পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकोश ब्रष्नाबव्ी প্রাচীন ভূত্যেরা তাঁহাকে প্ৰণাম করিয়া গিয়া আপনা। আপনি রোদন করিল। নগেন্দ্ৰ কেবল একজনকে মনঃপীড়া দিলেন। চিরদঃখিনী কুন্দনন্দিনীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন না। চতুশচত্বারিংশত্তম পরিচ্ছেদ ঃ স্তিমিত প্ৰদীপে নগেন্দ্রনাথের আদেশমত পরিচারিকার সােয্যমখীর শয্যাগহে তাঁহার শয্যা প্ৰস্তুত করিয়াছিল। শনিয়া কমলমণি ঘােড় নাড়িলেন। নিশীথকাল পৌরজন সকলে সােষপত হইলে নগেন্দ্র সােয্যমখনীর শয্যাগহে শয়ন করিতে গেলেন। শয়ন করিতে না—রোদন করিতে। সােয্যমখনীর শয্যাগহে অতি প্রশস্ত এবং মনোহর; উহা নগেন্দ্রের সকল সখের মন্দির, এই জন্য তাহা যত্ন করিয়া প্রস্তুত করিয়াছিলেন। ঘরটি প্রশস্ত এবং উচ্চ, হৰ্ম্মমতল শেবতকৃষ্ণ মন্মরি-প্রস্তরে রচিত। কক্ষপ্রাচীরে নীল পিণ্ডগলি লোহিত লতা-পল্লব-ফল-পশুপাদি চিত্ৰিত ; তদনুপরি বসিয়া নানাবিধ ক্ষদ্র ক্ষদ্র বিহঙ্গমসকল ফল ভক্ষণ করিতেছে, লেখা আছে। একপাশে বহমাল্য দারনিশ্চিমত হস্তিদন্ত খচিত কার্যকাৰ্য্যবিশিস্ট পৰ্য্যাওক, আর এক পাশে বিচিত্র বস্ত্ৰমন্ডিত নানাবিধ কাঠাসন এবং বহদ্দীপণ প্রভৃতি গহসজজাব বস্তু বিস্তর ছিল। কয়খানি চিত্র কক্ষপ্রাচীর হইতে বিলম্পিবত ছিল। চিত্ৰগলি বিলাতী নহে। সযTমখনী নগেন্দ্র উভয়ে মিলিত হইয়া চিত্রের বিষয় মনোনীত করিয়া এক দেশী চিত্রকরের দবারা চিত্রিত করাইয়াছিলেন। দেশী চিত্রকর এক জন ইংরেজের শিষ্য; লিখিয়াছিল ভাল । নগেন্দ্র তাহা মহামল্য ফ্রেম দিয়া শয্যাগহে রাখিয়াছিলেন। একখানি চিত্ৰ কুমারসম্ভব হইতে নীতি। মহাদেব পৰ্ব্ববত শিখরে বেদির উপর বসিয়া তপশ্চরণ করিতেছেন। লতাগাহদ্বারে নন্দনী, বামপ্রকোঠাপিতহেমবেত্ৰ——মখে এক অঙ্গলি দিয়া কাননশবদ নিবারণ করিতেছেন। কানন স্থির —ভ্রমরেরা পাতার ভিতর লকোইযাছে। --ম্যাগেরা শয়ন করিয়া আছে। সেই কালে হরধ্যানভঙেগর জন্য মদনের অধিস্ঠিান। সঙ্গে সঙ্গে বসন্তের উদয়। অগ্ৰে বসন্তপশুপাভরণময়ী পাব্বিতী, মহাদেবকে প্ৰণাম করিতে আসিয়াছেন। উমা যখন শম্ভূসম্মখে প্ৰণােমজন্য নত হইতেছেন, এক জান, ভূমিসপেস্ট করিয়াছেন, আর এক জান ভূমিস্পর্শ করিতেছে, স্কন্ধসহিত মস্তক নমিত হইয়াছে, সেই অবস্থা চিত্রে চিত্রিতা। মস্তক নমিত হওয়াতে অলকবন্ধ হইতে দই একৃষ্টি কৰ্ণবিলম্বী কুরবাক কুসমে খসিয়া পড়িতেছে ; বক্ষ হইতে বসন ঈষৎ স্রস্ত হইতেছে, দরি হইতে মন্মথ সেই সময়ে, বসন্তপ্রফতুল্লবনমধ্যে অন্ধলঙ্কায়িত হইয়া এক জানি ভূমিতে রাখিয়া, চার ধন চক্লাকার করিয়া, পশুপধনতে পশুপােশর সংযোজিত করিতেছেন। আর এক চিত্রে শ্রীরাম জানকী লাইয়া লণ্ডকা হইতে ফিরিয়া আসিতেছেন; উভয়ে এক রত্নমন্ডিত বিমানে বসিয়া, শান্যমাগে চলিতেছেন। শ্রীরাম জানকীর সকন্ধে এক হস্ত রাখিয়া, আর এক হস্তের অঙ্গলির দবারা নিমেশন পথিবীর শোভা দেখাইতেছেন। বিমানচতুর্ভপাশে নানাবণের মেঘ,-নীল, লোহিত, শেবত,- ধমতরঙেগাৎক্ষেপ করিয়া বেড়াইতেছে। নিম্নে আবার বিশাল নীল সমদ্রে তরঙ্গভঙ্গ হইতেছে —সােয্যকারে তরঙ্গসকল হীরক রাশির মত জলিতেছে। এক পারে অতিন্দরে “সৌধকিরীটিনী লঙকা—” তাহার প্রাসাদবলীর সবর্ণমন্ডিত চড়াসকল সােয্যকারে জনলিতেছে। অপর পারে শ্যামশোভাময়ী “তমালতালনীবনরাজিনীলা” সমদ্রবেলা। মধ্যে শকুন্যে হংসশ্রেণীসকল উড়িয়া যাইতেছে। আর এক চিত্রে, অজ্ঞজনে সভদ্রাকে হরণ করিয়া রথে তুলিয়াছেন। রথ শান্যপথে মেঘমধ্যে পথ করিয়া চলিয়াছে; পশ্চাৎ অগণিত যাদবী সেনা ধাবিত হইতেছে, দরে তাহাদিগের পতাকাশ্রেণী এবং রাজ্যোজনিত মেঘ দেখা যাইতেছে। সভদ্ৰা স্বয়ং সারথি হইয়া, রথ চালাইতেছেন। অশোবরী মখামখি করিয়া, পদক্ষেপে মেঘসকল চৰণ করিতেছে ; সভদ্ৰা আপন সারথনৈপণ্যে প্রীতা হইয়া মািখ ফিরাইয়া অজ্ঞজনের প্রতি বকুদস্টি করিতেছেন; কুন্দদন্তে আপন অধর দংশন করিয়া টিপি টিপি হাসিতেছেন ; রথবেগজনিত পবনে তাঁহার অলক সকল উড়িতেছে—দই এক গচ্ছ কেশ সেবাদবিজড়িত হইয়া কপালে চক্রাকারে লিপিত হইয়া রহিয়াছে। আর একখানি চিত্রে, সাগরিক বেশে রত্নাবলী, পরিৎকার নক্ষত্ৰলোকে বালতিমালতলে, উদবন্ধনে প্রাণত্যাগ করিতে যাইতেছেন। তমালশাখা হইতে একটি উত্তজবল পশুপাময়ী লতা বিলম্পিবত হইয়াছে, রত্নাবলী এক হস্তে সেই লতার অগ্রভাগ লইয়া গলদেশে পরাইতেছেন, আর এক হস্তে চক্ষের জল মাছিতেছেন, লতাপািশপ সকল তাঁহার কেশদামের উপর অপব্ব শোভা করিয়া Ꮼ Ꮼ Ꮪ>