స్క్రి আমাদিগের অবনতি হুইবে ; কেহ কেহ বা ইহা দেখিয়া আশ্চৰ্য্য হন যে আমরা ইউরোপীয় সাহিত্য ও বিজ্ঞান বুঝিতে শিখিয়াছি, অথচ মাদুরে বসি, হাত দিয়া আহার করি, সৰ্ব্বদা গায়ে বস্ত্র রাখি না, ও মুণ্ডায় দীপের আলোকে লেখা পড়া করি * শেষোক্ত ব্যক্তিবর্গের কথা শুনিয়া বোধ হয়, তাহার কলিকাতার লালবাজারের মদোন্মত্ত বর্ণজ্ঞানশূন্য গোরাকেও সভ্য বলিতে প্রস্তুত ; কিন্তু ধুতীচাদরপর নিরামিষভোজী নিৰ্ম্মল জলপায়ী সৰ্ব্বশাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতকে ও অসভ্য শ্রেণীতে স্থান দিতে চাহেন। সভ্যতা সম্বন্ধে আমাদিগের মধ্যে এরূপ মতভেদ হইবার প্রথম কারণ এই যে আমরা এক্ষণে দুইট প্রতিকুল স্রোতের মাঝে পড়িয়াছি, (১) দেশীয় শিক্ষা এবং (২) বিলাতী শিক্ষা । দেশীয় শিক্ষা আমাদিগকে একদিকে লইয়া যাইতেছে; বিলাতী শিক্ষা আর এক দিকে । দেশীয় শিক্ষা আমাদিগকে বলিতেছে যে এতদেশীয় প্রাচীন রীতিনীতি, চিরণগত আচার ব্যবহার ও কৰ্ম্মকাণ্ড উত্তম । বিলাতী শিক্ষা পদে পদে তাহাদিগের প্রতি দোষারোপ করিতেছে এবং তাহাদিগের অপেক্ষ ভাল বলিয়া পাশ্চাত্য রীতি নীতি,আচার ব্যবহার ও কৰ্ম্মকাও আমা বঙ্গদর্শন । আষাঢ় ) দিগের সম্মুখে আদর্শস্বরূপ ধরিতেছে। দেশীয় শিক্ষা বলিতেছে যে ভারতবর্ষের পূৰ্ব্বকালীন মহিমা পুরাতন প্রণালীসস্তৃত। বিলাতী শিক্ষা বলিতেছে যে পুরাতন পথ পরিত্যাগ না করিরাই ভারতবর্ষ অধঃপাতে গিরছে। এরূপ অবস্থায় ইহা আশ্চৰ্য্য নহে যে কেহ দেশীয় স্রোতে, কেহ বা বিলাতী স্রোতে গ ঢলিয় দিয়াছেন, এবং কেহ দেtটানায় পড়ির হাবুডুবু খাইতেছেন। সভ্যতা সম্বন্ধে মতভেদ হইবার দ্বিতীয় কারণ এই যে গৃঢ়ভাবব্যঞ্জক বা বহু গুণবাচক কথা শুনিয়া প্রায়ই মানসপটে তদনুযায়ী একটা স্পষ্ট প্রতিমূৰ্ত্তি উদিত হয় না; সুতরাং কথাটী সঙ্গীতরূপে ব্যবহৃত হইল কি না অনেক সময়ে আমরা বুঝিতে পারি না । এই কারণেই অনেক সময়ে বড় বড় কথায় লোক ভূলাইয়া থাকে। এই কারণেই অনেক সময়ে পবিত্র “ধৰ্ম্মের” নামে ভূমণ্ডল শোণিতে প্লাবিত হইয়াছে। এই কারণেই অনেক সময়ে “ স্বাধীনতার ” পতাকা উড়াইয়া স্বেচ্ছাচারিত ফ্ৰান্স প্রভৃতি কতদেশে রাজত্ব করিয়াছে। এই কারণেই অনেক সময়ে অসভ্য জাতিদিগকে “সভ্য” করিবার ছলে তাহাদিগকে মিয়ূল বা দাসত্বশৃঙ্খলাবদ্ধ করা হইয়াছে।
- “It is curious to reflect that the most learned works on European literature and science should be studied and appreciated by the student who sits on a mat, eats with his figers, does not think it neccessary to cover his body, and reads under the light of the primitive carthcu lamp”—Mr. Manomohun Ghose on English Education.