দ্বিতীয় সংখ্যা । ইচ্ছা । æማ বাহাজগৎকে নিয়ন্ত্রিত করিতে পারা যায় । কিন্তু এই ইচ্ছাশক্তির বিকাশ সময়সাপেক্ষ । জীবনের প্রথম কতিপয় সপ্তাহে কেবল উদ্দেশুইৗন অঙ্গসঞ্চালন প্রত্যক্ষ হয় । সে চঞ্চলত জীবনী শক্তির কার্য্যমাত্র । তাহীতে ইচ্ছার লেশ নাই । ক্রমে সেই অর্থশূন্ত অঙ্গভঙ্গির সহিত বালকের সুখদুঃখ সংস্পৃষ্ট হয় । হাতখানি নাড়িতে নাড়িতে হঠাৎ তাঙ্গর বুকের উপর ঠেকিল, বালকের তাহাতে আরামবোধ হইল । এইরূপ অনেকবার করিয়া বালকের মনে এ দুয়ের মধ্যে আঁতি নিকট সম্বন্ধ স্থাপিত হইল । বালক সেই আশরাম আবার পাইবার জন্ত চেষ্টা করিতে লাগিল । তাহার হস্ত যেমন নড়িতেছিল, তেমনি নড়িতেছে, কিন্তু এবার সে একটু অবস্থিত । হস্তখানি কেমন করিয়া ইতস্তত সঞ্চালিত হইতেছে, সে তাহা একটু মনোযোগের সহিত দেখিতে লাগিল—তাহার মনে সেই আরামের স্কৃতি । সুখদুঃখ কে না বুঝে ? স্বখদুঃখবোধ সহজাতসংস্কণরাধীন । সুতরাং সুখকে পাইবার জন্ত এবং দুঃখ হইতে নিস্কৃতিলাভ করিবার জন্ত জন্মাবধি মানুষের এক স্বাভাবিক প্রবৃত্তি । সহজাত সংস্কার, সুখের উপলব্ধি ও স্মৃতি ও তাইরি অভাববোধ যখন মনোমধ্যে একত্র হইল, তখনই ইচ্ছার উন্মেষ । সময়ে তাহার পূৰ্ণবিকাশ হয়। অতএব স্পষ্ট বুঝা যাইতেছে যে, নিরর্থক, উদেণ্ডবিহীন, জীবনশক্তিজনিত সহজাত নেষ্ট কৰ্ম্ম হইতেই ইচ্ছ: ৱ উৎপত্তি। যে শপ প্রত্যঙ্গসঞ্চালন ইচ্ছায় পক্ষে অবশু প্রয়োজনীয়, তাহ ইচ্ছার স্থষ্টি নছে, পরস্তু তাহ। ইচ্ছার অগ্রজাত ও উপাদানভূক্ত। ' تي كي আমরা কৰ্ম্মকে সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত করিয়াছি ; ঈপ্সিত ও অনীপিত । কিন্তু এ দুয়ের মাঝামাঝি আর একপ্রকার কৰ্ম্ম আছে, তাহাও উপেক্ষণীয় নহে। মধুমক্ষিক মধুচক্রনিৰ্ম্মাণে অদ্ভূত শিল্পকৌশলের পরিচয় দেয়, কোন কোন পক্ষিশাবক ডিম্ব হইতে বহির্গত হইবামাত্র খাদ্যান্বেষণ ও সস্তরণ করিয়া থাকে, এবং পক্ষিগণের কুলায়নিৰ্ম্মাণচাতুৰ্য্য দেখিয়া বিস্মিত হইতে হয় । মানবশিশু ভূমিষ্ঠ হইয়াই স্তন্যপান করিতে আরম্ভ করে, শিশু ইহার জন্ত শিক্ষণর অপেক্ষা করে না । সহজদৃষ্টিতে স্তন্যপান অতি তুচ্ছ ব্যাপার । কিন্তু ইহাই বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের সহিত এবং দার্শনিক ভক্তির সহিত নিরীক্ষণ করিয়া থাকেন । তত্ত্ববিদগণ এই সকল কৰ্ম্মকে প্রাক্তনসংস্কার বলিয়া নির্দেশ করেন । অর্থাৎ কুলায়নিৰ্ম্মাণকৌশল এবং পক্ষিশৰকগণের আহাৰ্য্যগ্রহণ পক্ষিগণের বহুযুগ এযং বহুজন্ম বাপী কৰ্ম্মপরম্পরার ফল । মানব সহস্ৰ চেষ্টায় ও পক্ষীর ন্যায় সুন্দর কুলায় নিৰ্ম্মাণ করিতে পারে না । মানব এইখানে পক্ষীর নিকট পরাজিত । কিন্তু এইজাতীয় ক্রিয়াকে যদি ,ইষ্টকৰ্ম্ম বলিয়) স্বীকার করি" তাহা হইলে তদুপযোগী জ্ঞান ও -এই কব প্রাণীর আছে, স্বীকার করিতে হুইবে । কি গু ইহাদের অস্তান্ত কাৰ্য্যকলাপ হইতে, স্ট্রেরূপ কেন, তাহার শতাংশের একাংশ বুদ্ধির ও অস্তিত্ব উপলব্ধি হয় না । পরন্তু সংস্কারজ কৰ্ম্ম এবং ইষ্টকৰ্ম্মের মধ্যে আর একটি বিশেষ পার্থক্য লক্ষিত হয় । সংস্কারজ কয় ইষ্টকr. ন্তায় চৈতন্যসমষ্ঠিত, জটিলতা পুণ, বহুক্ষণক্যাপী এবং উদ্দেশুপুৰ্ব্ব বলিয়া প্রতীয়মান
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১০২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।