধিমান এবং বলিষ্ঠ, সে আজ্ঞাদাতা; ষে বদ্ধিহীন এবং দক্ষিবল, সে আজ্ঞাকারী অবশ্য হইবে। রসোও এ কথা স্বীকার করিয়াছেন। কিন্তু সাম্যতত্ত্বের তাৎপৰ্য্য এই যে, সামাজিক বৈষম্য, নৈসৰ্গিক বৈষম্যের ফল, তাহার অতিরিক্ত বৈষম্য ন্যায়বিরাদ্ধ, এবং মনষ্যেজাতির অনিষ্টকর। যে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে, তাহার অনেকগালি এইরপে অপ্রাকৃত বৈষম্যের কারণ। সেই ব্যবস্থাগালির সংশোধন না হইলে, মনষ্যজাতির প্রকৃত উন্নতি নাই। মিল এক স্থানে বলিয়াছেন, এক্ষণকার যত সব্যবস্থা, তাহা পৰস্বতন কুব্যবহারসংশোধক মাত্র। ইহা সত্য কথা। কিন্তু সম্পণে সংশোধন কালসাপেক্ষ। তাই বলিয়া কেহ না মনে করেন যে, আমি জন্মগণে বড় লোক হইয়াছি, অন্যে জন্মগণে ছোট লোক হইয়াছে। তুমি যে উচ্চ কুলে জন্মিয়াছ, সে তোমার কোন গণে নহে; অন্য যে নীচ কুলে জন্মিয়াছে, সে তাহার দোষে নহে। অতএব পথিবীর সখে তোমার যে অধিকার, নীচকুলোৎপর্ষেরও সেই অধিকার। তাহার সখের বিঘ্যকারী হইও না; মনে থাকে যেন যে, সেও তোমার ভাই-তোমার সমকক্ষ। যিনি ন্যায়বিরাদ্ধ আইনের দোষে পিতৃসম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন বলিয়া, দোন্দৰ্পডে প্রচন্ড প্রতাপান্বিত মহারাজাধিরাজ প্রভৃতি উপাধি ধারণ করেন, তাঁহারও যেন স্মরণ থাকে যে, বঙ্গদেশের কৃষক পরাণ মন্ডল তাঁহার সমকক্ষ, এবং তাঁহার ভ্রাতা। জন্ম, দোষগণের অধীন নহে। তাহার অন্য কুনুলু নাই। যে সম্পত্তি তিনি একা ভোগ করিতেছেন, পরাণ মন্ডলও তাহার ন্যায়সঙ্গত তৃতীয় পরিচ্ছেদ আমরা যদি পরাণ মন্ডলের কথা পাড়িলাম, তবে তাহার দঃখের পরিচয় কিশ্চিৎ সবিস্তারে না দিয়া থাকিতে পারি না। জমীদারের ঐশ্বয্য সকলেই জানেন, কিন্তু যাঁহারা সম্পবাদপত্র সবিশেষ অবগত নহেন। সাম্যতত্ত্ব বাবাইতে গিয়া সে বৈষম্য না দেখাইলে কথা অসম্পণে থাকিয়া যায়। যে বসন্ধরা কাহারও নহে, তাহা ভূম্যধিকারিবগ বণ্টন করিয়া লওয়াতে কি ফল ফলিতেছে, তাহা কিছ বলিতে হইল। যতক্ষণ জমীদার বাব সাড়ে সাত মহল পরীর মধ্যে রঙ্গিল সাসীপ্রেরিত য়িন্ধালোকে সন্ত্রী কন্যার গৌরকান্তির উপর হীরকন্দামের শোভা নিরীক্ষণ করিতেছেন, ততক্ষণ পরাণ মন্ডল, পত্রসহিত দই প্রহরের রৌদ্রে, খালি মাথায়, খালি পায়, এক হাঁট কাদার উপর দিয়া দইটা অস্থিচমবশিস্ট বলদে ভোঁতা হলে তাঁহার ভোগের জন্য চাষকম্পম নিৰবাহ করিতেছে। নিবারণ জন্য অঞ্জলি করিয়া মাঠের কদম পান করিতেছে; ক্ষধায় প্ৰাণ যাইতেছে, কিন্তু এখন বাড়ী গিয়া আহার করা হইবে না, এই চাষের সময়। সন্ধ্যাবেলা গিয়া উহারা ভাঙ্গা পাতারে রাঙ্গা রাঙ্গা বড় বড় ভাত, লণ, লঙ্কা দিয়া আধাপেটা খাইবে। তাহার পর ছোড়া মাদরে, না হয়, ভূমে, গোেহালের এক পাশে শয়ন করিবে-উহাদের মশা লাগে না। তাহার পরদিন প্রাতে আবার সেই একহাঁট কাদায় কাজ করিতে যাইবে-যাইবার সময়, হয় জমীদার, নয় মহাজন, পথ হইতে ধরিয়া লইয়া গিয়া দেনার জন্য বসাইয়া রাখিবে, কাজ হইবে না। নয়ত, চাষিবার সময় জমীদার জমীখানি কাড়িয়া লইবে, তাহা হইলে সে বৎসর কি করিবে ? উপবাস-সপরিবারে উপবাস! পৌষ মাসে ধান কাটিয়াই কৃষকে পৌষের কিস্তি খাজনা দিল। কেহ কিস্তি পরিশোধ DDDDYBBB DBDD DDD S DDB BB DDS DBDDDDBDS BBD DDBS DBBBDBLB DBD লাইয়া গিয়া, বিক্রয় করিয়া, কৃষক সবৎসরের খাজনা পরিশোধ করিতে চৈত্র মাসে জমীদারের কাছারিতে আসিল। পরাণ মন্ডলের পৌষের কিস্তি পাঁচ টাকা, চারি টাকা দিয়াছে, এক টাকা বাকি আছে। আর চৈত্রের কিস্তি তিন টাকা। মোটে চারি টাকা সে দিতে আসিয়াছে। গোমস্তা হিসাব করিতে বসিলেন। হিসাব করিয়া বলিলেন, “তোমার পৌষের কিস্তির তিন টাকা বাকি ○bf為