পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৫৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ಇi: এই প্রাচীন গ্রন্থের ভাষা অর্থ বিধি ব্যবস্থা লইয়া পাশ্চাত্য কতকগুলি পণ্ডিতদের মধ্যে বিস্তর বিচার চলিতেছে। কয়েক বৎসর মধ্যে ফরাসিস, জারমন, দিনামার ভাষায় এই গ্রন্থের অনুবাদ হইয়া গিয়াছে। এক সময় আমাদের সংস্কৃত ভাষায়ও ইহার অনুবাদ হইয়াছিল কিন্তু এক্ষণে আমাদের বাঙ্গালীর মধ্যে দুই চারি জন ভিন্ন বোধ হয় আর কেহই জেন্দ অবস্থার নামও শুনেন নাই। গ্রন্থখানি জেন্দ ভাষায় লিখিত। বহুকাল পূৰ্ব্বে পারস্য রাজ্যে এই ভাষা প্রচলিত ছিল উইলিয়ম আস্কিন সাহেব বিবেচনা করেন যে জেন্দ ভাষা সংস্কৃতের অপভ্রংশ মাত্র। বিখ্যাত দিনামার পণ্ডিত রাস্ক সাহেব সে মতের প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন যে, জেন্দ ভাষা কোন ভাষারই অপভ্রংশ নন্তে, স্বয়ং স্বতন্ত্র ভাষা । মক্ষমূলরেরও সেই মত ; তবে তিনি এই বলেন যে অস্তান্ত ভাষা অপেক্ষা সংস্কৃতের সহিত জেন্দ ভাষার কিঞ্চিৎ নিকট সম্বন্ধ আছে, এমন কি জেন্দভাষায় এরূপ অনেক কথা পাওয়া যায় যে, তাহার দুই একটি বর্ণ পরিবৰ্ত্তন করিয়া দিলে সংস্কৃত হয়, যথা—“অহুর” হগুঙ্গিন্ধু” ইহার হ স্থলে স করিলে অমুর ও সপ্তসিন্ধু হয়। এইরূপ অনেক কথা পাওয়া যায়। জেন্দভাষা হইতে এখনকার পারস্ত ভাষার উৎপত্তি । এইজন্য জেন্দভাষার কোন কোন শব্দ পারস্য ভাষায়ও পাওয়া যায়। কিন্তু সংস্কৃতের সহিত জেন্দ ভাষার সমসাদৃশু অধিক । মক্ষমূলর বলিয়াছেন যে যাহার জেন্দভাষা ব্যবহার করিতেন তাহাদের পূর্বপুরুষ ভারতবর্ষে বাস করিতেন। তাহা হইলে সংস্কৃত ভাষা হইতে জেন্দভাষার উৎপত্তি এরূপ অনুভব করা নিতাস্ত অন্যায় নহে। কথিত আছে যে পূৰ্ব্বে যজাতি রাজার এক পুত্র পিতৃকর্তৃক পরিত্যক্ত হইলে তিনি বহু লোক সমভিব্যাহারে সপ্তসিন্ধু অতিক্রম করিয়া পশ্চিমাভিমুখে গমন করেন, র্তাহ হইতেই যবনের উৎপত্তি। এইটি স্মরণ রাখিলে কতক বুঝা যায় যে, স্বাস্তুর বধ বা তদ্বৎ সংস্কৃত গ্রন্থমূলক কথা কেন জেন্স অবস্থায় পাওয়া যায়।