{ৰঙ্গদর্শণ, বৈঃ ১২৮৪ । ননদ ছিল—তার পর আবার ভ্রমর নিজে হাসিতে যত পটু,শাসনে তত পটু ছিলেন না। ভ্রমরকে দেখিয়া চাকরাণীর দল বড় গোলযোগ বাড়াইল— নং ১—আর শুনেছ বউঠাকরুন ? নং ২—এমন সৰ্ব্বনেশে কথা কেহ কখন শুনে নাই । নং ৩—কি সাহস ! মাগিকে কাটাপেট করে আসবে এখন। নং ৪—শুধু বঁটা—বেীঠাকরুনু বল —আমি তার নাক কেটে নিয়া আসি । নং ৫—কার পেটে কি আছে মা—তা কেমন করে জানবো মা— ভ্রমরা হাসিয়া বলিল “ আগে বলুন কি হয়েছে—তার পর যার মনে যা থাকে করিস্।” তখনই আবার পূর্ববৎ গোলযোগ আরম্ভ হইল । নং ১ বলিল---শোননি পাড়াশুদ্ধ গোলমাল হয়ে গেল যে-— নং ২ বলিল—বাঘের ঘরে ঘোগের বাস ! নং ৩—মাণিল ঝাটা দিয়া বিয ঝাড়িয়া দিষ্ট । নং ৪—কি বে। ঠাকরুন বামন হয়ে চাদে হা ত ! নং ৫-—ভিজে বেরালকে চিনতে জোগায় না ।—গলায় দড়ি! গলার দড়ি ! ভ্রমর বলিলেন, “ তোদের।” চাকরাণীরা তখন একবাক্যে বলিতে লাগিল, “ আমাদের কি দোষ! আমরা কি করিলাম! তা জানি গো জানি। যে কৃষ্ণকাস্তের উইল । & যেখানে যা করে,দোষ হবে আমাদের। আমাদের আর উপার নাই বলিয়া গতির খাটিয়ে খেতে এসেছি।” এই বকৃত সমাপন করিয়া, দুই একজন চক্ষে অঞ্চল দিয়া কাদিতে আরম্ভ করিল। একজনের মুত পুত্রের শোক উছলিয়া উঠিল । ভ্রমর কাতর হইলেন–কিন্তু হাসিও সম্বরণ করিতে পারিলেন না । বলিলেন, “তোদের গলায় দড়ি, এইজন্য যে এখনও তোরা বলিতে পারিলি না যে কথাটা কি । কি হয়েছে।” তখন আবার চারিদিক্ হইতে চারি পাঁচ রকমের গলা ছুটিল। বহুকষ্টে, ভ্রমর, সেই অনন্ত বস্তৃতা পরম্পরা হইতে এই ভাবার্থ সঙ্কলন করিলেন যে, গত রাত্রে কৰ্ত্ত মহাশয়ের শয়নকক্ষে একটা চুরি হইয়াছে। কেহ বলিল চুরি নহে,ডাকাতি, কেহ বলিল সিদ, কেহ বলিল, না কেবল জন চারি পাঁচ চোর আসিয়া লক্ষ টাকার কোম্পানির কাগজ লইয়া গিয়াছে। ভ্রমর বলিল “তার পর ? কোন মাগির নাক কাটিতে চাহিতেছিলি ?” নং ১—রোহিণী ঠাকরুনের আর কার? নং ২—সেই আবার্গই ত সৰ্ব্বনাশের গোড়া । - নং ৩—সেই নাকি ডাকাতের দল সঙ্গে করির নিয়ে এসেছিল । নং ৪—যেমন কৰ্ম্ম তেমনি ফল । নং ৫—এখন মরুন জেল খেটে । ভ্রমর জিজ্ঞাসা করিল, “ রোহিণী যে
পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।