(ৰঙ্গদর্শন অঃ, ১২৮* ) ' লিনী নিদ্রিতা ছিল—কে বলিবে সেই মহাশক্রর নৌকায় বসিয়া স্বপ্ন দেখিতেছিল কিনা? শৈবলিনী স্বপ্ন দেখিতেছিল— সেই ভীমা পুষ্করিণী চারি পাশে জলসংস্পর্শপ্রার্থী শাখা রাজিতে বাপী তীর অন্ধকারের রেখা যুক্ত—শৈবলিনী যেন তা হাতে পদ্ম হইয়া মুখ ভাসাইয়া রহিয়াছে। ! সরোবরের প্রান্তে যেন এক সুবর্ণ নিৰ্ম্মিত রাজহংস বেড়াইতেছে—তীরে একটা শ্বেত শূকর বেড়াইতেছে। রাজহংস দেখিয়া, তাহাকে ধরিবারজন্ত শৈবলিনী যেন উৎসুক হইয়াছেন; কিন্তু রাজহংস র্তাহার দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া চলিয়া যাইতেছে। শূকর শৈবলিনী পদ্মকে ধরিবারজন্ত ফিরিয়া | বেড়াইতেছে; রাজহংসের মুখ দেখা যাইতেছে না, কিন্তু শূকরের মুখ দেখিরা,বোধ হইতেছে যেন ফষ্টরের মুখের মত। শৈবলিনী রাজহংসকে ধরিতে যাইতৈ চান, চরণ মৃণাল হইয়া জলতলে বদ্ধ হইয়াছে—তিনি গতিশক্তি রহিত । এদিকে শূকর বলিতেছে আমার কাছে অইস আমি হাস ধরিয়া দিব। —প্রথম বন্দুকের শব্দে শৈবলিনীর নিদ্রা ভাঙ্গিয় গেল —তাহার পর প্রহরীর জলে পড়িবার শব্দ শুনিলেন। অসম্পূর্ণ—ভগ্ন নিদ্রার বশে কিছু ভাল বুঝিতে পারিলেন না । সেই য়াজহংস—সেই শূকর মনে পড়িতে লাগিল। যখন আবার বন্দুকের শব্দ হইল, এবং বড় গণ্ডগোল হইয়া উঠিল, তখন তাহার সম্পূর্ণ নিদ্রাভঙ্গ হইল। বাহিরের কামরায় আসিয়া দ্বার হইতে একবার দেখি চন্দ্রশেখর । E్సరి লেন–কিছু বুঝিতে পারলেন না। অবার ভিতরে আসিলেন। ভিতরে আলে! জলিতেছিল। পাৰ্ব্বতীও উঠিয়াছিল। শৈবলিনী পাৰ্ব্বতীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হইতেছে, কিছু বুঝিতে পারি, তেছ?” প। কিছু না । লোকের কথায় | বোধ হইতেছে, নৌকার ডাকাত পড়িয়াছে—সাহেবকে মারিয়া ফেলিয়াছে আমাদেরই পাপের ফল । শৈ। সাহেবকে মারিয়াছে, তাতে আমাদের পাপের ফল কি? সাহেবেরই পাপের ফল। পা। ডাকাত পড়িয়াছে—বিপদ আমাদেরই। শৈ। কি বিপদ? এক ডাকাতের | সঙ্গে ছিলাম, না হয় আর এক ডাকাতের সঙ্গে যাইব । যদি গোর ডাকাতের হাত এড়াইয়া কালা ডাকাতের হাতে পড়ি তবে মনদ কি? এই বলিয়া, শৈবলিনী ক্ষুদ্র মস্তক হইতে পৃষ্ঠোপরি বিলম্বিত বেণী আন্দোলিত করিয়া একটু হাসিয়া, ক্ষুদ্র পালঙ্কের উপর গিয়া বসিলেন । পাৰ্ব্বতী বলিল, “এ সময়ে তোমার হাসি আমার সহ্য হয় יין וזכ শৈবলিমী, বলিলেন, “অসহ্য হয়, গ জায় জল আছে, ডুবিয়া মর। আমার | | হাসির সময় উপস্থিত হইয়াছে, আমি হাসিব । একজন ডাকাতকে ডাকিয়৷ আন না, একটু জিজ্ঞাসা পড়া করি।”
পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।