পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৬১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খন ভগবান মরীচিমালী দৈবসিক ব্যাপার সমাধা করিয়া পৃথিবীর স্কুল কলেবরের অন্তরালে বিশ্রামগৃহে প্রবেশ করেন ও যখন আমরা রজনীর নিবিড় তিমিরসংহতির মধ্যে নিমজ্জিত হই তখন কে ঐ গগন প্রদেশে নিজ পরিচিত মুখখানি সময়ে সুময়ে দেখাইয়া আমাদের আলোকবিরহসঞ্জাত ভীতিকে চিত্ত হইতে দূর করে ও স্বচ্ছ মুনিৰ্ম্মল কিরণরাশি বর্ষণ করিয়া প্রকৃতিকে রজতসল্লিভ করে তুলে ? আমরা সকৃতজ্ঞচিত্তে আজি উক্ত মহৎ পদার্থের নাম, ধাম ও গুণ কীৰ্ত্তন করিয়া পাঠকগণের সন্নিধানে পরিচয় দিব। ঐ প্রিয়দর্শনকে অবনীবাসিগণ চন্দ্র এই অভিধানে আখ্যাত করে। চন্দ্র পৃথিবীর চিরসহচর। যখন পৃথিবীতলে মনুষ্যজাতির পদচিহ্ন পড়ে নাই, যখন জীবনব্যাপার পৃথিবীতে অজ্ঞাত ছিল তখনও এই চন্দ্র তৃণহীন পৰ্ব্বতশীর্ষ সকলকে রজত কিরীট প্রদান করিত, তখনও বিশাল বিস্তীর্ণ মরুপ্রদেশ সকলকে নিজ করে উদ্ভাসিত করিত, তখনও নীবর ভূপৃষ্টকে নিভৃত ভাবে শীতল করিত। এমন চিরসহচর বন্ধুর বিষয় যতদূর জানা সম্ভব আমাদের জানা উচিত। § চন্দ্রের কলাবত্তা বহুদিবস হইতেই মানবজাতির বিচাৰ্য্য বিষয় । চন্দ্রের ক্ষয় বৃদ্ধির নিয়মানুসারে প্রাচীন জাতিরা যে সময় পরিমাণ করিত তাহার সন্দেহ নাই । টিউটনিক ভাষায় চন্দ্রের নাম ও তাহাদের মাসাৰ্থবোধক শব্দ একই ছিল। কালডীয় জীয়েরা চন্দ্রের গ্রহণ নির্ণয়েও কিয়ৎপরিমাণে ক্ষমবান হইয়াছিল। কালডীয়ের পরে মিসরায়েরাও গ্রহণ নির্ণয় করিত। গ্রীকৃ রোমানগণ কালডীয়ের ও মিসরের নিকট চন্দ্রসম্বন্ধীয় অনেক জ্ঞানলাভ করে। তাহাদেরই নিকট হইতে গ্রীকগণ চন্দ্রের উপাসনা শিখে। গ্রীকদিগের নিকট চন্দ্র সাধারণপ্রিয় একজন উপাস্ত দেবতা ছিলেন। আমাদের হিন্দুগণ অতি পূৰ্ব্ব কালেই চন্দ্রসম্বন্ধীয় কয়েকটি প্রধান প্রধান বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন সকলের মীমাংসা করিয়াছিলেন। চন্দ্র যে পৃথিবীকৰ্তৃক আকৃষ্ট হইয়া ঘুরে ও সূর্যকিরণপাতে চক্সের দীপ্তিমত্তা ইহা কালিদাসাদি জ্যোতির্বিদগণ জানিতেন।