পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्नाबव्ी সাহেব মনে করিলেন, “এ পরামর্শ মন্দ নহে।” তখন তাঁহার সঙ্গে যে সিপাহী আসিয়াছিল, তাহাকে বলিলেন, “গোইন্দিাকে ডাক ৷” সিপাহী এক ছিপের একজন জমাদার সাহেবকে ডাকিয়া বলিল, “গেইন্দাকে ডাক।” তখন গোইন্দাকে ডাকাডাকির গোল পড়িয়া গেল। গোইন্দা কোথায়, গোইনদা কে, তাহা কেহই জানে না, কেবল চারি দিকে ডাকাডাকি করে। সপতম পরিচ্ছেদ বস্তুতঃ হরবল্লভ রায় মহাশয় যাদ্ধক্ষেত্রেই উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সে ইচ্ছাপাকবািক নহে, ঘটনাধীন। প্রথমে বড় ঘেষেন নাই। “শক্তিগণাং শাস্ত্ৰপাণিনাং” ইত্যাদি চাণক্যপ্রদত্ত সদ্যপদেশ সমরণ করিয়া তিনি সিপাহীদিগের ছিপে উঠেন নাই। একখানা পথিক ডিঙিগতে থাকিয়া, লেফটেনাণ্ট সাহেবকে বজরা দেখাইয়া দিয়া, অন্ধ ক্লোশ দরে পলাইয়া গিয়া ডিঙিগ ও প্রাণ রক্ষা করিয়াছিলেন। তার পর দেখিলেন, আকাশে বড় ঘনঘটা। মনে করিলেন, ঝড় উঠিবে ও এখনই আমার ডিঙিগ ডুবিয়া যাইবে, টাকার লোভে আসিয়া আমি প্রাণ হারাইব—আমার সৎকারও হইবে না। তখন রায় মহাশয় ডিঙিগ হইতে তীরে অবতরণ করিলেন। কিন্তু তীরে সেখানে কেহ কোথাও নাই দেখিয়া বড় ভয় হইল। সাপের ভয়, বাঘের ভয়, চোর-ডাকাইতের ভয়, ভূতেরও ভয় । হরিবল্লাভের মনে হইল, কেন এমন ঝাক:মারি করিতে আসিয়াছিলাম। হরিবল্লাভের কান্না আসিল । এমন সময়ে হঠাৎ বন্দকের হািড়মড়ি, সিপাহী বীরকন্দাজের হৈ হৈ শব্দ সব বন্ধ হইয়া গেল। হরিবল্লাভের বোধ হইল, অবশ্য সিপাহীর জয় হইয়াছে, ডাকাইত মাগনী ধরা পড়িয়াছে, নহিলে। লড়াই বন্ধ হইবে কেন ? তখন হরবল্লভ ভরসা পাইয়া যাদ্ধস্থানে যাইতে অগ্রসর হইলেন। তবে এ রাত্রিকালে, এ অন্ধকারে, এ বন-জঙ্গলের মাঝে অগ্রসর হন কিরাপে ? ডিঙিগর মাঝিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “হাঁ বাপ মাঝি,=—বলি, ওদিকে যাওয়া যায় কিরাপে বলতে পাের ' ' মাঝি বলিল, “যাওয়ার ভাবনা কি ? ডিঙিগতে উঠােন না, নিয়ে যাচ্ছি। সিপাহীরা মারবে ধরবে না। ত ? আবার যদি লড়াই বাধে 2" হর। সিপাহীরা আমাদের কিছ: বলিবে না। লড়াই আর বাধিবে না।--ডাকাইত ধরা পড়েছে। কিন্তু যে রকম মেঘ করেছে, এখনই ঝড় উঠবে-ডিভিগতে উঠি কিরাপে ? মাঝি বলিল, “ঝড়ে ডিভিগ কখনও ডুবে না।” হরিবল্লভ প্রথমে সে সকল কথায় বিশ বাস করিলেন না—শেষ অগত্যা ডিঙিগতে উঠিলেন। মাঝিকে উপদেশ দিলেন, কেনারায় কেনারায। ডিঙিগ লইয়া যাইবে । মাঝি তাহাই করিল। শীঘ্র আসিয়া ডিভিগ বজরায় লাগিল। হরিবল্লভ সিপাহীদের সঙ্কেতবাক্য জানিতেন, সতরাং সিপাহীরা। আপত্তি করিল না। সেই সময়ে “গোইনদা ! গোইনদা !” করিয়া ডাকাডাকি হইতেছিল। হরিবল্লভ বজরায় উঠিযা সন্মখস্থ আরদালির সিপাহীকে বলিল, “গেইন্দাকে খজিতেছে ? আমি গোইনদা।” সিপাহী বলিল, “তোমাকে কাপেতন সাহেব তলব করিয়াছেন।” হর। কোথায় তিনি ? সিপা। কামরার ভিতর । তুমি কামরার ভিতর যাও । হরিবল্লভ আসিতেছে জানিতে পারিয়া দেবী প্রস্থানের উদ্যোগ দেখিল । “কাপেতন সাহেবের জন্য কিছ জলযোগের উদ্যোগ দেখি” বলিয়া ভিতরের কামরায় চলিয়া গেল। এদিকে হরিবল্লভ কামরার দিকে গেলেনৰ কামরার দাবারে উপস্থিত হইয়া কামরার সজজা ও ঐশবষ্য, দিবা ও নিশির রপ ও সজা দেখিয়া তিনি বিস্মিত হইলেন। সাহেবকে সেলাম করিতে গিয়া, ভুলিয়া নিশিকে সেলাম করিয়া ফেলিলেন। হাসিয়া নিশি কহিল, “বন্দেগী খাঁ সাহেব ! মেজাজ, সরিফ ?” শনিয়া দিবা বলিল, “বন্দেগী খাঁ সাহেব । আমায় একটা কুণিশি হলো না।--আমি হলেম এদের রাণী ।” সাহেব হরিবল্লভকে বলিলেন, “ইহারা ফেরেব করিয়া দই জনেই বলিতেছে, “আমি দেবী ヒチ○ げ