} | বঙ্গদশম শৈঃ, ১২৮২ ) দেবতত্ত্ব । ভীমমূৰ্ত্তি ধারণ করিতেন। স্বৰ্য্য কখন কখন দেশ দগ্ধ করিতেন। বায়ু সময়ে সময়ে বৃক্ষ উন্মুলিত, গৃহ ভগ্ন ও নৌকা । জলমগ্ন করিতেন। অগ্নি কখন কখন লোকের সর্বস্বাস্ত করিতেন । অশনির আঘাতে সময়ে সময়ে লোকের প্রাণ যাইত । প্রবল জলপ্লাবনে কখন কখন জনপদ সকল বিনষ্ট হইত। ভয়ঙ্কর শিলা বৃষ্টিতে কখন কখন বিলক্ষণ অপকার করিত ; মনোহর চন্দ্রমণও সময়ে সময়ে রাহুগ্ৰস্ত হইয়। ভয়বিস্তার করিতেন । এইরূপে প্রত্যেক দেবতারই কখন কখন উগ্রভাব লক্ষিত হইত। সুতরাং ক্রমে সৰ্ব্বত্রই রুদ্রমূৰ্ত্তি প্রকাশ পাইতে লাগিল । সকলের উগ্রতার সমষ্টি লইয়। রুদ্রের বিরাট মূৰ্ত্তি বিরাজমান হইল। ইহাতে কালে কালে স্থৰ্য্য অগ্নি প্রভৃতি কেন না তাহার নিকটে ক্ষুদ্র হইয়া পড়িবে ? কি প্রকারে বৈদিক দেবতাদিগের প্রাধান্য বিলুপ্ত হইয়। ভারতবর্ষে শিব ও বিষ্ণুর প্রাধান্য সংস্থাপিত হয়, স্থির করা সহজ নয়; কিন্তু এরূপ অনুমান নিতান্তু অসঙ্গত নহে যে, সমুদায় প্রাচীন দেবতার উগ্রভাব লইয়া শিবের এবং সৌম্যভাব লইয়া বিষ্ণুর স্বষ্টি, এবং এই কারণে লোকে | ক্রমে অন্য দেবতা অপেক্ষ তাহাদিগের প্রতি অধিক ভক্তি দেখাইতে আরম্ভ করে। হয় ভয় নয় ভালবাসা এই দুইটার মধ্যে কোন একটার বশবৰ্ত্তী হইয়া সাধারণতঃ লোকে অতিমামুষিক শক্তির উপাসনা | করিতে যায়। ইহার মধ্যে একটা হইতে -- --- விக்க അജ 8 & শৈবধৰ্ম্মের, এবং অপরটা হইতে বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের উৎপত্তি । - - কিন্তু বৰ্ত্তমাম কালের শিব কেবল বৈদিক রুদ্র নহেন। তিনি লিঙ্গমূৰ্ত্তিতে পূজিত। অথচ বৈদিক ঋষিদিগের কোন | উপাস্য দেবতাই লিঙ্গমূৰ্ত্তি বলিয়া বর্ণিত । নহেন, এবং আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে অতি প্রাচীন কালে অনার্য্য জাতি দিগের মধ্যে লিঙ্গোপাসনা প্রচলিত ছিল । সুতরাং ভারতবর্ষীয় অনাৰ্য্য জাতিদিগের ' নিকট হইতে আর্য্যের এপ্রকার শিব পূজা পদ্ধতি পাইয়াছিলেন, ইহা অনেক দূর সম্ভব । শৈব উপাসনা যে অনার্য্যভাবাপন্ন, নিয়ে তদ্বিষয়ের কয়েকট প্রমাণ প্রদত্ত হইতেছে । (১) বেদে লিঙ্গোপীসকদিগের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ আছে। ঋগ্বেদে লিখিত আছে, - “স শর্ধদর্যে বিষুণস্য জন্তোর্ম শিশ্নদেবা, অপিগুঞ্চ তংনঃ ” অর্থাৎ “ ইন্দ্র শত্রুদিগকে শাসন করুন : যেন লিঙ্গোপাসকেরা অামাদিগের যজ্ঞের নিকট না আসিতে পারে।” ইহাতে । বোধ হয়, যে, যে দস্থ্যগণ আর্য্য ঋষি দিগের যজ্ঞের বিঘ্ন করিত, তাহারা লিঙ্গোপাসক ছিল । রামায়ণের অনেকস্থানে বর্ণিত আছে যে রাক্ষসেরা যজ্ঞ কালে । মুনিদিগের প্রতি অনেক উৎপাত করিত। : রাক্ষসেরা যে আর্য্যধৰ্ম্মদ্বেষী স্বতন্ত্রধৰ্ম্ম । ক্রান্ত অনাৰ্য্য জাতি, তদ্বিষয়ে সন্দেহ | | হইতে পারে না। সুতরাং উত্তরকাল
পাতা:বঙ্গদর্শন-চতুর্থ খণ্ড.djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।