পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী আয়েষার কথা শেষ হইতে না হইতেই রাজকুমার কহিলেন, “ও কথায় আর কাজ কি! সে সবপন্ন ভঙগ হইয়াছে।” আয়েষা নীরবে রহিলেন ; জগৎ সিংহও নীরবে রহিলেন, উভয়ে বহনক্ষণ নীরবে রহিলেন; আয়েষা তাঁহার উপর মাখ অবনত করিয়া রহিলেন । । রাজপত্র অকস্মাৎ শিহরিয়া উঠিলেন; তাঁহার করপল্লবে কবোষঃ বারিবিন্দ পড়িল। জগৎ সিংহ দটি নিমন করিয়া আয়েষার মািখপদ্ম নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন, আয়েষা কাঁদিতেছেন; উত্তজবল গণন্ডস্থলে দর দর ধারা বহিতেছে। রাজপত্র বিস্মিত হইয়া কহিলেন, “এ কি আয়েষা ? তুমি কাঁদিতেছ?” আয়েষা কোন উত্তর না করিয়া ধীরে ধীরে গোলাপ ফলটি নিঃশেষে ছিন্ন করিলেন। পাপ শত খন্ড হইলে কহিলেন, “যবরাজ ! আজি যে তোমার নিকট এভাবে বিদায় লাইব, তাহা মনে ছিল না। আমি অনেক সহ্য করিতে পারি, কিন্তু কারাগারে তোমাকে একাকী যে এ মনঃপীড়ার যন্ত্রণা ভোগ করিতে রাখিয়া যাইব, তাহা পারিতেছি না। জগৎ সিংহ! তুমি আমার সঙ্গে বাহিরে আইস ; অশাবশালায় অশািব আছে, দিব ; আদ্য রাত্রেই নিজ শিবিরে যাইও ।” তদন্ডে যদি ইস্টদেবী ভবানী সশরীরে আসিয়া বরপ্ৰদা হইতেন, তথাপি রাজপত্র অধিক চমৎকৃত হইতে পারিতেন না। রাজপত্র প্রথমে উত্তর করিতে পারিলেন না। আয়েষা পনেকবার কহিলেন, “জগৎসিংহ! রাজকুমার! এস।” জগৎসিংহ অনেকক্ষণ পরে কহিলেন, “আয়েষ্য! তুমি আমাকে কারাগার হইতে মন্ত করিয়া [দবে ? আয়েষা কহিলেন, “এই দন্ডে।” রা। তোমার পিতার অজ্ঞাতে ? আা। সে জন্য চিন্তা করিও না, তুমি শিবিরে গেলে—আমি তাঁহাকে জানাইব। আয়েষা কন্ঠ হইতে রত্নকন্ঠী ছিাড়িয়া দেখাইয়া কহিলেন, “এই পরস্কার লোভে প্রহরী পথ ছাড়িয়া দিবে।” রাজপত্র পনেকবার কহিলেন, “একথা প্রকাশ হইলে তুমি তোমার পিতার নিকট যন্ত্রণা পাইবে।” “जा6\ङ मृभर्गद्धरु कि ?' “আয়েষ্যা ! আমি যাইব না।” আয়েষার মািখ শতক হইল। ক্ষণ হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন ?” রা। তোমার নিকট প্রাণ পৰ্য্যন্ত পাইয়াছি, তোমার যাহাতে যন্ত্রণা হইবে, তাহা আমি কদাচি করিব না। আয়েষ্যা প্রায় রন্ধকন্ঠে কহিলেন, “নিশ্চিত যাইবে না ?” রাজকুমার কহিলেন, “তুমি একাকিনী যাও।” আয়েষ্যা পনেকবার নীরব হইয়া রহিলেন। আবার চক্ষে দর দর ধারা বিগলিত হইতে লাগিল; আয়েষা কন্টে অশ্র সংবরণ করিতে লাগিলেন। রাজপত্র আয়েষার নিঃশবদ রোদন দেখিয়া চমৎকৃত হইলেন। কহিলেন, “আয়েষা! রোদন করিতেছ। কেন ?” • আয়েষ্যা কথা কহিলেন না। রাজপত্র আবার কহিলেন, “আয়েষা! আমার অননুরোধ রােখ, রোদনের কারণ যদি প্রকাশ্য হয়, তবে আমার নিকট প্রকাশ কর। যদি আমার প্রাণদান করিলে তোমার নীরব রোদনের কারণ নির্যাকরণ হয়, তাহা আমি করিব। আমি যে বন্দিত্ব স্বীকার করিলাম, কেবল ইহাতেই কখনও আয়েষার চক্ষে জল আইসে নাই। তোমার পিতার কারাগারে আমার ন্যায় অনেক বন্দী কম্পট পাইয়াছে।” আয়েষা আশ রাজপত্রের কথায় উত্তর না করিয়া অশ্রািজল অঞ্চলে মছিলেন। ক্ষণেক নীরব নিসপন্দ থাকিয়া কহিলেন, “রাজপত্রে! আমি আর কাঁদিব না।” রাজপত্র প্রশেনর উত্তর না পাইয়া কিছ ক্ষগ্নি হইলেন। উভয়ে আবার নীরবে মাখ অবনত করিয়া রহিলেন । N R R