পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৪৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম সংখ্যা। ] সার সত্যের আলোচন | , 8tyషి ঐ বটগাছটিকে দেখিয়া আমি বলিতেছে “এটা বটগাছ”। এ{যাহা আমি বলিতেছি, এ কথাটি সত্য। কেন না, বটগাছের ভাব যাহা আমার মনে বর্তমান আছে, তাহার সছিত লক্ষ্যবস্তুটির সম্পূর্ণ মিল রহিয়াছে। মনের ভাবের সহিত লক্ষ্যবিষয়ের এই যে মিল, ইহারি নাম সত্য । আর, মনের ভাবের সহিত লক্ষ্যবিষয়েয় এইরূপ মিল ঘটাইবার ধিনি কী, তাহারই নাম বুদ্ধি। পুনশ্চ, অস্তঃকরণে -ঐরূপ মিলের যে উপলব্ধি (সত্যের যে উপলব্ধি), তাহারই নাম জ্ঞান। “এটা বটবৃক্ষ” এই জ্ঞানটি জন্মিবার পুৰ্ব্বে 'পূৰ্ব্বদৃষ্ট অনেকানেক বটবৃক্ষেয় একটা সাধারণ আদর্শ বা নক্ল জ্ঞাতার মনে বর্তমান থাকা চাই; সেই সাধারণ আদর্শটি দৃগুমান বটবৃক্ষের সহিত স্থত বটবৃক্ষের মিল ঘটাইরা দ্যায়। পূৰ্ব্বে আমি বটবৃক্ষ দেখিয়াছি, তাই আমি এক্ষণে বলিতে পারিতেছি যে, “এটা বটবৃক্ষ" । পূৰ্ব্বে বদি আমি বটবৃক্ষ না দেখিয়া থাকি, তৰে আমি বটবৃক্ষ” না বলিয়া শুদ্ধকেবল বলি বে, “এটা বৃক্ষ’। পূৰ্ব্বে যদি আমি বৃক্ষ না দেখিয়া থাকি, তবে বৃক্ষ না বলিয়া ಇff,48) একটা বস্তু” । এখন জিজ্ঞাস্য এই যে, পূৰ্ব্বে যদি আমি বস্তুও না দেখিয়া থাকি, তবে আমি সন্মুখস্থিত বুটবৃক্ষটাকে কি বলিব ? নবপ্রস্থত বালকের মনে যখন সবেমাত্র প্রথমজ্ঞানের উদ্বোধন হইয়াছে, তখন সেই প্রথমজ্ঞানের অবলম্বন শুধুই কি.কেধল সম্মুখের দৃপ্তবিবয়, না, তা ছাড়া আরো. কিছু ? এট.দেখা চাই যে,সেই জ্ঞানটিই শিশুটির প্রথম জ্ঞান, তাহার পূৰ্ব্বে তাহার কোনো জ্ঞানই ਝਿਸੀ। ; এরূপ স্থলে এ কুথt খাটে না যে, খুৰ্ব্বদৃষ্ট বস্তুসকলের একটা সাধারণ নক্সা শিশুর মনে বর্তমান আছে, . আর, সেই নক্সার সঙ্গে দৃগুমান বস্তুর ঐক্যউপলব্ধি-হওয়া-গতিকে জ্ঞানের উদ্বোধন হইল । কাজেই বলিতে হয় যে, সেই প্রথমজ্ঞানের পূর্বস্বত্র একপ্রকার অব্যক্ত ংস্কার, তা বই, তাহ কোনোপ্রকার আঁকিয়৷ জুকিয়া প্রস্তুত-করা নক্সা নহে। সৰ্ব্বাদিম প্রথমজ্ঞানে দর্শন, স্মরণ এবং তত্ত্বনিরূপণ, এই তিন মনোবৃত্তির মধ্যে ব্যবধান থাকিতে পারে না একচুলও। আদিম উদ্ভিদ-সম্বন্ধে (protoplasm সম্বন্ধে) যেমন আমরা অগত্য। বলিতে বাধ্য হই যে, তাহা বীজ, বৃক্ষ এবং ক্ষেত্র, তিনই একাধারে ; আদিমজ্ঞানসম্বন্ধেও তেমনি আমরা অগত্যা বলিতে বাধ্য হই যে, তাহ দর্শন, স্মরণ এবং তত্ত্বনিরূপণ, ” তিনই একাধারে। অর্থাৎ আদিমজ্ঞানে দর্শনই স্মরণ, স্মরণই দর্শন এবং তাহাঁই তত্ত্বনিরূপণ। আদিম জ্ঞানের সম্মুখে বিষয়ের উপস্থিতি এবং পশ্চাতে সংস্কারের গোড়াবন্ধন, দুইই শুদ্ধকেবল ঐশী শক্তি দ্বারা সম্ভাবিত হয় ; তা বই, দুয়ের কোনোটিতেই জ্ঞাতার নিজের কোনো হস্ত নাই। ঐশী শক্তির কার্য্যকারিতা শুধুই কি কেবল আদিমজ্ঞানে, নব্যতম পরিপক্ক জ্ঞানে কি ঐশী শক্তির কাৰ্য্যকারিত। তাছা অপেক্ষ কোনো অংশে কম ? এই কথাটি বারাস্তরে আলোচনার জষ্ঠ স্থগিত রাখিয়া দেওয়া হইল । ঐদ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর । ,