পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* २४e } প্রাপ্তগ্রন্থের সংক্ষিপ্ত সমালোচন १०१ যত দোষ কৌমার বিবাহের । পিতা অপাত্রে কস্তাদান করিলেন সে দোষ বাল্যবিবাহের । পিতা বিবাহের পূৰ্ব্বে পাত্র একবারে দেখিলেন না সে দোষ কৌমার বিবাহের । এ দোষরোপে একটি পুরাতন গল্প মনে পড়িল । একজন বৃদ্ধ মুনসেফের একটি পুষ্করিণী ছিল, বাটির অতি নিকটে বলিয়া তথায় তাহার সস্তানেরা স্ত্রীলোকদিগের সঙ্গে সৰ্ব্বদাই যাইত । ঘাটের নিকটে একটি চালিত গাছ ছিল তথায় বসিয়া স্ত্রীলোকেরা কখন কখন বিশ্রাম করিত, চারিপার্শ্বে বালকেরা থেলিয়া বেড়াইত, একদিন খেলাইতে খেলাইতে একটি শিশু জলে পড়িয়া গেল। তাহার শোকে মুনসেফ বড় অধীর হইলেন। কিছুকাল পরে আর একটি সন্তান সেইস্থানে আবার জলমগ্ন হয় । এই সম্বাদ মুনসেফ লোকে মুখে শুনিলেন। ক্ষণেক পরে ভূত্যকে জিজ্ঞাসা করিলেন, পুষ্করিণীর কোনদিকে সন্তান ডুবিয়াছে ? ভৃত্য বলিল, চালিতা তলার ঘাটে। বৃদ্ধ মুনসেফ বাগতভাবে বলিলেন “সেই চালিতা তলায় ! সেই চালিতা গাছ আমায় হুইবার দাগ দিল, এবার বাট যাইব, চালিত গাছ কাটিব, টেকি বনাইব, দুই পায়ে দলিব, তবে, ছাড়িব ।” চালিতা গাছের অপরাধ যেরূপ, বাল্যবিবাহের অপরাধ সেইরূপ ! তত্ত্বদর্শন। খ্রপূর্ণচন্দ্র মিত্র প্রণীত। মূল্য ১০ টাকা । প্রথমে গ্রন্থেব নাম দেখিয়া আমাদের ভয় হইয়াছিল। কিন্তু পাঠ করিতে আরম্ভ করিয়া আর সে ভয় রহিল না, বরং অনেকটা আমোদ হইল। প্রথম ৩৫ পৃষ্ঠার রহস্য কিঞ্চিৎ বিবৃত না করিয়া থাকিতে পারিলাম না, উদ্ধত অংশ পাঠ করিলে তত্ত্বদর্শনের মৰ্ম্ম বুঝা যাইবে । গ্রন্থকার প্রথমেই লিখিতেছেন, “সন ১২৭১ অব্দে ৯ ভাত্রে আমি একবার ঘোরতর ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত হইয়াছিলাম, তাহাতে প্রায় আট দিবস পর্য্যম্ভ আমার কলেবর দারুণ তুঃসহ যন্ত্রনায় দগ্ধ ও অস্থির হইয়াছিল, তদবস্থায় একজন সুচিকিৎসক বহুযত্নসহকারে নানা ঔষধ প্রয়োগে ঐ দুঃসহযন্ত্রণা নিবৃত্তি করিলে পর নবম দিবসের প্রত্যুষে আমি নীরোগ মানুষের ন্যায় শয়নাগারে শয্যোপরি শয়ন করিয়া রহিয়াছি, এমত সময় * * * সহসা দিব্যাকৃতি কোন যোষিৎদেহনিঃস্থত তেজঃপুঞ্জে আমার অঙ্গ মুকুলিত, নেত্রযুগল প্রতিহত করিয়া গৃহাভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন। আমি চকিত হইয়া নয়ন উন্মীলন করিলাম, কিন্তু কিছুই দেখিতে পাইলাম না, তিনি কোথা যাইলেন তাহার কিছুই নির্ণয় করিতে পারিলাম না, কিন্তু যেরূপ পূর্ণশশধর উদয়াচলশিখরে উদিত হইলে তমস্বিনীর গাঢ় তমিশ্র অপসারিত হয় সেইরূপ সেই ত্রিভুবনবিমোহিনী কামিনীর ক্ষণপ্রভাসদৃশ প্রভাজালে আমার হৃদয়াকাশের সমুদয় মোহান্ধকার বিনষ্ট হইয়া যাইল, সহসা মোহাপঙ্কমে