পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা । ] ! ऐत्रह्यो । సి.సి. ইচ্ছার পরিণতিমাত্র । পুনঃপুন আবৃত্তিবশত সমস্ত কৰ্ম্ম অভ্যস্ত হইয়া যায় । মনোযোগ আর সে সকল কৰ্ম্মে অমাবশু্যক হয় না । সেইজন্ত নুতন নুতন কৰ্ম্ম করিবার এবং নূতন নূতন বিষয় শিক্ষণ করিবার স্থবিধা হয়। স্পেন্সার এই অভ্যাসজনিত কৰ্ম্মকে সংস্কারজ কৰ্ম্মের দলে ফেলিয়াছেন, অবশু্য ইহাদের সোসাদৃশ্য অস্বীকার করিতে পারা যায় না । কিন্তু আমার বোধ হয় অভু্যস্ত ক্রিয়াকে ইষ্টকৰ্ম্মের মধ্যে গণ্য করা উচিত । কারণ কোন কৰ্ম্ম নিতান্ত অভ্যস্ত হইলেও কৰ্ত্তার ইচ্ছা অহা হইতে একেবারে তিরোহিত হয় না । আমি যখন প্রথম ক, খ, লিখিতে শিখি, তখন প্রতি অক্ষরের প্রত্যেক ভঙ্গীটি আমাকে মনোযোগের সহিত লক্ষ্য করিতে হইত। এখন লিখনৰ্যাপার আমার অভ্যস্ত হইয়। গিয়াছে, ইহাতে আমার মনোযোগের বিশেষ প্রয়োজন নাই । কিন্তু এখনও একটি অক্ষর লিখিতে যদি অন্ত একটি অক্ষর লিখিয়া বসি, অথবা একটি অক্ষরের মাত্র যদি অন্তরূপ হইয়া যায়, তবে তখনই আমার মনোযোগ তাহাতে আকৃষ্ট হইবে । তাহ হইলে কেমন করিয়া বলিব যে, অভ্যস্ত কার্য্যে একেবারেই ইচ্ছার সাহচৰ্য্য নাই । মানবের মনোরাজ্যে ইচ্ছ। কতটা স্থান ব্যাপিয়া আছে, তাহ বিচার করিতে গেলে জার একটি বিষয়ের বিবেচনা করা অবিশুক । আমরা এতক্ষণ কৰ্ম্মরাজ্যে ইচ্ছার প্রভাবের কথা বলিয়া আসিন্মাছি । অর্থাৎ ইচ্ছার দ্বারা শরীর্যন্ত্র কিরূপে নিয়ন্ত্রিত হয়, অম্লখ লক্ষ্যহীন জড়পিণ্ডের মত শরীর ইচ্ছার শর্শে কেমন গল্পীৰ হুইর উঠে, তাহাই আমরা সংক্ষেপে আলোচনা করিয়াছি । জ্ঞানের রাজ্যে ইচ্ছার প্রভাবসম্বন্ধে দুএকটি কথা বলিয়া বৰ্ত্তমান প্রবন্ধের উপসংহার করিব । “ইঞ্জিয় জ্ঞানের দ্বারস্বরূপ ।” দ্রব্যাদির গুণসকল— রূপ-রস-শব্দ-গন্ধ-স্পর্শ—যখন ইজিয়ের মধ্য দিয়া মস্তিষ্কে নানাপ্রকার ক্রিয়ার উৎপাদন করে, তখন মনে তত্তত দ্রব্যের জ্ঞান উদ্ভূত হয়। কিন্তু দ্রব্য ইন্দ্রিয়সমীপবৰ্ত্তী হইলেই যে জ্ঞানের উদয় হয়, তাহা নহে । যেমন; ' আমরা কোন গভীর চিস্তায় নিমগ্ন থাকিয়া মুক্ত আকাশের দিকে যখন চাহিয়া থাকি, তখন তাহার নীলিমা বা অভ্রসমূহ আমরাদেখিয়াও দেখি না । মন তথন বিষয়াস্তরে ব্যাপৃত রহিয়াছে। এ সকল দেখিবে কে ? চক্ষু দর্শনের উপায়ভূত, দর্শনের কৰ্ত্ত মন । তোমার চক্ষু, কর্ণ, নাসিক, সকলই উন্মুক্ত রহিয়াছে, কিন্তু মনোযোগের অভাবে তুমি কিছুই দেখিতে, শুনিতে বা ভ্ৰাণ করিতে পাইবে না । অতএব দেখা যাইতেছে, মনোযোগ বাতিরেকে কোন বিষয়ের জ্ঞান হওয়া অসম্ভব । মনোযোগ ইচ্ছার অধীন, ইচ্ছার শাসনে পরিচালিত । ইচ্ছা, ব্যতিরেকে • মনোযোগ এবং মনোযোগ ব্যতিরেকে জ্ঞান হইতে পারে না । তোমার দৃষ্টিপথ অতিক্রম করিয়া একটি পাখী উড়িয়া গেল, চক্ষুরিত্রিয়ের দ্বারা সে অনুভূতি মস্তিক্ষে সঞ্চারিত হইল। কৌতুহল উদ্দীপ্ত হইল । তখনই তুমি চক্ষুর দ্বারা সেই পক্ষীর গতি লক্ষ্য করিতে প্রবৃত্ত হইলে । অতএব দেখা, গেল, আমাদের দর্শনে ও শ্রবণে, কল্পনে ও মননে, হুখে ও খে, চিত্তায় ও কার্য্যে,সৰ্ব্বত্র এই সৰ্ব্বব্যাপিনী ইচ্ছার প্রভাব বর্তমান । ।