পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३¢ रे একত্রিংশ পরিচ্ছেদ । দানপত্রে । রজনীকান্ত কুমুদিনীকে কত ভাল afৰাসিতেন,কুমুদিনী ভিন্ন আর কেহ তাহার হৃদয়ে স্থান পায় নাই। কুমুদনী তাহার একমাত্র চিন্তা ছিল, কুমুদিনী প্রতিমার স্বরূপ তাহার হৃদয়ে বিরাজ করিত— কিন্তু যে দিবস জানিতে পায়িলেন যে তাহা হইতে শরৎকুমার কুমুদিনীর অধিক প্রিয়তম সেই দিবস তাহার হৃদরে বিষম বিপ্লব উপস্থিত হইল । সে বিপ্লবের ফল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ষে কুমুদিনী প্রতিমা তাহার হৃদয়মন্দির হইতে বিসজর্জন করিবেন। কতদুব সে প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিতে পারিয়াছেন তাহা আমরা জানি না কিন্তু কিয়ৎপরিমাণে যে সে প্রতিজ্ঞায় সফল হইয়াছিলেন, তাহার কিঞ্চিৎ প্রমাণ এই যে যাহাকে দেখিবার জন্য, যাহার সহিত কথা কছিবার জন্য, রজনী সতত নানাপ্রকার কৌশল কল্পনা করি. তেন, আজ বহুদিবসের পর তাহার সহিত দেখা হইল। দেখা হইলে রজনীকাস্তের কি কোল বাহ্যিক চাঞ্চল্য প্রকাশ পাইয়াছিল ? কিছু না । তিনি কি “কুমুদিনী ’’ বলিয়া একবার একটা কথা জিজ্ঞাসা করিতে পারিতেন না । মুক্ত বাতায়নে একাকিনী বসিয়া কুমুদিনী তাহাই ভাবিতেছিলেন । ভাল, রজনী কি একবার মুখের কথঞ্জুিলিয়া একটা কথা জিজ্ঞাসা করিতে পারিলেন না? একবার কুনুর্দিনী বলিয়া ডাকিতে প্রবৃত্তি হুইল বঙ্গ দশন । ( ठाiश्विन না ? রজনী যে তাহাকে ভাল বাসিতেন তাহা মিথ্যা কথা। রজনী তাহাকে কখন ভাল বাসিতেন না; তিনিই কেবল রজনীকে ভাল বাসিয়াছেন, কিন্তু সে ভালবাসার প্রতিদান হইল না, এখন তাহার জীবন অন্ধকার বিজন মরুভূমির ন্যায়। এ আঁধার জীবনাকাশে একমাত্র । তায় রজনীকান্ত, এ আঁধার বিজন অরণ্যে এক মাত্র আলো রজনীকান্ত । কিন্তু সে আলো অতি দূরে,কখন তাহার জীরন আলোকময় করিবার আর সন্তাবনা নাই। দিক্‌ত্রাস্ত পথিকের মরীচি, কার ন্যয় অতিদূরে একবার জলিতেছে একবার নিবিতেছে । কুমুদিনীর নয়নে দরবিগলিত ধারা বহিতে লাগিল। অঞ্চল দিয়া চক্ষু মুছতে মুছিতে বলিলেন, “হ বিধান্তা, কি করিলে,কেন আমার এ দশা করিলে, আমি কি পাপ করিয়াছি যে আমার দর্প চূর্ণ করিলে, আমাকে রজনীকাস্তুের ক্রীত দাসীর ন্যায় হইতে হইল! রজনী হাসিলে আমি হাসিব, রজনী কাদিলে আমি কাদিব। রজনীকাস্তের প্রতি কেন আমার এ প্রকার ভাবান্তর জন্মিল,মনেয় এ দুৰ্দ্দমনীয়ু বেগ কি কখন সম্বরণ করিতে পারিব না—বিধাত তুমিই জান ৷” বলিতে বলিতে কুমুদিনীর হঠাৎ ভাবান্তর হইল, রজনীকাস্তের মুখ মনে পড়িয়া ভাবান্তর হইল,মেঘাবৃত শরতেয় । শশীর ন্যায় তাহায় হাসি মনে পড়িয়া শিঙ্গরিয়া উঠিলেন। ঈশ্বরকে ভাকিয়া কি পঞ্জনীকাপ্তের অকল্যাণ করিলেন, মনে