পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কপালকুণডলা তুমি বলিতেছ, এ ব্যক্তি ব্ৰাহ্মণসন্তান ; গলাতেও যজ্ঞোপবীত দেখিতেছি। এ যদি তোমাকে বিবাহ করিয়া লইয়া যায়, তবে সকল মণ্ডগল। নচেৎ আমিও তোমাকে ইহার সহিত যাইতে दक्लिऊ १ाद्धि ना ।” “বি-বা-হ!” এই কথাটি কপালকুন্ডলা অতি ধীরে ধীরে উচ্চারণ করিলেন। বলিতে লাগিলেন, “বিবাহের নাম ত তোমাদিগের মাখে শনিয়া থাকি, কিন্তু কাহাকে বলে সবিশেষ জানি না। কি করিতে হইবে ?” অধিকারী ঈষনিমাত্র হাস্য করিয়া কহিলেন, “বিবাহ সত্ৰীলোকের একমাত্র ধমের সোপান ; এই জন্য সত্ৰীকে সহধৰ্ম্মিমণী বলে; জগন্মাতাও শিবের বিবাহিতা।” অধিকারী মনে করিলেন, সকলই বঝাইলেন। কপালকুন্ডলা মনে করিলেন, সকলই বঝিলেন। বলিলেন, “তাহাই হউক। কিন্তু তাঁহাকে ত্যাগ করিয়া যাইতে আমার মন সরিতেছে না। তিনি যে আমাকে এতদিন প্রতিপালন করিয়াছেন।” অধি। কি জন্য প্রতিপালন করিয়াছেন, তাহা জান না। এই বলিয়া অধিকারী তান্ত্ৰিক সাধনে সত্ৰীলোকের যে সম্প্ৰবন্ধ, তাহা অসৎপন্ডটি রকম কপােলকুন্ডলাকে বঝাইবার চেষটা করিলেন। কপালকুন্ডলা তাহা কিছ: বঝিল না, কিন্তু তাহার বড় ভয় হইল। বলিল, “তবে বিবাহই হউক।” এই বলিয়া উভয়ে মন্দির হইতে বহি গতি হইলেন। এক কক্ষমধ্যে কপালকুণডলাকে বসাইয়া, অধিকারী, নবকুমারের শয্যাসন্নিধানে গিয়া তাঁহার শিওরে বসিলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহাশয়! নিদ্রিত কি ?” নবকুমারের নিদ্রা যাইবার অবস্থা নহে; নিজদশা ভাবিতেছিলেন। বলিলেন, “আজ্ঞে না।” অধিকারী কহিলেন, “মহাশয় ! পরিচয়টা লইতে একবার আসিলাম, আপনি ব্রাহ্মণ ?” নব। আজ্ঞা হাঁ । অধি। কোন শ্রেণী ? নবী। রাঢ়ীয় শ্রেণী । অধি। আমরাও রাঢ়ীয় ব্রাহ্মণ—উৎকল ব্রাহ্মণ বিবেচনা করিবেন না। বংশে কুলাচাৰ্য্য, তবে এক্ষণে মায়ের পদাশ্রয়ে আছি । মহাশয়ের নাম ? নব । নবকুমার শম্পমা। অধি। নিবাস ? নব । সপতগ্ৰাম । অধি। আপনারা কোন গাই ? নব। বন্দ্যঘাটী । অধি। কয় সংসার করিয়াছেন ? «N<! (ԳՀԻ ծiՀծ||Հ e||g | নবকুমার সকল কথা খালিয়া বলিলেন না। প্রকৃতপক্ষে তাঁহার এক সংসারও ছিল না। তিনি রামগোবিন্দ ঘোষালের কন্যা পদ্মাবতীকে বিবাহ করিয়াছিলেন। বিবাহের পর পদমাবতী কিছ দিন পিত্ৰালয়ে রহিলেন। মধ্যে মধ্যে শবেশরালয়ে যাতায়াত করিতেন। যখন তাঁহার বয়স ত্রয়োদশ বৎসর, তখন তাঁহার পিতা সপরিবারে পরিষোত্তম দশনে গিয়াছিলেন। এই সময়ে পাঠানেরা আকবর শাহ কর্তৃক বঙ্গদেশ হইতে দারীভূত হইয়া উড়িষ্যায় সদলে বসতি করিতেছিল। তাহাদিগের দমনের জন্য আকবর শাহ বিধিমতে যত্ন পাইতে লাগলেন। যখন রামগোবিন্দ ঘোষাল উড়িষ্যা হইতে প্রত্যাগমন করেন, তখন মোগল-পাঠানের যন্ধ আরম্ভ হইয়াছে । আগমন কালে তিনি পথিমধ্যে পাঠানসেনার হস্তে পতিত হয়েন। পাঠানেরা তৎকালে ভদ্রাভদ্র বিচারশন্য, তাহারা নিরপরাধী পথিকের প্রতি অর্থের জন্য বলপ্রকাশের চেষটা করিতে লাগিল। রামগোবিন্দ কিছল উগ্রস্বভাব ; পাঠানদিগকে কট কহিতে লাগিলেন। ইহার ফল এই হইল যে, সপরিবারে অবরািন্ধ হইলেন; পরিশেষে জাতীয় ধৰ্ম্মম বিসজনপৰিবাক সপরিবারে মসলমান হইয়া নিম্প্রকৃতি পাইলেন। রামগোবিন্দ ঘোষাল সপরিবারে প্রাণ লইয়া বাটী আসিলেন বটে, কিন্তু মসলমান বলিয়া S8S