পাতা:বঙ্গদর্শন-চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰঙ্গ - শম, কা: ১৬৮২ ) সামা । 3 לפי পুরুষের অপরাধে স্ত্রী অশিক্ষিল—কিন্তু সেই অপরাধের দণ্ড স্ত্রীগণের উপরেই বৰ্ত্তাইতেছে । বিচার মন্দ নয়! স্ত্রীগণের বিষয়াধিকার সস্বন্ধে একটি কৌতুকাবহ ব্যাপার মনে পড়িল । সম্প্রতি হাইপোর্টে একটি মোকদ্দমা হইয়া গিয়াছে । বিচাৰ্য্য বিষয় এই অসতী স্ত্রী,বিষয়াধিকারিণী হইতে পারে কি না । বিচারক অকুমতি করিলেন, পারে। শুনিয়া দেশে হুলস্থল পড়িয়া গেল। যা! এত কালে হিন্দুস্ত্রীর সতীত্ব ধৰ্ম্ম লুপ্ত হইল! আর কেহ সতীত্ব ধৰ্ম্ম রক্ষা করিবেন! ! বাঙ্গালি সমাজ পয়সা খরচ করিতে চাহে না-—রজাত্ত চাদীয় সহি করে না, কিন্তু এ লাঠি এমনি মৰ্ম্মস্থানে বাজিয়াছিল যে হিন্দুগণ আপন হইতেই চাঁদাতে সহি করিয়া, প্রিবিকেীসলে আপীল করিতে উদ্যত । প্রধান প্রধান সম্বাদ পত্র, “ হা সতীত্ব ! কোথায় গেলি” বলিয়া ইংরেজি বাঙ্গালা সুরে রোদন করিয়া, “ ওরে চাদ দে !” বলিয়া ডাকিতে লাগিলেন । শেষট কি হইয়াছে জানি না, কেন না দেশী সম্বাদপত্র পাঠ সুখে আমরা ইচ্ছাক্রমে বঞ্চিত। কিন্তু যাহাই হোক, র্যাহার। এই বিচার অতি ভয়ঙ্কর ব্যাপার মনে করিয়াছিলেন, তাহাদিগকে আমাদিগের একটি কথা জিজ্ঞাস্য আছে। স্বীকার করি, অসতী স্ত্রী বিষয়ে বঞ্চিত হওয়াই বিধেয়, তাহ হইলে অসতীত্ব পাপ বড়

  • --

নহিলে শাসিত থাকে; কিন্তু সেই সঙ্গে আর একটি বিধান হইলে ভাল হয় না, যে লম্পট পুরুষ অথবা যে পুরুষ পত্নী ভিন্ন । অন্য নারীর সংসর্গ করিয়াছে, সেও বিষয়াধিকারে অক্ষম হইবে ? বিষয়ে বঞ্চিত হইবার ভয় দেখাইয়া স্ত্রীদিগকে সতী করিতে চাও—সেই ভয় দেখাইয়া পুরুষগণকে সৎপথে রাখিতে চাও না কেন ? ধৰ্ম্মভ্রষ্টা স্ত্রী বিষয় পাইবে না ধৰ্ম্মভ্ৰষ্ট পুরুষ বিষয় পাইবে কেন ? ধৰ্ম্ম ভ্ৰষ্ট পুরুষ,—যে লম্পট, যে চোর, যে মিথ্যাবাদী, যে মদ্যপায়ী, যে কৃতঞ্জ, সে সকলই পিষয় পাইবে,কেন না তাহারা পুরুষ ; কেবল অসতী বিষয় পাইবে না, কেন না সে স্ত্রী। ইহা যদি ধৰ্ম্ম শাস্ত্র, তবে অধৰ্ম্মশাস্ত্র কি ? ইহা যদি আইন, স্তবে বেআইন কি ? এই আইন রক্ষার্থ চাদ তোল যদি দেশবাৎসল্য, তবে মহাপাতক কেমন তর ? স্ত্রীজাতির সতীত্ব ধৰ্ম্ম সৰ্ব্বতোভাবে রক্ষণীয়, তাহার রক্ষার্থ যত বাধন বঁাধিতে পার, ততই ভাল,কাহারও আপত্তি নাই । কিন্তু পুরুষের উপর কোন কথা নাই কেন ? পুরুষ বার স্ত্রীগমন করুক, পরদার নিরত হউক, তাহার কোন শাসন নাই কেন ? ভূরি২ নিষেধ আছে, সকলেই বলিবে, পুরুষের পক্ষেও এ সকল অতি মন্দ কৰ্ম্ম, লোকেও একটুখ নিন্দা করিবে—কিন্তু এই পর্য্যন্ত । স্ত্রীলোকদিগের উপর যেরূপ কঠিন শাসন, পুরুষদিগের উপর সেরূপ কিছুই নাই ।