পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবতত্ত্ব ও হিন্দধৰ্ম্ম-ইঞ্জি छेन् এখন আমরা কতক কতক জানিয়াছি, ঋগ্বেদে কোন কোন দেবতার উপাসনা আছে। আকাশ দেবতা, সায্য দেবতা, এ সকল কথা এখন ছাড়িয়া দিই। যদি প্রয়োজন বিবেচনা করি, তবে সে কথার সবিশেষ আলোচনা পশচাৎ করা যাইবে । এখন, ইন্দ্রাদির কথা বলি। এই ইন্দ্রাদি কে ? ইন্দ্র বলিয়া যে এক জন দেবতা আছেন, কি বিষ্ণু বলিয়া দেবতা এক জন আছেন, ইহা আমরা কেমন করিয়া জানিলাম ? কোন মনষ্যে কি তাঁহাদের দেখিয়া আসিয়াছে ? তাঁহাদের অস্তিত্বের প্রমাণ কি ? ইহার উত্তরে অনেক পাকা হিন্দ বললেন যে, “হাঁ অনেকেই তাঁহাদিগকে দেখিয়া আসিয়াছে। সেকালে ঋষিরা সব্বদাই সবগে যাইতেন এবং ইন্দ্রাদি দেবতার সঙ্গে আলাপ করিয়া আসিতেন। এবং তাঁহারাও সব্বদা পথিবীতে আসিয়া মনষ্যদিগের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করিতেন। এ সকল কথা পরাণ ইতিহাসে আছে।” বোধ হয়, আমাদিগকে এ সকল কথার উত্তর দিতে হইবে না। কেন না, আমাদিগের অধিকাংশ পাঠকই এ সকল কথায় শ্রদ্ধাষিক্ত নহেন। তবে এ সম্পবন্ধে একটা কথা না বলিয়া থাকা যায় না। পরাণেতিহাসে যে ইন্দ্রাদি দেবতার বণনা আছে, যাঁহাদিগের সহিত রাজােষরা এবং মহাষিরা সাক্ষাৎ করিতে যাইতেন এবং যাঁহারা পথিবীতে আসিয়া সশরীরে লীলা করিতেন, তাঁহাদিগের চরিত্র বড় চমৎকার। কেহ গরতলপগামী, কেহ চৌর, কেহ বাঙ্গালি বাবদিগের ন্যায় ইন্দ্ৰিয়াপরবশ কেহ লোভী - সকলেই মহাপাপিষ্ঠ, সকলেই দৰবািল, কখন অসাের কত্ত্বক তাড়িত, কখন রাক্ষস কর্তৃক দাসত্বশািণ্ডখলে বদ্ধ, যখন মানব কত্ত্বক পরাজিত, কখন দৰাবাসা প্রভৃতি মানবদিগের অভিশাপে বিপদগ্ৰস্ত, সব্বদা ব্ৰহ্মা বিষ্ণ, মহেশ্বরের শরণাপন্ন। এই কি দেব-চরিত্র ? ইহার সঙ্গে এবং নিকৃষ্ট মনষ্যে-চরিত্রের সঙ্গে প্রভেদ কি ? এই সকল দেবতার উপাসনায় মহাপাপ এবং চিত্তের অবনতি ভিন্ন আর কিছই হইতে পারে না। যদি এ সকল দেবতার উপাসনা হিন্দধৰ্ম্মম হয়, তবে হিন্দধমের পানডজীবন নিশ্চিত বাঞ্ছনীয় নহে। বাস্তবিক হিন্দধমের প্রকৃত তাৎপৰ্য্য। এরপ নহে। ইহার ভিতর একটা গঢ় তাৎপৰ্য্য আছে; তাহা পরম রমণীয় এবং মনষ্যের উন্নতিকর। সেই কথাটি ক্রমে পরিস্ফাট করিব বলিয়া আমরা এই সকল প্ৰবন্ধগলি লিখিতেছি। সেই কথা বঝিবার জন্য আগে বোঝা চাই, এই সকল দেবতা কোথা হইতে পাইলাম। অনেকে বলিবেন, বেদেই পাইয়াছি। কিন্তু জিজ্ঞাস্য এই যে, বেদেই বা তাঁহারা কোথা হইতে আসিলেন ? বেদ-প্রণেতারা তাঁহাদিগকে কোথা হইতে জানিলেন ? পাকা হিন্দীদিগের মধ্যে অনেকে বলিবেন, কেন বেদ ত আপৌরষেয়! বেদও চিরকাল আছেন, দেবতারাও চিরকাল আছেন, সতরাং তাঁহারাও বেদে আছেন। অপর কেহ বলিবেন, বেদ ঈশ্বর-প্রণীত, ঈশ্বর সব্বজ্ঞ, কাজেই বেদে ইন্দ্রাদি দেবগণের কথা থাকা কিছই আশ্চৰ্য্য নহে। এরপ পাকা হিন্দর সঙ্গে বিচার করা আমাদের উদ্দেশ্য নহে। আমরা বলিয়াছি যে, বেদ যে ঋষি-প্রণীত অর্থাৎ মনষ্য-রচিত, এ কথা বেদেই পানঃপনাঃ উক্ত হইয়াছে। এ কথায় যাঁহারা বঝিবেন না। তাঁহাদিগকে বঝাইবার আর উপায় নাই। বেদ যদি ঋষি-প্রণীত হইল, তবে বিচােয্য এই যে, ঋষিরা ইন্দ্রাদিকে কোথা হইতে পাইলেন। তাঁহারা ত বলেন না যে, আমরা ইন্দ্রাদিকে দেখিয়াছি। সে কথা পরাণ ইতিহাসে থাকুক, ঋগ্বেদে নাই। অথচ তাঁহারা ইন্দ্রাদির রােপ ও গণ সবিস্তারে বর্ণনা করিয়াছেন। খবর পৌঁছিল। কোথা হইতে ? ইন্দ্ৰাদি কি, এ কথাটা বঝিলেই সে কথাটা বোঝা যাইবে। এবং আরও অনেক কথা বোঝা যাইবে । এই ইন্দ্রকেই উদাহরণস্বরপ গ্রহণ করা যাউক। ইহার ইন্দ্ৰ নাম হইল কোথা হইতে ? কে নাম রাখিল ? মনষ্যে না তাঁর বাপ মায়ে ? “তাঁর বাপ মায়ে,” এমন কথা বলিতেছি। তাহার কারণ এই যে, তাঁহার বাপ মা আছেন, এ কথা ঋগোস্বদে আছে। তবে তাঁর বাপ মা কে, সে বিষয়ে ঋগোিবদে বড় গোলযোগী। ঋগোিবদে অনেক রকম বাপ মার কথা আছে। ঋগ্ৰেবেদে এক স্থানে মাত্র তিনি আদিত্য বলিয়া আখ্যাত হইয়াছেন। কিন্তু শেষ পৌরাণিক তত্ত্ব এই দাঁড়াইয়াছে যে, €a bዖCh