পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

प्रदशभनन्मिनी অঙ্গরীয়বাহক তিলোত্তমাকে গহমধ্যে প্রবেশ করিতে আঁনিচ্ছকে দেখিয়া কহিল, “এ कि ? আপনি এখানে বিলম্পব করেন কেন ?” তথাপি তিলোত্তমার পা উঠিল না। প্রহরী পনেকবার কহিল, “না যান, তবে প্রত্যাগমন করুন। এ দাঁড়াইবার স্থান নহে ।” তিলোত্তমা প্রত্যাগমন করিতে উদ্যত হইলেন। আবার সেদিকেও পা সরে না। কি করেন! প্রহরী ব্যস্ত হইল। ভাবিতে ভাবিতে আপনার অজ্ঞাতসারে তিলোত্তমা এক পা অগ্রসর হইলেন । তিলোত্তম কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিলেন। কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিয়া রাজপত্রের দশনমাত্র আবার তিলোত্তমার গতিশক্তি রহিত হইল, আবার দাবারপাশে বা প্রাচীর অবলম্বনে অধোমখে দাঁড়াইলেন। রাজপত্র প্রথমে তিলোত্তমাকে চিনিতে পারিলেন না। সত্ৰীলোক দেখিয়া বিসিমত হইলেন । রমণী প্রাচীর ধরিয়া অধোমখে দাঁড়াইল, নিকটে আইসে না দেখিয়া আরও বিস্ময়াপন্ন হইলেন। শয্যা হইতে গাত্ৰোখান করিয়া দবারের নিকটে আসিলেন। নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন, চিনিতে পারিলেন। তিলাদ্ধা জন্য নয়নে নয়নে মিলিত হইল। তৎক্ষণাৎ তিলোত্তমার চক্ষ আমনই পথিবীপানে নামিল; কিন্তু, শরীর ঈষৎ সম্মখে হেলিল, যেন রাজপত্রের চরণতলে পতিত হইবেন। রাজপত্র কিঞ্চিৎ পশ্চাৎ সরিয়া দাঁড়াইলেন ; আমনই তিলোত্তমার দেহ মন্ত্রমাগধবৎ সস্তম্ভিত হইয়া স্থির রহিল। ক্ষণপ্ৰস্ফটিত হৃৎপদ্ম সঙ্গে সঙ্গে শাকাইয়া উঠিল। রাজপত্র কথা কহিলেন, “বীরেন্দ্ৰসিংহের কন্যা ?” তিলোত্তমার হৃদয়ে শেল বিন্ধিল । “বীরেন্দ্ৰসিংহের কন্যা ?” এখনকার কি এই সম্বোধন ? জগৎ সিংহ কি তিলোত্তমার নামও ভুলিয়া গিয়াছেন ? উভয়েই ক্ষণেক নীরব হইয়া রহিলেন ? পােনকবার রাজপত্ৰ কহিলেন, “এখানে কি অভিপ্ৰায়ে ?” “এখানে কি অভিপ্ৰায়ে!” কি প্রশান! তিলোত্তমার মস্তক ঘারিতে লাগিল; চারিদিকে কক্ষ, শয্যা, প্রদীপ, প্রাচীর সকলেই যেন ঘরিয়া বেড়াইতে লাগিল; অবলম্বনাথ প্রাচীরে মস্তক দিয়া দাঁড়াইলেন। রাজপত্র অনেকক্ষণ প্রত্যুত্তর প্রত্যাশায় দাঁড়াইয়া রহিলেন ; কে প্রত্যুত্তর দিবে ? প্রত্যুত্তরের সম্ভাবনা না দেখিয়া কহিলেন, “তুমি যন্ত্রণা পাইতেছ, ফিরিয়া যাও, পািকব কথা বিস্মত হও।” তিলোত্তমার আর ভ্রম রহিল না, অকস্মাৎ বাক্ষচু্যত বল্লীবৎ ভূতলে পতিত হইলেন। চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ঃ মোহ জগৎ সিংহ আনত হইয়া দেখিলেন, তিলোত্তমার সপন্দ নাই। নিজ বস্ত্ৰ দবারা ব্যজন করিতে লাগিলেন, তথাপি তাঁহার কোন সংজ্ঞাচিহ্ন না দেখিয়া প্রহরীকে ডাকিলেন। তিলোত্তমার সঙগী তাহার নিকটে আসিল । জগৎ সিংহ তাঁহাকে কহিলেন, “ইনি অকস্মাৎ মচ্ছি তা হইয়াছেন। কে ইহার সঙ্গে আসিয়াছে। তাহাকে আসিয়া শশ্রষা করিতে বল।” প্রহরী কহিল, “কেবল আমিই সঙ্গে আসিয়াছি।” রাজপত্র বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিলেন, “তুমি ?” প্রহরী কহিল, “আর কেহ আইসে নাই।” “তবে কি উপায় হইবে ? কোন পৌরদাসীকে সংবাদ কর।” প্রহরী চলিল। রাজপত্র আবার তাহাকে ডাকিয়া কহিলেন, “শোন, অপর কাহাকে সংবাদ দিলে গোলযোগ হইবে। আর আজ রাত্ৰে কেই বা প্রমোদ ত্যাগ করিয়া ইহার সাহায্যে আসিবে ?” প্রহরী কহিল, “সেও বটে। আর কাহাকেই বা প্রহরীরা কারাগারে প্রবেশ করিতে দিবে ? অন্য অন্য লোককে কারাগারে আনিতে আমার সাহস হয় না।” রাজপত্ৰ কহিলেন, “তবে কি করিব ? ইহার একমাত্র উপায় আছে; তুমি ঝটিতি দাসীর দবারা নবাবপত্রীর নিকট এ কথার সংবাদ কর।” প্রহরী দ্রুতবেগে তদভিপ্ৰায়ে চলিল। রাজপত্র সাধ্যমত তিলোত্তমার শাশ্রষা করিতে ܬܠ ܠ