পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৬১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 Rvt ] 8ख्ण tుevé সৰ্ব্বশক্তিময় তৈল নানা রূপে সমস্ত পৃথিবী ব্যপ্ত করিয়া আছেন । তৈলের যে মুক্তিতে আমরা গুরুজনকে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম ভক্তি, যাহাতে গৃহিণীকে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম প্রণয়, যাহাতে প্রতিবেশীকে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম মৈত্রী, যাহা দ্বারা সমস্ত জগৎকে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম শিষ্টাচার ও সৌজন্য “ফিলনঋপি ” যাহা দ্বার সাহেবকে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম লয়েলটি, যাহা দ্বারা বড়লোককে স্নিগ্ধ করি তাহার নাম নম্রতা বা মডেষ্টি, চাকর বাকর প্রভৃতিকেও আমরা তৈল দিয়া থাকি, তাহার পরিবর্তে ভক্তি বা যত্ন পাই। অনেকের নিকট তৈল দিয়া তৈল বাহির করি । পরস্পর ঘধিত হইলে সকল বস্তুতেই অগ্ন্য দগম হয় সেই অগ্ন্য গেম নিবারণের একমাত্র উপায় তৈল । এইজন্তই রেলের চাকায় তৈলের অনুকল্প চৰ্ব্বি দিয়া থাকে। এইজন্যই যখন কুইজনে ঘোরতর বিবাদে লঙ্কাকাণ্ড উপস্থিত হয়, তখন রফা নামক তৈল আসিয়া উভয়কে ঠাণ্ডা করিয়া দেয় । ভৈলের যদি অগ্নিনিবারণী শক্তি না থাকিত তবে গৃহে গৃহে গ্রামে গ্রামে পিতা পুত্রে স্বামী স্ত্রীতে রাজায় প্রজায় বিবাদ বিসম্বাদে নিরস্তর অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নির্গত হইত। পূৰ্ব্বেই বলা গিয়াছে যে তৈল দিতে পারে সে সৰ্ব্বশক্তিমান কিন্তু তৈল দিলেই হয় না । দিবার পাত্র আছে সময় আছে কৌশল আছে। তৈল দ্বারা অগ্নি পর্য্যস্ত বশতপন্ন হয়। অগ্নিতে অল্প তৈল দিয়া সমস্ত রাত্রি ঘরে আবদ্ধ রাখা যায়। কিন্তু সে তৈল মূৰ্ত্তিমান। কে যে তৈল দিবার পাত্র নয় তাহা বলা যায় না । পুটে তেলি হইতে লাট সাহেব পৰ্যন্ত সকলেই তুৈল দিবার পাত্র। তৈল এমন জিনিষ নয় যে নষ্ট হয়। একবুর দিয়া রাখিলে নিশ্চয়ই কোন না কোন ফল ফলিবে । কিন্তু তথাপি যাহার নিকট উপস্থিত কাজ আদায় করিতে হইবে সেই তৈলনিষেকের প্রধান পাত্র । সময়—যে সময়েই হউক তৈল দিয়া রাখিলেই কাজ হইরে। কিন্তু উপযুক্ত সময়ে অল্প তৈলে অধিক কাজ হয়। কৌশল-পূর্বেই উল্লেখ করা গিয়াছে যেরূপেই হউক তৈল দিলে কিছু না কিছু উপকার হইবে । যেহেতু তৈল নষ্ট হয় না তথাপি দিবার কৌশল আছে। তাহার প্রমাণ ভট্টাচার্য্যেরা সমস্ত দিন বকিয়াও যাহার নিকট ১• পাচ সিকা বই আদায় করিতে পারিল না—একজন ইংরেজীওয়ালা তাহার নিকট অনায়াসে ৫০ টাকা বাহির করিয়া লইয়া গেল। কৌশল করিয়া একবিন্দু দিলে যত কাৰ্য্য হয় বিনা কৌশলে কলস কলস ঢালিলেও তত হয় না।