১২৮৫ } বাঙ্গালী ভাষা :יכC( বিদ্যাসাগর বা ভূদেব বাবু প্রদর্শিত সংস্কৃতবহুল ভাষায় ভাবের অধিক স্পষ্টতা এবং সৌন্দর্য্য হয়, তবে সামান্ত ভাষা ছাড়িয়া সেই ভাষার আশ্রয় লইবে। যদি তাহাতেও কার্যা সিদ্ধ না হয়, আরও উপরে উঠিবে ; প্রয়োজন হইলে তাহাতেও আপত্তি নাই। নিম্প্রয়োজনেই আপত্তি। বলিবার কথা গুলি পরিস্ফুট করিয়া বলিতে হইবে—যতটুকু বলিবার আছে সবটুকু বলিবে—তজন্ত ইংরেজি, ফার্সি, আরবি, সংস্কৃত, গ্রাম্য, বন্য, যে ভাষার শব্দ প্রয়োজন, তাহা গ্রহণ করিবে, অশ্লীল ভিন্ন কাহাকেও ছাড়িবে না ; তারপর সেই রচনাকে সৌন্দর্য্যবিশিষ্ট করিবে— কেন না যাহা অসুন্দর, মনুষ্যচিত্তের উপরে তাহার শক্তি অল্প । এই উদ্দেশ্যগুলি যাহাতে সরল প্রচলিত ভাষায সিদ্ধ হয়, সেই চেষ্টা দেখিবে। লেখক যদি লিখিতে জানেন, তবে সে চেষ্টা প্রায় সফল হইবে । আমরা দেখিয়াছি সরল প্রচলিত ভাষা অনেক বিষয়ে সংস্কৃতবহুল ভাষার অপেক্ষা শক্তিমতী । কিন্তু যদি সে সরল প্রচলিত ভাষায় সে উদ্দেশ্য সিদ্ধ না হয়, তবে কাজে কাজেই সংস্কৃতবহুল ভাষার আশ্রয় লক্টতে হুইবে । প্রযোজন তুষ্টলে নিঃসস্কোচে সে আশ্রয় লইবে । ইহাই আমাদের বিবেচনায় বাঙ্গালা রচনাব উৎকৃষ্ট রীতি । নব্য ও প্রাচীন উভয় সম্প্রদায়ের পরামর্শ ভাগ করিয়া, এই রীতি অবলম্বন করিলে, আমাদিগের বিবেচনায় ভাষা শক্তিশালিনী, শন্দৈশ্বর্য্যে পুষ্ট, এবং সাহিত্যালঙ্কারে বিভূষিত হুইবে ।
পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১০৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।