পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>२४ 8 ) ন্যায়, অন্যায়, সভ্যতা, মিথ্যা, ধৰ্ম্ম, অধৰ্ম্ম, প্রভৃতি বড় বড় কথার অর্থ যে অধিকাংশ লোকেই ভাল করিয়া বুঝে ন, ইহা ইউনানী পণ্ডিতকুলচূড়ামণি সক্রেতিস্ বিলক্ষণ বুঝিয়াছিলেন। যদি তিনি ভূমণ্ডলে পুনরাগমন করিতে পারিতেন, তিনি দেখিতে পাইতেন যে দ্বিসহস্রাধিক বর্ষ পূৰ্ব্বে আথেন্স মহানগরীতে লোকে অর্থ না বুঝিয়া যেরূপ শব্দ প্রয়োগ করিত, এই উন্নতিগৰ্ব্বিত উনবিংশতি শতাব্দীতেও সভ্যতাভিমানী ব্যক্তিবর্গও সেই রূপ করিয়া থাকেন । কোন শব্দের বুৎপত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিলে, তাহার অর্থের আভাস কিয়ৎ পরিমাণে পাওয়া যায়। বুৎপত্তির দিকে দৃষ্টিপাত করিলেই জানা যায় যে “পক্ষী” শব্দে পক্ষবিশিষ্ট জীব বুঝায় এবং “উরগ” বলিতে বুকের উপর ভর দিয়া চলে এমন কোন জন্তু বুঝায়। এই প্রণালীতে “ সভ্যতা ’ শব্দের অর্থ নির্ণয় করিতে হইলে দেখা যাইতেছে যে সমাজ বাচক • সভl.” শব্দ হইতে সভ্যতা শব্দের উৎপত্তি ; সুতরাং সভ্যতা শব্দের অর্থ সামাজিকড়া হইতেছে,অৰ্থাৎ সমাজ বদ্ধ হইয়া থাকিতে হইলে, যাহা কিছু তদবস্থার উপযোগী, তাহাই সভ্যতার অঙ্গ স্বরূপ বলিয়া গণনীয় হইতেছে । কিন্তু কোন শব্দের বুৎপত্তি দেখিয়া অনেক সময়ে তাহার প্রচলিত অর্থ জানিতে পারা যায় না। ব্যুৎপত্তি দেখিয়া ধানা যায় যে “ তৈল” বলিতে প্রথমে সভ্যত । >>? তিলের নির্যাস বুঝাইত; কিন্তু এক্ষণে আমরা সরিসার তৈল, বাদামের তৈল, মাস তৈল, ইত্যাকার অনেক প্রকার কথা ব্যবহার করিয়া থাকি । প্রচলিত প্রয়োগে ভৈল বলিতে কেবল তিলের নির্যাস না বুঝাইয়া নানা প্রকার নির্যাস বুঝাইতেছে। এই রূপ ব্যুৎপত্তি ধরিতে গেলে “ আমজান " শব্দে যে বায়ুর সংযোগে অস্ত্র উৎপাদিত হয় সেই বায়ুকে বুঝায়। আদেী রসায়নতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতেরা এই অর্থেই “ আমজান” শব্দ প্রয়োগ করিয়াছিলেন । কিন্তু এক্ষণে পরীক্ষাদ্বারা জানা গিয়াছে যে এমন অনেক অম্ল আছে যাহাতে উক্ত অম্লজান বায়ু নাই। সুতরাং এখন আর বুৎপত্তি দেখিয়া “ অম্লজান ” শব্দের প্রচলিত অর্থ জানা যায় না । এই প্রকার দোহনবোধক দুহ ধাতু হইতে দুহিতা শব্দের উৎপত্তি ; কিন্তু এক্ষণে আমরা দেখিতে পাইতেছি যে, গৃহে গাভীদোহন যাহার কাৰ্য্য সে দুহিতা নহে। ব্যুৎপত্তি অন্নসারে যে পালন করে সেই পিতা । এরূপ হইলে অনেক কুলীন ব্রাহ্মণ বহু সস্তান সত্ত্বেও পিতা নামের অধিকারী নহেন। এক্ষণে দেখা যাউক কিরূপ স্থলে সভ্য ও অসভ্য শব্দের প্রয়োগ ঘটিয়া থাকে। যাহাদিগকে আমরা অসভ্যজাতি বলি তাহাদিগের সহিত যদি আমরা সভ্যনামপ্রাপ্ত জাতিদিগের তুলনা করি, তাহা হইলে দৃষ্ট হইবে যে অসভ্যজাতি বিচ্ছিস্নভাবে ভ্রমণশীল অল্পসংখ্যক লোকের তেরাং