পাতা:বঙ্গদর্শন-তৃতীয় খন্ড.djvu/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- _ 8 १२ বৃত্রসংহার। (৭ঙ্গদর্শন মাঃ, ১২৮১ ৷ অঙ্গমাত্রদেখিয়া ব্যক্তিবিশেষকে সুন্দর বা কুৎসিত বলা যায় না। তবে অসমাপ্ত কাব্য পড়িয়া আমাদিগের যে সুখোদয় হইয়াছে, পাঠকগণকে সেই সুখের ভাগী করিবার জন্য গ্রন্থের কিছু পরিচয় দিব। অনেকেই এই গ্রন্থ পাঠান্তরে স্বীকার করিবেন, যে বাঙ্গালা গ্রন্থ পড়িয়া এরূপ মুখ অনেক দিন ঘটে নাই। এবং শীঘ্র ঘটিবেন । এরূপ কাব্য সৰ্ব্বদা জন্মে , नों } এই মহাকাব্যের বিষয়, ইন্দ্রকৃত বৃত্রের বধ । হেমবাবু পৌরাণিক বৃত্তান্তের অবিকল অনুসরণ করেন নাই—অনেক , স্থানেই নিজ কল্পনাকে স্কুরিত করিয়া ছেন । পাতালে, বৃত্ৰজিত, নিৰ্ব্বাসিত দেবগণ মন্ত্রণায় নিযুক্ত। এই স্থানে গ্রন্থারম্ভ। প্রথম সর্গ পড়িয় অনেকেরই পাণ্ডিমোনিয়মে মন্ত্রণানিযুক্ত দেবদূতগণের কথা মনে পড়িবে। হেম বাবু স্বয়ং স্বীকার করিয়াছেন, যে * বাল্যাবধি আমি ইংরাজিভাষা অভ্যাস করিয়া আসিতেছি, এবং সংস্কৃতভাষা অবগত নহি, সুতরাং এই পুস্তকের অনেক স্থানে যে ইংরাজি গ্রন্থকারদিগের ভাবসঙ্কলন এবং সংস্কৃতভাষার অনভিজ্ঞতা-দোষ লক্ষিত হইবে তাহা বিচিত্র নহে ।” হেম স্বাবু, মিণ্টনের অনুসরণ করিয়া থাকুন বা না থাকুন, তিনি এ অংশেও যে । স্বকীয় কবিত্বশক্তির বিশেষ পরিচয় দিয়াছেন, তাহ পাঠমাত্রেই সহৃদয় ব্যক্তি বুঝিতে পারবেন। “নিবিড়ধুম্রল ঘোর” সেই পাতাল পুরীর মধ্যে, সেই দীপ্তিশূন্ত অমরগণের দীপ্তিশূন্ত সভা— । অল্পশক্তির সহিত বর্ণিত হয় নাই। । একটি শ্লোক বিশেষ ভয়ঙ্কর— চারিদিকে সমুখিত অস্ফুট আরাব ক্রমে দেব-বৃন্দমুখে ফুটে ঘন ঘন : ঝটিকার পূৰ্ব্বে যেন ঘন ঘনচ্ছাস বহে যুড়ি চারি দিক আলোড়ি সাগর । স্বর্গভ্রষ্ট দেবগণ সেই তমসাচ্ছন্ন, ভীম- ! শব্দপূর্ণ সভাতলে বসিয়া, পুনৰ্ব্বার স্বৰ্গ । আক্রমণের পরামর্শ করিতে লাগিলেন। : দেবমুখে সন্নিবেশিত বাক্যগুলিতে একটি অর্থ আছে; বোধ করি,সকলেই বিনা টিল্প । নীতে তাহা বুঝিতে পারিবেন। অধিক । উদ্ধৃত করিবার আমাদিগের স্থান নাই; : উদাহরণ স্বরূপ তিনটি শ্লোক উদ্ধৃত । করিতেছি । “ ধিক্ দেব! ঘূণাশূন্ত, অক্ষুব্ধ-হৃদয়, এত দিন আছ এই অন্ধতমপুরে ; দেবত্ব, বিভব, বীর্য্য, সৰ্ব্ব তেয়াগিয়া দাসত্বের কলঙ্কেতে ললাট উজ্জলি । “ ধিক্ সে অমরনামে, দৈত্যভয়ে যদি আমরা পশিতে ভয় কর দেবগণ, অমরত পরিণাম পরিশেষে যদি দৈত্য-পদরজঃ পৃষ্ঠে করহ ভ্রমণ । “ বল হে অমরগণ—বল প্রকাশিয়া দৈত্যভয়ে এইরূপে থাকিবে কি হেথা ? : চির অন্ধকার এই পাতাল প্রদেশে, দৈত্য-পদ-রজঃ-চিহ্ন বক্ষে সংস্থাপিয়া ?”