পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»*w•e ] কারণবাদ ও অদৃষ্টবাদ - وعاد “স্বাধীন ইচ্ছা” মতের পক্ষপাতীরা বলেন যে, প্রত্যেক মনুষ্য আপনাকে স্বাধীন বলিয়া অনুভব করেন ; স্বাধীনতার বিশ্বাস স্বাভাবিক। আমরা জিজ্ঞাসা করি প্রত্যেক মনুষ্য কি অনুভব করে ? ইহা ভিন্ন আর কিছুই নহে যে, আমরা যাহা ইচ্ছা তাহা করিতে পারি। যদি কাহারও পক্ষাঘাত হয় সে আপনাকে স্বাধীন মনে করে না কেন ? এই জন্য যে, মনে ইচ্ছা থাকিলেও তদনুযায়ী কাৰ্য্য করিবার শক্তি নাই। কিন্তু প্রত্যেক মনুষ্য কি এরূপ অনুভব করে যে, সে ইচ্ছাব সৃষ্টি করিতে পারে ? কোন প্রকার বিশেষ ইচ্ছা সৃষ্টি করিবার ইচ্ছা যদি জন্মিয়া থাকে, তবে ইহাই বলিতে হইবে যে, সে ইচ্ছাই জন্মিয়াছে। স্বাধীন-ইচ্ছামতের পক্ষপাতীরা বলেন যে, কোন কাৰ্য্য করিবার পূৰ্ব্বে মন বলিয়া দেয় যে, উহা করিতেও পারি, না করিতেও পারি। উক্ত কাৰ্য্য করিলে পর মনই বলিয়া দেয় ইহা না করিলেও করিতে পারিতাম। সেই জন্তই তুষ্কৰ্ম্ম করিয়া অনুতাপ হয়। এটি অত্যন্ত অযুক্ত কথা। মনোবিজ্ঞানবিদ মাত্রেরই মতে সংজ্ঞা ( consciousness ) মনের বর্তমান অবস্থা বলিয়া দেয়। ভূত ভবিষ্কৃতের সহিত উহাব সম্বন্ধ কি ? 酸 বিপরীত প্রকৃতির দুটা অভিসন্ধি বা বাসনার মধ্যে যখন বিরোধ উপস্থিত হয়, তখন মনুষ্য আপনাকে বিশেষরূপে স্বাধীন বলিয়া প্রতীতি করে । বিরোধের অবস্থায় মনুষ্য বিচার করে, বিতর্ক করে, আলোচনা করে, একবার অগ্রসর হয়, আবার পশ্চাদ্বত্তী হয়, সুতরাং সে মনে করে যে সে নিজে স্বাধীন ভাবে এ প্রকার করিতেছে । এরূপ বিরোধের অবস্থায় স্বাধীনতায় বিশ্বাস উজ্জ্বলতর হইয়া উঠে । একটা দৃষ্টান্ত গ্রহণ কর । মনে কব, ফুট চুম্বক পাথরের দুই পার্শ্বে ও মধ্যস্থলে এক খণ্ড লৌহ রহিয়াছে। যদি দুইখানি চুম্বকের আকর্ষণ সমান হয়, তাহা হইলে লৌহখণ্ড যেখানে আছে সেইখানেই থাকিবে । কোন দিকেই চালিত হইবে না। কিন্তু যদি ছুইখানি চুম্বকের মধ্যে একখানির আকর্ষণ প্রবলতর হয়, তাহা হইলে লৌহ সেই দিকেই চালিত হইবে। আমাদের প্রবৃত্তি বা বাসনা সকল অবিকল এই প্রকার ভাবে কাৰ্য্য করে। যদি ছুটী বাসনা সমান প্রবল থাকে, তাহা হইলে মনুষ্য কোন দিকেই হেলিতে পাব্লিবে না। কিন্তু যদি ছুটির মধ্যে একটা অধিকতর প্রবল হইয় উঠে তাহ হইলে সেই প্রবলতর বাসনার দিকেই ধাবিত হইবে, এবং সেই বাসনার অনুযায়ী কাৰ্য্যই অমুষ্ঠিত হইবে । মনে কর একটি নির্জন স্থানে কতকগুলি স্বর্ণমুদ্রা কুড়াইয়া পাইলাম, পাইবামাত্র উহা আত্মসাৎ করিবার ইচ্ছা হইল। কিন্তু তৎপরক্ষণেই মনে হইল যে উহা অধৰ্ম্ম, যাহার ধন তাহাকে অন্বেষণ করিয়া প্রত্যুপণ করাই বিধেয় । এই উভয়প্রকার