পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●● 。 লেন। প্রায় সন্ধ্যাঅতীত হইল, পাছে কেহ তাহার মনোবেদন জানিতে পারে, এই জন্য কুমুদিনী চক্ষু মুচিয়া গৃহকার্য্যে নিযুক্ত হইলেন । বিনোদিনী একবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “ দিদি তোমার মুখ ভার, চক্ষু ফুলেছে কেন ? কি হইয়াছে ? —” কুমুদিনী উত্তর করিলেন, “ অস্বগ হইয়াছে।” কিন্তু তৎপরেই গামছা লষ্টয়া তাহাদেব বাটীর পার্থে যমুনাতীরে যে একটি গোপনীয় ঘাট আছে, সেইঘাটে গাত্র প্রক্ষালন করিতে গেলেন, আগ্রীব নিমজ্জিত হইয়া যমুনার জলে আঁধার আকাশে একমাত্র তারার নায় ভাসিতে ল;গিলেন । সন্ধ্যা তিমির ক্ষণে ক্ষণে গাঢ়তর হওয়াতে যমুনার অপর তীর অন্ধকারময় হইল। কুমুদিনী চিবুক পৰ্য্যন্ত জলে ডুবাইলে তাহার বোধ হইল, সেন অন্ধকারময় অনন্তসমুদ্রে ভাসিতেছেন । চতুর্দিকে কেবল বারি নিঃশব্দে অন্ধকারে চুটিতেছে । তিনি একাকিনী যেন সেই অকূলসমুদ্রে অন্ধকারে ভাসিতেছেন, চারিদিকে বারিরাশি উছলিতেছে । ভাবিলেন, আমার জীবন এইরূপ অর্ণধার অনন্তসমুদ্র, কতদিনে যে ষ্টতা শেষ হইবে তাহ জানি না । দূরে অন্ধকারে যমুনার বক্ষে একটি আলো জলিতেছিল । কোন , জলমানে উহ জলিতেছিল। কুমুর্দিনী ভাবিলেন, ও আলোটি কেন জ্বলিতেছে, আমার জীবন সমুদ্রে যে একটি মাত্র আলে জলিতে- , ছিল, তাহা আজ নিৰ্ব্বাণ হইয়ছে, ওট বঙ্গ দর্শন । ( আশ্বিল । জলিতেছে কেন ? দেখিতে দেখিতে সে আলোটি নিবিয়া গেল। কুমুদিনী চম কিত হইলেন, হৃদয় অন্ধকায়ময় হইল, এই সামান্য ঘটনাটি রজনীকাস্তের অম. ঙ্গল স্বরূপ ভবিষ্যৎ বাক্য বলিয়া বিশ্বাস হইল । অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত সেইদকে চাহিয়া রহিলেন কিন্তু সেই আলে। আর. জলিল না । ভগ্নহৃদয়ে যমুনার বাররাশির প্রতি চাহিয়া রহিলেন । অনতি দূরে জলের ভিতরে একটি মুস্থ আলো দেখির উৎসাহান্বিত হইলেন । কৃষ্ণ যামিনীর নীল নভোমণ্ডলে উজ্জ্বল সান্ধা তারার প্রতিবিম্ব যমুনার কালে জলে ঝিকমিক করিতেছে, দেখিয়া হৃদয় কথঞ্চিৎ প্রফুল্প হইল, অতি মৃদু মৃদু স্বরে বলিতে লাগিলেন “ বালাই, কেন আমি অকারণে রজনীকাস্তের অমঙ্গল আশঙ্কা করিতেছিলাম !" বলিতে বলিতে আর সে প্রতিবিম্ব দেখিতে পাইলেন না। উপরে চাহিয। দেখিলেন একখানি কাল মেঘ আসিয়া সেই সন্ধা তারাকে আবৃত করি য়াছে। দেখিয়া কুমুদিনীর হৃদয় একবারে ভাঙ্গিয়া গেল—ভাবিলেন প্রকৃতি ষড়যন্ত্ৰ করিয়া তাহার রজনীকান্তের ভবিষ্যৎ অমঙ্গল তাঁহাকে দেখাইতেছে। নয়ন হইতে দরবিগলিত ধাবা বহিয়া যমুনা জলে পড়িতে লাগিল। অবিশ্রাস্ত কঁদিকে লাগিলেন। ঘাটের সোপানাবলীতে মন্ত্রণ পদশব্দ শুনিয়া হস্তদ্বারা চক্ষু মুছf মুছিতৃে পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখিলেন, এ ব্যক্তি একখানি গামছা কঁধে করিয়া দ্বী