পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्ञाङन्निश्श বহিৎ শিবির মাত্র। পক্ষান্তরে ইহা বলা যাইতে পারে যে, মোগল বাদশাহ দিগের শিবির একটি দিল্লী নগরী। নগরের যেমন চক, তেমনই বড় বড় চক সাজাইয়া তাম্পব পাতা হইত। এমন অসংখ্য চত্বরশ্রেণীতে একটি বস্ত্রনিশ্চিমতা মহানগরীর সন্টি হইত। সকলের মধ্যে বাদশাহের তাম্বর চক। দিল্লীতে যেমন মহােঘ হাম্মদৃশ্রেণীমধ্যে বাদশাহ বাস করিতেন, তেমনই মহােঘ হমমশ্রেণীমধ্যে এখানেও বাস করিতেন; তেমনই দরবার, আমখাস, গোসলখানা, * রঙমহল। এই সকল বাদশাহী তাম, কেবল বস্ত্রনিমিত নহে। ইহার লৌহ পিত্তলের সজা ছিল— এবং ইহাতে দ্বিতল ত্রিতল কক্ষও থাকিত। সম্মখে দিল্লীর দাগের ফটকের ন্যায় বড় ফটক। বাদশাহী তাম্পব সকলের বস্ত্রনিশ্চিমত প্রাচীর বা পট পাদক্লোশ দীঘ, সমস্তই চার কারকোৰ্যখচিত পট্টবস্ত্রনিৰ্ম্মিমত। যেমন দগপ্রাচীরে বরাজ গম্বজ প্রভৃতি থাকিত, ইহাতে তাহা ছিল। পিত্তলের সতম্ভের দবারা এই প্রাচীর রক্ষিত হইত। কক্ষসকলের বাহিরে উক্তজবল রান্তিম পটের শোভা, ভিতরে সমস্ত দেয়াল “ছবি” মোড়া। ছবি, আমরা এখন যাহাকে বলি তাই, অর্থাৎ কাচের পরিকলার ভিতর চিত্র। দরবার-তাস্বতে শিরোপরে সবণ খচিত চন্দ্ৰাতপ-নিস্পেন বিচিত্র গালিচা, মধ্যে রত্নমন্ডিত রাজসিংহাসন। চারি দিকে অস্ত্ৰধারিণী তাতারসন্দেরীগণের প্রহরা। রাজপ্রাসাদাবলীর পরে আমীর ওমরাহ দিগের পটমণীডপরাজির শোভা। এমন শোভা অনেক ক্লোশ ব্যাপিয়া। কোন পাটনিশ্চিমত অট্টালিকা রক্তবর্ণ, কোনটি পীতবর্ণ, কোনটি শোবত, কোনটি হরিৎকপিশ, কোনটি নীল; সকলের সবর্ণ কলস চন্দ্রসায্যের কিরণে ঝলসিতে থাকে। তীরে, এই সকলের চারিদিকে, দিল্লীর চকের ন্যায় বিচিত্র পণ্যবীথিকা—বাজারের পর বাজার। সহসা বাদশাহের শােভাগমনে উদয়সাগরতীরে এই রমণীয় মহানগরীর সন্টি হইল। দেখিয়া লোক বিসমিয়াপন্ন হইল। বাদশাহ যখন শিবিরে আসিতেন, তখন অন্তঃপরিবাসিনী সকলেই সঙ্গে আসিত। বেগমেরা সকলেই আসিত। এবারও আসিয়াছিল। যোধপরিণী, উদিপারী, জেব-উন্নিসা সকলেই আসিয়াছিল। যোধপরীর সঙ্গে নিৰ্ম্মলকুমারীও আসিয়াছিল। দিল্লীর রঙমহলে যেমন তাহাদের পথক পথক মন্দির ছিল, শিবিরের রঙমহলেও তেমনই তাহদের পথক পথক। মন্দির ছিল। এই সখের শিবিরে, ঔরঙ্গজেব রাত্রিকালে যোধপরীর মহালে আসিয়া সখে কথোপকথন করিতেছেন। নিম্মলকুমারীও সেখানে উপস্থিত। “ইমলি বেগম !" বলিয়া বাদশাহ নিৰ্ম্মলকে ডাকিলেন। নিম্পমািলকে তিনি ইতিপকেব “নিমলি বেগম" বলিতেন, কিন্তু বাক্যের যন্ত্রণায় ভুগিয়া এক্ষণে “ইমলি বেগম” বলিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। বাদশাহ নিৰ্ম্মমািলকে বলিলেন, “ইমলি বেগম! তুমি আমার, না রাজপতের ?” নিৰ্ম্মল যন্ত করে বলিল, “দনিয়ার বাদশাহ দনিয়ার বিচার করিতেছেন, এ কথারও তিনি বিচার করতেন।” ঔরঙগ। আমার বিচারে এই হইতেছে যে, তুমি রাজপত্যের কন্যা, রাজপত তোমার স্বামী, তুমি রাজপািতমহিষীর সখী--তুমি বাজপাতেরাই। নিৰ্ম্মল। জাঁহাপনা! বিচার কি ঠিক হইল। আমি রাজপতের কন্যা বটে, কিন্তু হজরৎ যোধপরীও তাই। আপনার পিতামহী ও প্রপিতামহনীও তাই।--তাঁহারা মোগল বাদশাহের হিতাকাঙিক্ষণী ছিলেন না কি ? ঔরঙ্গ । ইহারা মোগল বাদশাহের বেগম, তুমি রাজপতের স্ত্রী। নিমাল। (হাসিয়া) আমি শাহানশাহ আলমগীর বাদশাহের ইমলি বেগম। ঔরঙ্গ। তুমি রিপনগরীর সখী । নিম্পমালা। যোধপরীরাও তাই। ঔরঙ্গ। তবে তুমি আমার ? নিৰ্ম্মমল । আপনি যেমন বিবেচনা করেন। ঔ । আমি তোমাকে একটি কার্য্যে নিযক্ত করিতে চাই। তাহাতে আমার উপকার আছে,

  • যাহাকে মোগল বাদশাহেরা গোসলখানা বলিতেন, তাহাতে আধনিক বৈঠকখানাব মত কায্য হইত। সেইটি আয়েশের সােথান।

Ꮤ2 Ꮜ Ꮼ