পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8�\$ श्वथ्राक्ंा পৌষ ভারতবর্ষে ইংরেজিবিদ্যা শিক্ষা আরম্ভ হইবার পূৰ্ব্বে, বঙ্গসাহিত্যের বর্তমান উন্নতি হইবার আগে রামায়ণ ও মহাভারত যুবকদিগের চরিত্র নির্মাণ করিয়া দিত। কথকের মুখ হইতে, গুরুমহাশয়ের পাঠশালা হইতে, কৃত্তিবাসের রামায়ণ হইতে বঙ্গীয় যুবক যে উপদেশ পাইতেন তাহা তাহাব অস্থি মজ্জায় বিধিয়া থাকিত। আমরণ তিনি রাম বা যুধিষ্ঠিরকে দেবতা বলিয়া মনে মনে উপাসনা করিতেন ও উহাদিগেরই চরিত্র অনুকরণ করিতে চেষ্টা করিতেন । বৃদ্ধবয়সে পুত্র পৌত্রদিগকে নিজ উপাস্য দেবতার মন্ত্রে দীক্ষিত করিয়া দিয়া যাইতেন। রামায়ণ ও মহাভারত হইতে তিনি দেবত ব্রাহ্মণকে ভক্তি করিতে পিতামাতাকে শ্রদ্ধা করিতে ভাইকে ভালবাসিতে প্রচলিত ধৰ্ম্ম যে পথে চালায় সেই পথে চলিতে শিখিতেন। ঐ দুই অগাধ সাহিত্যসমূদ্র মন্থন করিয়া আপনার কার্য্যপ্রণালী নিরূপণ করিতেন । আজিকার বঙ্গীয় যুবক রামায়ণ ও মহাভারত পড়েন না। যদিও পড়েন রাম বা যুধিষ্ঠিবকে র্তাহাদের উপর সম্পূর্ণ আধিপত্য করিতে দেন না । যাহারা তাহাদের হৃদয়ে একাধিপতা করেন তাহাদের নাম বায়রণ, কালিদাস ও বাবু বঙ্কিমচন্দ্র । তিনজনই যুবকদিগেব চিত্ত আকর্ষণে মাধ্যাকর্ষণ শক্তিবিশেষ ; তাহাদের গ্রন্থাবলী পাঠকালে যুবকহৃদয় এমনি গলিয়া যায় যে শেষে তাহারা যে পথে উহাদিগকে লইয়া যাইবার জন্য ইচ্ছা করেন সেই পথেই উহা ধাবিত হয় । রামায়ণ ও মহাভারত যে সময়ে লিখিত হইয়াছিল তখন পারিবারিক বন্ধন অত্যন্ত প্রবল। এই জন্ত রামায়ণ ও মহাভারতের প্রধান উপদেশ সৌভ্রাত্র ও পারিবারিক প্রেম । রামায়ণ ও মহাভারতের রচনাকালে মমুন্য দৌরাত্ম্যময় অসভ্যাবস্থা হইতে সবেমাত্র স্থির সামাজিক অধস্থায় উপস্থিত হইতেছে। সুতরাং তৎকালীন সমাজের উপর বিশ্বাস ও ভক্তি উক্ত গ্রন্থদ্বয়ের দ্বিতীয় উপদেশ, তৎসমাজের বিস্ত্রকারীদিগের প্রতি বিদ্বেষভাব তৃতীয় । মনুষ্যগণের তুর্দমনীয় ইন্দ্রিয়গণের দমন করিয়া শান্তিভাব ধারণ করাণই উক্ত কাব্যরত্নদ্বয়ের মূলমন্ত্র। বাল্মীকি ও বেদব্যাস অথবা তাহাদের অনুবাদক কাশীদাস ও কৃত্তিবাস আপন আপন উদ্দেশ্বসাধনে এতদূর কৃতকাৰ্য্য হইয়াছিলেন যে বঙ্গীয় যুবক প্রায় ৪• বৎসর পূর্ব পর্য্যস্ত র্তাহাদের একান্ত ভক্ত ও নিতান্ত অনুগত ছিলেন । অসভ্যতা পশ্বাচার তাহার হৃদয় হইতে দূরীভূত হইয়াছিল। তাহারা তিন চারি পুরুষ পৰ্য্যন্ত একান্নবৰ্ত্তী থাকিতে ভালবাসিতেন । দেবতা ব্রাহ্মণের তাহার গোলাম হইয়াছিলেন, পরধৰ্ম্মাবলম্বীর প্রতি র্তাহার বিদ্বেষভাব ভয়ানক প্রবল ছিল। পরধর্মের লোক র্তাহার শাস্তিময় সমাজের যত কেন উপকারী হউক না তিনি তাহাকে অন্তরের সহিত ঘৃণা করিতেন। কিন্তু পখাচার ও অসভ্যতা