পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दूश्काल्डद्ध छेद्देव्न গো। তুমি যাহা পোড়াইয়াছ, তাহা কি ? রো। জাল উইল । গো। কোথায় পাইয়াছিলে ? রো। কত্তার ঘরে, দেরাজে। গো । জাল উইল সেখানে কি প্রকারে আসিল ? রো। আমিই রাখিয়া গিয়াছিলাম। যে দিন আসল উইল লেখাপড়া হয়, সেই দিন রাত্রে আসিয়া, আসল উইল চুরি করিয়া, জাল উইল রাখিয়া গিয়াছিলাম। গো । কেন, তোমার কি প্রয়োজন ? রো। হরলাল বাবর অন্যুরোধে । 'গোবিন্দলাল বলিলেন, “তবে কাল রাত্রে আবার কি করিতে আসিয়াছিলে ? “ রো। আসল উইল রাখিয়া, জাল উইল চুরি করিবার জন্য । গো। কেন ? জাল উইলে কি ছিল ? রো। বড় বাবার বার আনা—আপনার এক পাই । গো। কেন আবার উইল বদলাইতে আসিয়াছিলে ? আমি ত কোন অন্যুরোধ করি নাই। রোহিণী কাঁদিতে লাগিল। বহ কন্টে রোদন সংবরণ করিয়া বলিল, “না—অন্যুরোধ করেন নাই—কিন্তু যাহা আমি ইহ জন্মে কখনও পাই নাই—যাহা ইহজন্মে। আর কখনও পাইব না— আপনি আমাকে তাহা দিয়াছিলেন।” গো । কি সে রোহিণি ? রো। সেই বারণী পাকুরের তীরে, মনে করন। গো। কি রোহিণি ? রো। কি ? ইহজন্মে। আমি বলিতে পারিব না।--কি। আর কিছর বালিবেন না। এ রোগের চিকিৎসা নাই—আমার মন্তি নাই। আমি বিষ পাইলে খাইতাম। কিন্তু সে আপনার বাড়ীতে নহে। আপনি আমার অন্য উপকার করিতে পারেন না— কিন্তু এক উপকার করিতে পারেন,— একবার ছাড়িয়া দিন, কাঁদিয়া আসি। তার পর যদি আমি বাঁচিয়া থাকি, তবে না হয়, আমার মাথা মড়াইয়া ঘোল ঢালিয়া দেশ ছাড়া করিয়া দিবেন। গোবিন্দলাল বঝিলেন। দীপণাস্থ প্রতিবিম্বের ন্যায় রোহিণীর হৃদয় দেখিতে পাইলেন। বঝিলেন, যে মন্ত্রে ভ্রমর মগধ, ভূজঙগীও সেই মন্ত্রে মগধ হইয়াছে। তাঁহার আহমাদ হইল না—- রাগও হইল না-সমদ্রবৎ সে হৃদয়, তাহা উদ্বেলিত করিয়া দয়ার উচ্ছবাস উঠিল। বলিলেন, * রোহিণি, মত্যই বোধ হয় তোমার ভাল, কিন্তু মরণে কাজ নাই। সকলেই কাজ করিতে এ সংসারে আসিয়াছি। আপনার আপনার কাজ না করিয়া মরিব কেন ?” গোবিন্দলাল ইতস্ততঃ করিতে লাগিলেন। রোহিণী বলিল, “বলন না ?” গো। তোমাকে এ দেশ ত্যাগ করিয়া যাইতে হইবে। রো । কেন ? গো। তুমি আপনিই ত বলিয়াছিলে, তুমি এ দেশ ত্যাগ করিতে চাও। রো। আমি বলিতেছিলাম। লজজায়, আপনি বলেন কেন ? গো। তোমায় আমায় আর দেখা শনা না হয়। রোহিণী দেখিল, গোবিন্দলাল সব বাকিয়াছেন। মনে মনে বড় অপ্রতিভ হইল—বড় সখী হইল। তাহার সমস্ত যন্ত্রণা ভুলিয়া গেল। আবার তাহার বাঁচিতে সাধ হইল। আবার তাহার দেশে থাকিতে বাসনা জন্মিল। মনষ্যে বড়ই পরাধীন। রোহিণী বলিল, “আমি এখনই যাইতে রাজি আছি। কিন্তু কোথায় যাইব ?” গো। কলিকাতায় । সেখানে আমি আমার এক জন বন্ধকে পত্র দিতেছি । তিনি তোমাকে একখানি বাড়ী কিনিয়া দিবেন, তোমার টাকা লাগিবে না। রো। আমার খড়ার কি হইবে ? গো। তিনি তোমার সঙেগ যাইবেন, নাহিলে তোমাকে কলিকাতায় যাইতে বলিতাম না। রো। সেখানে দিনপাত করিব কি প্রকারে ? গো। আমার বন্ধ তোমার খড়ার একটি চাকরি করিয়া দিবেন। C GN