পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ऊानन्नशठे উপক্ৰমণিকা অতি বিস্তৃত অরণ্য। অরণ্যমধ্যে অধিকাংশ বক্ষেই শাল, কিন্তু তাঁদভন্ন আরও অনেকজাতীয় গাছ আছে। গাছের মাথায় মাথায় পাতায় পাতায় মিশামিশি হইয়া অনন্ত শ্রেণী চলিয়াছে। বিচ্ছেদশান্য, ছিদ্রশান্য, আলোকপ্রবেশের পথমাত্রশন্যে; এইরােপ পল্লবের অনন্ত সমদ্র, ক্লোশের পর ক্লোশ, ক্লোশের পর ক্লোশ, পবনে তরঙ্গের উপর তরঙগ বিক্ষিপত করিতে করিতে চলিয়াছে। নীচে ঘন্যান্ধকার, মধ্যাহ্নেও আলোক অসফট, ভয়ানক ! তাহার ভিতরে কখন মনষ্যে যায় না। পাতার অনন্ত মৰ্ম্মমরি এবং বন্য পশপক্ষীর রব ভিন্ন অন্য শবদ তাহার ভিতর শানা যায় না। একে এই বিস্তৃত অতি নিবিড় অন্ধতমোময় আবণ্য, তাহাতে রাত্রিকাল। রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর। রাত্রি অতিশয় অন্ধকার ; কাননের বাহিরেও অন্ধকার ; কিছ দেখা যায় না। কাননের ভিতরে তমোরাশি ভূগভস্থ অন্ধকারের ন্যায়। পশপক্ষী একেবারে নিস্তবধ । কত লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি পশতু, পক্ষী, কীট পতঙ্গ সেই অরণ্যমধ্যে বাস করে। কেহ কোন শব্দ করিতেছে না। বরং সে অন্ধকার অনভব করা যায়— শবদময়ী পথিবীর সে নিস্তবধভােব অনভব করা যাইতে পারে না। সেই অন্তশ্যান্য অরণ্যমধ্যে, সেই সচেীভেদ্য অন্ধকারময় নিশীথে, সেই অননভবনীয় নিস্তবধতা মধ্যে শবদ হইল, “আমার মনস্কাম কি সিদ্ধ হইবে না ?” শবদ হইয়া আবার সে অরণ্যানী নিস্তব্ধতায় ডুবিয়া গেল; তখন কে বলিবে যে, এ অরণ্যমধ্যে মনষ্যে শবদ শনা গিয়াছিল ? কিছকাল পরে আবার শব্দ হইল, আবার সেই নিস্তব্ধতা মথিত করিয়া মনয্যেকন্ঠ ধবনিত হইল, “আমার মনস্কাম কি সিদ্ধ হইবে না ?” এইরােপ তিন বার সেই অন্ধকারসমদ্র আলোড়িত হইল। তখন উত্তর হইল, “তোমার পণ কি ?” প্রত্যুত্তরে বলিল, “পণ আমার জীবনসকবসব।” প্রতিশবদ হইল, “জীবন তুচ্ছ; সকলেই ত্যাগ করিতে পারে।” “আর কি আছে? আর কি দিব ?” তখন উত্তর হইল, ‘ভক্তি।” CSC