পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्नाबब्ी গহে আসিয়া দিগগজ পন্ডিত মনে মনে ভাবিলেন, “ব্যাকরণাদিতে ত কৃতবিদ্য হইলাম। এক্ষণে কিঞ্চিৎ সমিতি পাঠ করা আবশ্যক। শনিয়াছি, অভিরাম স্বামী বড় পন্ডিত, তিনি ব্যতীত আমাকে শিক্ষা দেয়, এমন লোক আর নাই, অতএব তাঁহার নিকটে গিয়া কিছ সমিতি শিক্ষা করা উচিত।” এই স্থির করিয়া দিগগজ দগমধ্যে অধিস্ঠিান করিলেন। অভিরাম স্বামী অনেককে শিক্ষা দিতেন; কাহারও প্রতি বিরক্ত ছিলেন না। দিগগজ কিছ, শিখকে বা না শিখক, — অভিরাম সবামী তাহাকে পাঠ দিতেন। গজপতি ঠাকুর কেবল বৈয়াকরণ আর সমাত্তি নহেন ; একটা আলঙ্কারিক, একটা একটি রসিক, ঘািতভান্ড তাহার পরিচয়ের সস্থল। তাঁহার রসিকতার আড়ম্বরটা কিছ, আশামানির প্রতি গারতের হইত; তাহার কিছ গঢ় তাৎপৰ্য্যও ছিল। গজপতি মনে করিতেন, “আমার তুল্য ব্যক্তির ভারতে কেবল লীলা করিতে আসা ; এই আমার শ্ৰীবান্দাবন, আশামানি আমার রাধিকা।" আশামানিও রসিকা ; মদনমোহন পাইয়া বানর-পোষার সাধ মিটাইয়া লইতে। বিমলাও সন্ধান পাইয়া কখনও বানর নাচাইতে যাইতেন। দিগগজ মনে করিতেন, “এই আমার চন্দ্রাবলী জটিয়াছে; না হবে কেন ? যে ঘািতভান্ড ঝাড়িয়াছি ; ভাগ্যে বিমলা জানে না, ওটি আমার শোনা-কথা।” দ্বাদশ পরিচ্ছেদ ঃ আশামানির অভিসার দিগগজ গজপতির মনোমোহিনী আশমানি কিরােপ রুপবতী, জানিতে পাঠক মহাশয়ের কৌতহল জন্মিয়াছে সন্দেহ নাই। অতএব তাঁহার সাধ পরাইব। কিন্তু সত্ৰীলোকের রংপবর্ণনবিষয়ে গ্রন্থকারগণ যে পদ্ধতি অবলম্পবন করিয়া থাকেন, আমার সদশে অকিঞ্চন জনের তৎপদ্ধতি বহিভূত হওয়া অতি ধন্টতার বিষয়। অতএব প্রথমে মঙ্গলাচরণ করা কত্তব্য। হে বাগ দেবি ! হে কমলাসনে! শরদিন্দনিভাননো! আমলকমল-দলনিন্দিত-চরণ-ভক্তজনবৎসলে! আমাকে সেই চরণকমলের ছায়া দান করা; আমি আশামানির রােপ বর্ণনা করিব। হে অরবিন্দানন-সন্দরীকাল-গৰ্ব্ব-খব্বকারিণি! হে বিশাল রসাল দীঘ-সমাস-পটল-সন্টিক্যারিণি! একবার পদনখের এক পাশে বা সস্থান দাও, আমি রােপ বর্ণনা করিব। সমাস-পটল, সন্ধি-বেগান, উপমা-কাঁচকলার চড়চড়ি রাঁধিয়া এই খিচুড়ি তোমায় ভোগ দিব। হে পন্ডিতকুলেপিসত পয়ঃপ্ৰস্ৰবিণি! হে মাখজনপ্রতি ক্কচিৎ কৃপাকারিণি! হে অঙ্গলি-কণডায়ন-বিষমবিকার সমাৎপাদিনি ! হে বটতলা-বিদ্যাপ্রদীপ-তৈলপ্রদায়িনি!! আমার বন্ধির প্রদীপ একবার উত্তজবল করিয়া দিয়া যাও। মা ! তোমার দই রােপ ; যে রাপে তুমি কালিদাসকে বরপ্ৰদা হইয়াছিলে, যে প্রকৃতির প্রভাবে রঘবংশ, কুমারসম্ভব, মেঘদত, শকুন্তলা জন্মিয়াছিল, যে প্রকৃতির ধ্যান করিয়া বালিমীকি রামায়ণ, ভবভূতি উত্তররামচরিত, ভারবি কিরাতাজনীয় রচনা করিয়াছিলেন, সে রাপে আমার স্কন্ধে আরোহণ করিয়া পীড়া জন্মাইও না ; যে মাত্তি ভাবিয়া শ্ৰীহৰ্ষ নৈষধ লিখিয়াছিলেন যে প্রকৃতিপ্ৰসাদে ভারতচন্দ্র বিদ্যার অপব্ব রািপবর্ণনা করিয়া বঙ্গদেশের মনোমোহন করিয়াছিলেন, যাহার প্রসাদে দাসরন্থি রায়ের জন্ম, যে মাত্তিতে আজও বটতলা আলো করিতেছে, সেই মাত্তিতে একবার আমার স্কন্ধে আবিভূতি হও, আমি আশামানির রােপ বর্ণনা করি। আশামানির বেণীর শোভা ফণিনীর ন্যায়; ফণিনী সেই তাপে মনে ভাবিল, যদি বেণীর কাছে পরাস্ত হইলাম, তবে আর এ দেহ লোকের কাছে লইয়া বেড়াইবার প্রয়োজনটা কি ! আমি গাত্তে যাই। এই ভাবিয়া সাপ গাত্তের ভিতর গেলেন। ব্ৰহ্মা দেখিলেন প্ৰমাদ ; সাপ গাত্তে গেলেন, মানষে দংশন করে কে ? এই ভাবিয়া তিনি সাপকে ল্যাজ ধরিয়া টানিয়া বাহির করিলেন, সাপ বাহিরে আসিয়া, আবার মািখ দেখাইতে হইল, এই ক্ষোভে মাথা কুটিতে লাগিল, মাথা কুটিতে কুটিতে মাথা চেপটা হইয়া গেল, সেই অবধি সাপের ফণা হইয়াছে। আশামানির মািখচন্দ্র অধিক সন্দর, সতরাং চন্দ্ৰদেব উদিত হইতে না পারিয়া ব্ৰহ্মার নিকট নালিশ করিলেন। ব্ৰহ্মা কহিলেন, ভয় নাই, তুমি গিয়া উদিত হও, আজি হইতে সত্ৰীলোকদিগের মািখ আবিত হইবে ; সেই অবধি ঘোমটার সন্টি। নয়ন দটি যেন খঞ্জন, পাছে পাখী ডানা বাহির করিয়া উড়িয়া পলায়, এই জন্য বিধাতা পল্লবরােপ পিজিরার কবাট করিয়া দিয়াছেন। নাসিকা গরড়ের নাসার ন্যায় মহাবিশাল ; দেখিয়া গরড়ে আশঙ্কায় বাক্ষারোহণ করিল, সেই অবধি পক্ষিকুল বক্ষের উপরেই থাকে। কারণান্তরে দাড়িম্ব বঙ্গদেশ ছাড়িয়া পাটনা অঞ্চলে পলাইয়া রহিলেন; আর হসিত কুম্ভ লইয়া ব্ৰহ্মদেশে পলাইলেন ; বাকি ছিলেন। ধবলগিরি, তিনি দেখিলন যে, আমার চড়া কতই বা উচ্চ, Ο Ο