পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V5 মানসিংহ কহিলেন, “অলপ সেনা সম্পমািখ রণে অগ্রসর হইতে পাঠাইত চাহিতেছি না। ক্ষ-দ্র বল অসপটে থাকিয়া গ্রামপীড়নাসক্ত পাঠানদিগের সামান্য দলসকল কতক দমনে রাখিতে পরিবে ।” তখন মোগল কহিল, “মহারাজ! নিশ্চিত কালগ্রাসে কোন সেনাপতি যাইবে ?” মানসিংহ ভ্ৰভঙ্গী করিয়া বলিলেন, “কি ! এত বুজপাত ও মোগল মধ্যে মাতুকে ভয় করে না, এমন কি কেহই নাই ?” এই কথা শ্রীতিমাত্র পাঁচ-সাতজন মোগল ও রাজপত গাত্ৰোত্থান করিয়া কহিল, “মহারাজ : দাসেরা যাইতে প্ৰস্তৃত আছে!” জগৎ সিংহও তথায় উপস্থিত ছিলেন; তিনি সব্বাপেক্ষা বয়ঃকনিষ্ঠ; সকলের পশ্চাতে থাকিয়া কহিলেন, “অনািমতি হইলে এ দাসও দিল্লীশ্ববরের কার্য্যসাধনে যত্ন করে।” ” রাজা মানসিংহ সস্মিতবদনে কহিলেন, “না হবে কেন ? আজি জানিলাম যে, মোগল রাজপতি নাম লোপের বিলম্বােব আছে। তোমরা সকলেই এ দন্ডকর কায্যে প্রস্তুত, এখন কাহাকে রাখিয়া কাহাকে পাঠাই ?” একজন পারিষদ সহস্যে কহিল, “মহারাজ! অনেকে যে এ কায্যে উদ্যত হইয়াছেন, সে ভালই হইয়াছে। এই উপলক্ষে সেনাব্যয়ের অলপতা করিতে পারবেন। যিনি সব্বাপেক্ষা ক্ষদ্র সেনা লইয়া যাইতে স্বীকৃত হয়েন, তাঁহাকেই রাজকায্য সাধনের ভার দিউন ৷” রাজা কহিলেন, “এ উত্তম পরামর্শ।” পরে প্রথম উদ্যমকারীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কত সংখ্যক সেনা লইয়া যাইতে ইচ্ছা করা ??? সেনাপতি কহিলেন, “পঞ্চদশ সহস্র পদাতিবলে রাজকায্য উদ্ধার করিব।” پام" রাজা কহিলেন, “এ শিবির হইতে পঞ্চদশ সহস্ৰ ভগন করুিলে’অধিক থাকে না। কোন বীর দশ সহস্ৰ লইয়া যন্ধে যাত্রা করিতে চাহে ?” সেনাপতিগণ নীরব হইয়া রহিলেন। পরিশেষে রাজার প্রিয়পাত্র যশোবন্তসিংহ নামক রাজপত যোদ্ধা। রাজাদেশ পালন করিতে অননুমতি প্রাথিত হইলেন। রাজা হৃস্টচিত্তে সকলের প্রতি দভিটপাত করিতে লাগিলেন। কুমার জগৎসিংহ তাঁহার দটির অভিলাষী হইয়া দাঁড়াইয়া ছিলেন, তৎপ্রতি রাজার দাম্পিট নিক্ষিপত হইবামাত্র তিনি বিনীতভাবে কহিলেন, “মহারাজ । রাজপ্ৰসাদ হইলে এ দাস পঞ সহস্র সাহায়ে কতল খাঁকে সবর্ণরেখাপারে রাখিয়া আইসে।” রাজা মানসিংহ অবাক হইলেন। সেনাপতিগণ কানাকানি করিতে লাগিলেন। ক্ষণেক পরে বুকুরলেন, “পত্র আমি জানি যে, তুমি রাজপােতকুলের গরিমা; কিন্তু তুমি অন্যায় সাহস কারতেছ !” জগৎ সিংহ বন্দধাঞ্জলি হইয়া কহিলেন, “যদি প্রতিজ্ঞােপালন না করিয়া বাদশাহের সেনাবলী } অপচয় করি, তবে রাজদান্ডে দণডেনীয় হইব ।” রাজা মানসিংহ কিয়ৎক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিলেন, “আমি তোমার রাজপতিকুলধৰ্ম্ম প্রতিপালনের ব্যাঘাত করিব না; তুমিই এ কায্যে যাত্রা কর।” এই বলিয়া রাজকুমারকে বাৎপাকুলিলোচনে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া বিদায় করিলেন। সেনাপতিগণ সব সব শিবিরে গেলেন। পণ্যম পরিচ্ছেদ ঃ গড়মান্দারণ Q যে পথে বিষ্ণপাের প্রদেশ হইতে জগৎ সিংহ জাহানাবাদে প্রত্যাগমন করিয়াছিলেন, সেই পথের চিহ্ন অদ্যাপি বক্তমান আছে। তাহার কিঞ্চিৎ দক্ষিণে মান্দারণ গ্রাম। মান্দারণ এক্ষণে ক্ষীন্দ্র গ্রাম, কিন্তু তৎকালে ইহা সৌষ্ঠবশালী নগর ছিল। যে রমণীদিগের সহিত জগৎসিংহের মন্দির-মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, তাঁহারা মন্দির হইতে যাত্রা করিয়া এই গ্রামাভিমাখে। গমন করেন। গড় মান্দারণে কয়েকটি প্রাচীন দাগ ছিল, এই জন্যই তাহার নাম গড় মান্দারণ হইয়া থাকিবে । নগর মধ্যে আমোদর নদী প্রবাহিত; এক সন্থানে নদীর গতি এতাদশ বক্রতা প্রাপত হইয়াছিল যে, তদ্দ্বারা পাশাব্যস্থ এক খন্ড ত্রিকোণ ভূমির দই দিক বেণ্টিত হইয়াছিল; তৃতীয় দিকে মানবহস্তনিখাত এক গড় ছিল; এই ত্রিকোণ ভূমিখন্ডের অগ্রদেশে যথায় নদীর বক্ৰগতি CN)