এবং অপৌরুষেয় ; কেহ বলেন বেদ স্বই এবং ঈশ্বরপ্রণীত। ইহা ভিন্ন তৃতীয় সিদ্ধান্ত হইতে পারে না। কিন্তু সাংখ্য প্রবচনকারের মত স্বষ্টিছাড়া । তিনি প্রথমতঃ বলেন, যে বেদ কদাপি নিত্য হইতে পারে না, কেননা বেদেই তাহার কার্য্যত্বের প্রমাণ আছে—যথা “স তপোছতপাত তস্মাৎ তপস্তেপানাত্রয়োবেদ অজায়ন্ত ।” যেখানে বেদেই বলে যে এই এই রূপে বেদের জন্ম হইয়াছিল,তখন বেদ কদাপি নিত্য এবং অপৌরুষেয়, হইতে পারে না। কিন্তু যাহা অপৌরুষেয় নহে, তাহ অবশ্য পৌরুষের হইবে। কিন্তু সাংখ্যকারের মতে বেদ অপৌরুষেয় নহে, পৌরুষেয় ও নহে। পুরুষ, অর্থাৎ ঈশ্বর নাই, বলিয়া তাহা পৌরুষেয় নহে । সাংখ্যকার আরও বলেন, যে বেদ করিতে যোগ্য যে পুরুষ তিনি হয় মুক্ত নয় বদ্ধ। খিনি মুক্ত তিনি প্রবৃত্তির অভাবে বেদ স্বজন করিবেন না; যিনি বদ্ধ তিনি অসৰ্ব্বজ্ঞ বলিয়া তৎপক্ষে অক্ষম । G. তবে বেদ পৌরুষেয় নহে। অপেীরুষেয় ও নহে। তাহ কি কখন হইতে পারে ? সাংখ্যকার বলেন হইতে পারে —যথা অম্বুরাদি (৫,৪৮) র্যাহারা হিন্দু দর্শনশাস্ত্রের নাম শুনিলেই মনে করেন, তাহাতে সৰ্ব্বত্রই আশ্চৰ্য্য বুদ্ধির কৌশল, র্তাহাদিগের ভ্রম নিবারণার্থ এই কথার বিশেষ উল্লেখ করিলাম। সাংখ্যকারের বুদ্ধির তীক্ষতাও বিচিত্রা, ভ্রাস্তিও বিচিত্র। সাংখ্যকার যে এমন রহস্যজনক ভ্রান্তিতে অনবধানতাপ্রযুক্ত পতিত হইয়৷ ছিলেন, আমরা এমত বিবেচনা করি না । আমাদিগের বিবেচনায় সাংখ্যকার আস্তরিক বেদ মানিতেন না। কিন্তু তৎকালিক সমাজে ব্রাহ্মণে এবং দার্শনিকে কেহ সাহস করিয়া বেদের অবজ্ঞা করিতে পারিতেন না। এজন্য তিনি মৌখিক বেদভক্তি প্রকাশ করিয়াছিলেন। এবং যদি বেদ মানিতে হইল তবে আবশ্যকমত প্রতিবাদাদিগকে নিরস্ত করিবারজন্ত স্থানে বেদের দোহাই দিয়াছেন। কিন্তু তিনি আন্তরিক বেদ মানিতেন বোধ হয় না। বেদ পৌরুষেয় নহে, অপৌরুষেয়ও নহে, একথা কেবল ব্যঙ্গ মাত্র। স্বত্রকারের এই কথা বলিবার অভিপ্রায় বুঝা যায়, ষে দেখ, “তোমরা যদি বেদ কে সৰ্ব্বজ্ঞানযুক্ত বলিতে চাহ, তবে বেদ না, পৌরুষেয়, না অপৌরুষেয় হইয় উঠে। বেদ অপৌরুষেয় নহে, ইহার প্রমাণ বেদে আছে। তবে ইহা যদি পৌরুষেয় হয়, তবে ইহাও বলিতে হইবে, যে ইহ মধুষ্য কৃত, কেন না সৰ্ব্বজ্ঞ পুরুষ কেহ নাই, তাহ প্রতিপন্ন করা গিয়াছে।” যদি এসকল সুত্রের এরূপ অর্থনা করা যায়, তবে অদ্বিতীয় দূরদর্শী দার্শনিক সাংখ্যকারকে বাতুল বলিতে হয়। এবি ষয়ে আরও কিছু লিখিবার ইচ্ছা রহিল। - உைள்ை
পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।