পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতে এই ধৰ্ম্মশাস্ত্র সম্পূর্ণ রূপে প্রচলিত ছিল, কেবল এখনই কাল মাহাম্ম্যে লুপ্ত হইতেছে। যাহার এরূপ বিবেচন৷ করেন র্তাহাদের সহিত আমরা বিচারে প্রবৃত্ত হইব না। কিন্তু ইহা স্বীকার করি যে পূৰ্ব্বকালে ভারতবর্ষে এই সকল । বিধি কতকদুর প্রচলিত ছিল, এখনও কতকদুর প্রচলিত আছে। প্রচলিত ছিল, এবং প্রচলিত আছে, বলিয়াই ভারত বর্ষের এ অধোগতি। র্যাহারা ধৰ্ম্মশাস্ত্র ব্যবসায়ী, তাহাদিগকে এ কথা বলা বৃথা । কিন্তু অনেক হিন্দু আমাদিগের কথার অমুমোদন করিবেন ভরসা আছে। আমরা হিন্দুধৰ্ম্মবিরোধী লহি ; হিন্দুধৰ্ম্ম, পরিশুদ্ধ হইয়া, প্রচলিত থাকে, ইহাই আমাদিগের কামনা । তাই বলিয়া, যাহা কিছু ধৰ্ম্মশাস্ত্র বলিয়া পরিচিত, তাহাই যে হিন্দুধৰ্ম্মের প্রকৃত অংশ, এবং সমা-- জের মঙ্গলকারক, এ কথা আমরা স্বীকার করিতে পারি না । আমরা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উদ্দেশু সম্পূর্ণ বুঝিতে পারিয়াছি কি না বলিতে পারি না। যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহ শাস্ত্র নিষিদ্ধ, সেই কারণেই বহুবিবাহু হইতে নিবৃত্ত হইতে বলিলে একটি দোষ ঘটে । বহুবিবাহপরায়ণপক্ষেরা বলিতে পারেন, “ ধদি আপনি আমাদের শাস্ত্রায়সারে কার্য্য করিতে বলেন, তবে আমরা সন্মত আছি। কিন্তু যদি শাস্ত্র মানিতে হয়, তবে আপনার ইচ্ছামত, তা (τπτ /π, πττίt, sίνει ত্যাগ করা যাইতে পারে না। আপনি কতক গুলিন বচন উদ্ধৃত করিয়া বলিতেছেন, এই২ বচনাস্থসারে তোমরা যদৃচ্ছাক্রমে বহু বিবাহ করিতে পরিবে না। ভাল, আমরা তাহা করিব না। কিন্তু সেই সেই ৰিধিতে যে২ অবস্থায় অধি বেদনের অনুমতি আছে, আমরা এই দুইকোটি হিন্দু সকলেই সেই২ বিধান- ! মুসারে প্রয়োজনমত অধিবেদনে প্রবৃত্ত হইব—কেন না সকলেরই শাস্ত্রাক্ষমত আচরণ করা কৰ্ত্তব্য । আমরা যত ব্ৰাহ্মণ আছি,—রাঢ়ীয়, বৈদিক, বারেন্দ্র, কান্তকুজ প্রভৃতি—সকলেই অগ্রে সবর্ণ বিবাহ করিয়া কামতঃ ক্ষত্রিয়কস্তা, বৈশ্যকস্তা, এবং শূদ্রকন্যা বিৰাহ করিব । আমাদিদিগের মধ্যে যখনই কাহারও স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে বচসা করিয়া বাপের বাড়ী যাইবে, আমরা তখনই বিবাহের উদ্দেশ্য অসিদ্ধ বলিয়া, ছোট জাতির মেয়ে খুজিব। গৃহিণী যখন ঝগড়া করিয়াছেন, তখন রাগের মাথায় সম্মতি দিবেন সন্দেহ নাই।” এই দুই কোটি বাঙ্গালীর মধ্যে যাহারই স্ত্রী বন্ধ্যা,*সেই আর একটি বিৰাহ করুক, যাহারই স্ত্রী মৃতপ্রজা, সেই আর একটি বিবাহ করুক—যে হতভাগিনীকে বিধাতা বর্ষে২ মনঃপীড়া দিয়া থাকেন; স্বামীও তাহার মৰ্ম্মাত্তিক পীড়ার বিধান করুন, কেন না ইহা শাস্ত্র সম্মত । তদ্ভিন্ন, যাহার কন্যাভিন্ন পুত্র জন্মে নাই, এই হই কোটি হিন্দুর মধ্যে এমত যত লোক আছে,

  • ৰন্ধ্যtষ্টমেই ধিবেদ্যাফে শেষেভু মৃতপ্ৰজা । একাদশে স্ত্র জননী সদ্যস্ত, প্রিয়বাদিনী ।

—বহুবিবাহ, দ্বিতীয় পুস্তক,.১৪৩