পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিজ::"}, পাৰল। আমাদের কোন প্রয়োজনই নাই।-কেন না, কথাটাই অমলক। যদি মৌলিক কথা হয়, তবে ভাগবতকার, এ কথা যে ভাবে বলিয়াছেন, তাহা বড় মনোহর। ভাগবতকার বলিয়াছেন যে, ননী মাখন ভগবান নিজের জন্য বড় চুরি করিতেন না; বানর দিগকে খাওয়াইতেন। বানর দিগকে খাওয়াইতে না পাইলে শাইয়া পড়িয়া কাঁদিতেন । ভাগবতকার বলিতে পারেন যে, কৃষ্ণ সব্বভুতে সমদশী; গোপীরা যথেস্ট ক্ষীর নবনীত খায়,- বানরেরা পায় না, এজন্য গোপীদিগের লইয়া বানর দিগকে দেন। তিনি সব্বভূতের ঈশ্বর, গোপী ও বানর তাঁহার নিকট ননী মাখনের তুল্যাধিকারী। এই শিশ, সব্বজনের জন্য সহৃদয়তাপরবশ, সব্বজনের দঃখমোচনে উদ্যক্ত। তিৰ্য্যক জাতি বানরীদিগের জন্য তাঁহার কাতরতার এই পরিচয় দিয়াছেন। আর একটি দঃখিনী gৈgর কথা বলিয়াছেন। কৃষ্ণের নিকট সে ফল লইয়া আসিলে কৃষ্ণ অঞ্জলি ভরিয়া তাহাকে রত্ন দিলেন। কথাগালির ভাগবত ব্যতীত প্রমাণ কিছ নাই; কিন্তু আমরা পরে দেখিব, পরহিতই কৃষ্ণের জীবনের ব্ৰত। ৭ । যমলাডিজ নভঙ্গ। একদা কৃষ্ণ বড় “দর্যন্তপনা” করিয়াছিলেন বলিয়া, যশোদা তাঁহার পেটে দড়ি বধিয়া, একটা উদখলে বধিয়া রাখিলেন। কৃষ্ণ উদখল টানিয়া লইয়া চলিলেন। যমলাজন নামে দইটা গাছ ছিল। কৃষ্ণ তাহার মধ্য দিয়া চলিলেন। উদখল, গাছের মলে বাধিয়া গেল। কৃষ্ণ তথাপি চলিলেন। গাছ দইটা ভাঙ্গিয়া গেল। এ কথা বিষ্ণপরিাণে এবং মহাভারতের শিশপালের তিরস্কারবাক্যে আছে। কিন্তু ব্যাপারটা কি ? অর্জন বলে কুরচি, গাছকে; যমলাভজন অথে জোড়া কুরচি, গাছ। কুরচি, গাছ সচরাচর বড় হয় না, এবং অনেক গাছ ছোট দেখা যায়। যদি চারাগাছ হয়, তাহা হইলে বলবান শিশাের বলে ঐরােপ অবস্থায় তাহা ভাঙ্গিয়া যাইতে পারে। কিন্তু ভাগবতকার পর্বপ্রচলিত কথার উপর, অতিরঞ্জন চেন্টা করিতে স্নটি করেন নাই। গাছ দাইটি কুবেরপত্র; শাপনিবন্ধন গাছ হইয়াছিল, কৃষ্ণস্পশে মক্ত হইয়া সাবধামে গমন করিল। কৃষ্ণকে বন্ধন করিবার কালে গোকুলে যত দড়ি ছিল, সব যোড়া দিয়াও কচি ছেলের পেট বাঁধা গেল না। শেষে কৃষ্ণ দয়া করিয়া বাঁধা দিলেন। বিষ্ণর একটি নাম দামোদর। বহিরিান্দ্ৰিয়নিগ্রহকে দম বলে। উদা উপর, ঋ গমনে, এজন্য উদর-অর্থে উৎকৃভাট গতি। দামের দ্বারা যিনি উচ্চস্থান পাইয়াছেন, তিনিই দামোদর। বেদে আছে, বিষ্ণ, তপস্যা করিয়া বিষ্ণত্ব লাভ করিয়াছেন, নহিলে তিনি ইন্দ্রের কনিষ্ঠ মাত্র। শঙ্করাচাৰ্য্য দামোদর শব্দের এই অর্থ গ্রহণ করিয়াছেন। তিনি বলেন, “দমাদিসাধনেন। উদরা উৎকৃষ্টা গতি যা তয়া গম্যত ইতি দামোদরঃ”। মহাভারতেও আছে, “দমান্দামোদরং বিদঃ ।” কিন্তু দমন শব্দে গোেরর দড়িও বাবায়। যাহার উদর গোেরর দাঁড়িতে বাঁধা হইয়াছিল, সেও দামোদর। গোেরর দড়ির কথাটা উঠিবার আগে দামোদর নামটা প্রচলিত ছিল। নামটি পাইয়া ভাগবতকার দাঁড়ি বাঁধার উপন্যাসটি গড়িয়াছেন, এই বোধ হয় না কি ? এক্ষণে নন্দাদি গোপগণ পািব্ববাসস্থান পরিত্যাগ করিয়া বান্দাবনে চলিলেন। কৃষ্ণ নানাবিধ বিপদে পড়িয়াছিলেন, এইরপ বিবেচনা করিয়াই তাঁহারা বান্দাবন গেলেন, এইরূপ পরাণে লিখিত আছে। বান্দাবন অধিকতর সখের স্থান, এজন্যও হইতে পারে। হরিবংশে পাওয়া যায়, এই সময়ে ঘোষনিবাসে বড় বকের ভয় হইয়াছিল। গোপেরা তাই সেই স্থান ত্যাগ করিয়া গেল। চতুৰ্থ পরিচ্ছেদ-কৈশোর লীলা এই বান্দাবন কাব্যজগতে অতুল্য সন্টি। হরিৎপাপশোভিত পলিনশালিনী কালনাদিনী কালিন্দীকালে কোকিল-ময়ার-ধবনিক-কুঞ্জবনপরিপািণ, গোপবালকগণের শঙ্গকেণর মধ্যর সমলণ্ডকৃতা বন্দোবনস্থলী, প্ৰমাতিমাত্র হৃদয় উৎফল্প হয়। কিন্তু কাব্যরস আক্ৰবাদন জন্য কালবিলম্পািব করিবার আমাদের সময় নাই। আমরা আরও গরতের তত্ত্বের অন্বেষণে নিযক্ত। ভাগবতকার বলেন, বান্দাবনে আসার পর কৃষ্ণ ক্রমশঃ তিনটি অসাের বধ করিলেন,--(১) কংসাসার, (২) বকাসর, (৩) অঘাসয়। প্রথমটি বৎসরূপী, দ্বিতীয়টি পক্ষিয়পী, তৃতীয়টি SO