পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૪૨ના ] প্রাচীন ভারতবর্ষ Ꮌ>> মেগাস্থিনিসের সময়ে ভারতবর্ষীয় পদাতিগণ সাধারণতঃ ধনুৰ্ব্বাণ ব্যবহার করিত। ধনুক মানুষ সমান এবং বাণ প্রায় তিন গজ লম্বা । মাটীতে ধনুক স্থাপন করিয়া বামপদদ্বারা চাপিয়া ধরিয়া তাহারা বাণত্যাগ করিত,–এবং এমন কোনরূপ ঢাল বা কবজ ছিল না যাহা সে বাণে ভিন্ন হইত না । পদাতিকদিগের বামহস্তে গোচৰ্ম্মের ঢাল থাকিত । কেহ কেহ ধনুকের পরিবর্তে বর্ষা ব্যবহার করিত, কিন্তু সকলেই অসি ধারণ করিত। অসি তিনহাতের অধিক লম্বা হইত না, এবং অত্যন্ত কাছাকাছি যুদ্ধ করিতে হইলে উহা দ্বিহস্তদ্বারা সঞ্চালিত হইত। অশ্বারোহী যোদ্ধাগণ চৰ্ম্ম ও দুইগাছা বর্ষা ব্যবহার করিত। তাহাদিগের জিন ছিল না, লৌহ বা পিত্তলের কাটাবিশিষ্ট চৰ্ম্মের লাগামছারা অশ্বসঞ্চালনকাৰ্য্য নির্বাহিত হইত। * রথে সারথী ছাড়া দুইজন রথী থাকিত, এবং মাতঙ্গে মাহুত ছাড়া তিনজন যোদ্ধা থাকিত । মেগাস্থিনিস ভারতবাসীদিগকে মিতাচারী বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। তাহাদিগের খাদ্য সাধারণতঃ ভাত, যজ্ঞভিন্ন তাহারা মদ্য ব্যবহার করিত না । চৌর্য্য তাহাদিগের মধ্যেই অল্পই হইত। চন্দ্রগুপ্তের শিবিরে চারিলক্ষ লোক ছিল, কিন্তু প্রতিদিন তথায় দেড় শত টাকার অধিক চুরি হইত না । লোকে মামলা মোকৰ্দ্দাম কদাচ করিত। দলিল বা সাক্ষী না রাখিয়া কেবল বিশ্বাসের উপর নির্ভর করিয়া অন্যের নিকটে কিছু বন্ধক বা গচ্ছিত রাখিতে সঙ্কুচিত হইত না । তাহারা সচরাচর গৃহ ও সম্পত্তি অরক্ষিত অবস্থায়ই রাখিত । তাহারা সত্য ও ধৰ্ম্মের আদর করিত। এজন্য বৃদ্ধলোক জ্ঞানী না হইলে কোন বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইত না। তাহারা অনেক স্ত্রী ক্রয় করিয়া বিবাহ করিত, কাহাকে ধৰ্ম্মপত্নী এবং কাহাকে, বা কামপত্নী করিত । কোন পণ না দিয়া বা না লইয়াও অনেকে বিবাহ করিত ; এরূপস্থলে পিতা কন্যাকে সাধারণসমক্ষে উপস্থিত করিতেন, এবং যে ব্যক্তি মল্লযুদ্ধে বা অন্য কোনরূপ শক্তিপ্রকাশ কার্য্যে বিজয়ী হইতেন, তিনিই কন্যার পাণিগ্রহণ করিতেন। ণ ইহা আমাদিগের দেশের পুরাতন স্বয়ংবরা । মেগাস্থিনিস বলিয়াছেন যে এদেশে লিখিত আইন ছিল না। বোধ হয় এতদ্দেশীয় ব্যবস্থা গ্রন্থের নাম স্মৃতি শুনিয়া তাহার এইরূপ ভ্রম জন্মিয়াছিল। o 输 রাজা যুদ্ধের সময়ে এবং বিচারকালে প্রাসাদ হইতে বহির্গত হইতেন ; এবং বিচার করিতে গিয়া তিনি সারাদিন বিচারালয়ে থাকিতেন। এতদ্ভিন্ন যজ্ঞ ও মৃগয়া করিতেও তিনি বাহির হইতেন। রাজার শরীররক্ষিণী রমণীদল • Arrian's Indica Sec. XVI. * Arrian's Indica Sec, XVII.