পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकाश ब्रष्नाबव्ली সেই রজনী প্ৰভাতে শান্তির সাহায্যে মহেন্দ্রের সঙ্গে কল্যাণীর সাক্ষাৎ হইল। নিস্তবধ কাননমধ্যে, ঘনবিন্যস্ত শালতার শ্রেণীর অন্ধকার ছায়ামধ্যে, পশ-পক্ষী ভগননিদ্র হইবার পকেব, তাহাদিগের পরস্পরের দশানলাভ হইল। সাক্ষী কেবল সেই নীলগগনবিহারী মালানকিরণ আকাশের নক্ষত্ৰচয়, আর সেই নিম্প্রকক্ষপ অনন্ত শালতার শ্রেণী। দরে কোন শিলা সংঘাষণনাদিনী, মধারকল্লোলিনী, সংকীর্ণা নদীর তর-তর শব্দ, কোথাও প্রাচীসমন্দিত উষামকুটজ্যোতিঃ সন্দশনে আহমাদিত এক কোকিলের রব । বেলা এক প্রহর হইল। সেখানে শান্তি জীবানন্দ আসিয়া দেখা দিলেন। কল্যাণী শান্তিকে বলিল, “আমরা আপনার কাছে বিনামল্যে বিক্ৰীত। আমাদের কন্যাটির সন্ধান বলিয়া দিয়া এ উপকার সম্পপণ্য করবেন।” শান্তি জীবানন্দের মাখের প্রতি চাহিয়া বলিল, “আমি ঘামাইব । অল্টপ্রহরের মধ্যে বসি নাই—ন্দই রাত্ৰি ঘামাই নাই—আমি যাই পরিষ!” কল্যাণী ঈষৎ হাসিল । জীবানন্দ মহেন্দ্রের মািখপানে চাহিয়া বলিলেন, “সে ভার আমার উপর রহিল। আপনারা পদচিহ্নে গমন করােন—সেইখানে কন্যাকে পাইবেন।” জীবানন্দ ভরইপরে নিমাইয়ের নিকট হইতে মেয়ে আনিতে গেলেন---কাজটা বড় সহজ বোধ হইল না। তখন নিমাই প্রথমে ঢোক গিলিল, একবার এদিক ওদিক চাহিল। তার পর একবার তার ঠোঁট নাক ফলিল। তার পর সে কাঁদিয়া ফেলিল। তার পর বলিল, “আমি মেয়ে দিব না।” নিমাই, গোল হাতখানির উলটাপিঠ চোখে দিয়া ঘরাইয়া ঘরাইয়া চক্ষী মছিলে পর জীবানন্দ বলিলেন, “তা দিদি কাঁদা কেন, এমন দরও তা নয়-তাদের বাড়ী তুমি না হয় গেলে, মধ্যে মধ্যে দেখে এলে |’ নিমাই ঠোঁট ফলাইয়া বলিল, “তা তোমাদের মেয়ে তোমরা নিয়ে যাও না কেন ? আমার কি ?” নিমাই এই বলিয়া সবুকুমারীকে আনিয়া রাগ করিয়া দাম করিয়া জীবানন্দের কাছে ফেলিয়া দিয়া পা ছাড়াইয়া কাঁদিতে বসিল। সতরাং জীবানন্দ তখন আর কিছ না বলিয়া এদিক ওদিক বাজে কথা কহিতে লাগিলেন। কিন্তু নিমাইয়ের রাগ পড়িল না। নিমাই উঠিয়া গিয়া সবুকুমারীর কাপড়ের বোেচকা, অলঙ্কারের বাক্স, চুলের দড়ি, খেলার পর্তুল ঝাপঝাপ করিয়া আনিয়া জীবানন্দের সম্মখে ফেলিয়া দিতে লাগিল। সবুকুমারী সে সকল আপনি গছাইতে লাগিল। সে নিমাইকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, “হাঁ মা-—কোথায় যাব। মা ?” নিমাইয়ের আর সহ্য হইল না। নিমাই তখন সংকুকে কোলে লইয়া কাঁদিতে কাঁদিতে চলিয়া গেলে । তৃতীয় পরিচ্ছেদ পদচিহ্নে নািতন দগমধ্যে, অ্যাজ সমুখে সমবেত, মহেন্দ্র, কল্যাণী, জীবানন্দ, শান্তি, নিমাই, নিমাইয়ের স্বামী, সবুকুমারী। সকলে স্যুখে সম্মিলিত । শান্তি নবীনানন্দের বেশে আসিয়াছিল। কল্যাণীকে যে রাত্রে আপনি কুটীরে আনে, সেই রাত্রে বারণ করিষাছিল যে, নবীনানন্দ যে সত্ৰীলোক, এ কথা কল্যাণী স্বামীর সাক্ষাতে প্রকাশ না করেন। একদিন কল্যাণী তাহাকে অন্তঃপরে ডাকিয়া পঠাইলেন। নবীনানন্দ অন্তঃপারমধ্যে প্রবেশ করিল। ভূত্যগণ বারণ করিল, শনিল না। শানিত কল্যাণীর নিকট আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “ডাকিয়াছ কেন ?” ক। পরিষ সাজিয়া কত দিন থাকিবে ? দেখা হয় না,---কথা কহিতেও পাই না। আমার স্বামীর সাক্ষাতে তোমায় প্রকাশ হইতে হইবে । নবীনানন্দ বড় চিন্তিত হইয়া রহিলেন, অনেকক্ষণ কথা কহিলেন না। শেষে বলিলেন, “তাহাতে অনেক বিঘা কল্যাণি !” দই জনে সেই কথাবাৰ্ত্ত হইতে লাগিল। এদিকে যে ভৃত্যুবৰ্গ নবীনানন্দের অন্তঃপারে প্রবেশ নিষেধ করিয়াছিল, তাহারা গিয়া মহেন্দ্রকে সংবাদ দিল যে, নবীনানন্দ জোর করিয়া অন্তঃপারে প্রবেশ করিল, নিষেধ মানিল না। কৌতােহলী হাইঘা মহেন্দ্রও অন্তঃপরে গেলেন। CA CA bio