পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

388 ङ्क्षिनि [ cनौश s , বঙ্কিম বাবুর সমাজ শিক্ষিত বঙ্গীয় যুবকদিগের সমাজ । তিনি দেখাইয়াছেন সমাজের বিরোধী কাজ করিয়া কেহ সুখী হইতে পারেন না । এবং করিলেই শেষ আত্মহুঙ্কুতের জন্য সকলকেই অনুতাপ কবিতে হয়। নগেন্দ্রনাথের অবৈধ প্রণয়ের ফল র্তাহার ঘোর আধ্যাত্মিক বিকার ; শৈবলিনীর অবৈধ অনুরাগের ফল পৰ্ব্বতগুহায় ঘোর প্রায়শ্চিত্ত। গোবিন্দলালের ও রোহিণীর যেরূপ অস্ত হইল তাহাতেও ঐ কথা দৃঢ়তররূপে প্রতিপন্ন করিতেছে । বায়রণেরও একটা মানুষ সুখী নহে, তাহাদের মধ্যে মধ্যে অলৌকিক । অতিমামুষিক হৃদয়প্রমাদক আনন্দ আছে বটে কিন্তু দুঃখই সকলের স্বভাবসিদ্ধ । কিন্তু তাহারা ঠিক জানে যে যত দিন বৰ্ত্তমান সমাজ এই ভাবে চলিবে তাহাদের দুঃখের অবসান হইবে না। সুতবাং তাহারা অনুতাপ করিয়া ফিরিয়া আসিতে চাহে না । তাহাদের আমোদ সমাজের উপর অত্যাচারে । কেহ দিবারাত্র লুঠ পাঠ করিতেছে, কেহ নির্জন কারাগৃহ মধ্যে উচ্চে রোদন করিয়া সমাজধ্বংশের জন্ত শাপ দিতেছে, কেহ সামাজিক নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য দিনবাত্রি ফিরিতেছে। তাহারা দুঃখী বটে কিন্তু হুঃখে কাতর নহে, তাহাদের দুঃখের কারণ মনুষ্যসমাজ, সুতরাং মনুষ্যসমাজ ও যাহারা সেই সমাজ চালায় তাঙ্গাদের উপর দাদ তোলা চাই। বায়রণের মানুষ মনুষ্যসমাজের উপর চটা। কিন্তু মনুষের প্রতি, দুৰ্ব্বলের প্রতি, স্ত্রীলোকের প্রতি তাহাদের সহানুভূতি বিলক্ষণ আছে। তাহারা মানুষ ভালবাসিতে চায় কিন্তু সমাজের অত্যাচারী নিয়ম আপনার মনের মত করিয়া ভালবাসিতে দেয় না ; মুখে তাহারা ঘোর চটা । কালিদাসের মানুষ মানুষ হইতে কিছু উচ্চ। সব দেবতার অংশ, কেহ দেবতার অবতার, কেহ দেবতা স্বয়ং, কেহ অঙ্গরা কেহু অঙ্গরার কন্যা, কেহ ঋষি কেহ রাজা । ঋষি ও রাজা মানুষ কিন্তু বায়রণের মানুষ অপেক্ষ তাহাদের অতিমামুষিক ক্ষমতা অধিক। এই স্বর্গে যাইতেছে মুহূর্তে প্রত্যাবৃত্ত হইতেছে সমস্ত পৃথিবী মুহূর্তে পরিভ্রমণ করিতেছে, দেবতার সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহ করিতেছে অঙ্গরার সহিত প্রণয়পাশে আবদ্ধ হইতেছে। কিন্তু সকলেই সেই মনুপ্রণীত সমাজের নিয়ম যত্ন পূর্বক প্রতিপালন করিতেছে। মানুষের অসীম ক্ষমতা কিন্তু যথেষ্টাচার নাই । জ্ঞানে মৌনং ক্ষমা শক্তো, ত্যাগে প্লাঘা বিপৰ্য্যয়: । এই শ্লোকে তাহাদের চরিত্রের কতকটা আদর্শ পাওয়া যায়। তাহাদের যেমন ক্ষমতার পার নাই মনের জোরও তেমনিই অধিক। সেই ক্ষমতা তাহারা সৎপথে চালাইতে জানেন সুতরাং তাহদের জীবনে কষ্ট নাই হুঃখ নাই। ইচ্ছার স্বাধীনতা নাই, যেমন